×

সম্পাদকীয়

ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা জরুরি : বর্জ্যকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২২, ১২:২৮ এএম

ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা জরুরি : বর্জ্যকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে

ঢাকা শহরের বর্জ্য স্থানান্তর বা বিন্যাসের কোনো সুব্যবস্থা নেই। অতি দুর্বল এখানকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। কঠিন বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্জ্য থেকে তৈরি কম্পোস্টকে বেসরকারি পর্যায়ে বিনামূল্যে সরবরাহ করে ব্যবসায়িক মডেলে রূপান্তর করতে পারলে খুব সহজেই বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব হবে। গত বৃহস্পতিবার ভোরের কাগজের কনফারেন্স রুমে ঢাকা কলিং আয়োজিত ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ফোর আর রোডম্যাপ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা উঠে এসেছে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে চাইলে আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতেই হবে। এটি খুব শিগগিরই করে ফেলা যাবে তা-ও নয়। তবে এখন থেকেই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। রূপকল্প ২০৪১ অনুসারে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশই নগরীতে বাস করবে এবং এই ৮০ শতাংশ জনগণের ২৫ শতাংশই বাস করবে মেগা সিটি ঢাকায়। বর্তমানে বাসাবাড়ি থেকে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতি বছর মাথাপিছু ১৫০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট ২২ দশমিক ৪ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ মাথাপিছু বর্জ্য সৃষ্টির হার হবে ২২০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৭ হাজার টনে; যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে পড়বে। ঢাকায় যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হয় তার সিংহভাগই অসংগৃহীত থাকে, যা পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এ বর্জ্য সংগ্রহে নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র আমরা দেখি। ঢাকাসহ বিভিন্ন মহানগরীর ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার দায়িত্ব করপোরেশনের। সিটি করপোরেশন আইনে বলা হয়েছে, করপোরেশন নগরীর বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলার পাত্র বা অন্য কোনো আধারের ব্যবস্থা করবে। যেখানে অনুরূপ ময়লা ফেলার পাত্র বা আধারের ব্যবস্থা করা হবে, করপোরেশন সাধারণ নোটিস দিয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়িঘর ও জায়গা-জমির দখলদারদের তাদের ময়লা বা আবর্জনা ওই পাত্র বা আধারে ফেলার জন্য নির্দেশ দিতে পারবে। এই আইন অনুযায়ী, করপোরেশন নির্ধারিত স্থান থেকে ময়লা সংগ্রহ করে ভাগাড়ে নিয়ে যাবে। আর নাগরিকরা তাদের বাসাবাড়ির বর্জ্য করপোরেশনের নির্ধারিত বিনে পৌঁছে দেবে। কিন্তু দেখা গেছে, বর্তমানে বাসাবাড়ির বর্জ্য কোনো নাগরিকই সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয় না। এই সুযোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডভিত্তিক সংগঠন বাসাবাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করে করপোরেশনের নির্ধারিত বিনে পৌঁছে দিচ্ছে। এজন্য প্রতিটি বাসা বা হোল্ডিং থেকে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। বাসাবাড়ি ও রেস্তোরাঁর বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে অর্থ লুটপাটের বিশেষ চক্র। বাসাবাড়ির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনা দরকার নয় কি? উন্নত দেশগুলোতে যেমন সুইডেন ও নরওয়েতে বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহারযোগ্য লাভজনক ভিন্ন বস্তুতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বর্জ্য সংরক্ষণ, নিরপেক্ষায়ণ, নিষ্ক্রিয়করণ অথবা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে ব্যবহার উপযোগী বিভিন্ন নতুন জিনিস বানানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App