×

আন্তর্জাতিক

জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধি কমবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২২, ০৪:০৬ পিএম

জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধি কমবে

ফাইল ছবি

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। এপ্রিলের পর থেকে এ নিয়ে চারবার পূর্বাভাস কমানো হলো। পাশাপাশি আগামী বছরের চাহিদা প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসও কমানো হয়েছে।

কারণ হিসেবে জোটটি বলছে, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছে। কঠোর মুদ্রাসংকোচন নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে ঝুঁকছে। এতে জ্বালানিটির ব্যবহার ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে। অন্যদিকে শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীনে করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা লক্ষণীয় মাত্রায় কমছে। চাহিদা প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে মূল্যস্ফীতিও।

মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা ২ দশমিক ৭ শতাংশ করে বাড়বে। দৈনিক চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে ২৬ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলে। এর আগের পূর্বাভাসের তুলনায় চাহিদা দৈনিক ৪ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল কমানো হয়েছে।

ওপেকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতি ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে এগোচ্ছে। অব্যাহত বাড়ছে চ্যালেঞ্জ। ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মুদ্রানীতি কঠোর করছে। চলমান সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি অনেক অর্থনীতি ঋণের জালে আটকা পড়ছে।

এদিকে নিম্নমুখী চাহিদার অজুহাতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধির হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেকের মিত্র জোট ওপেক প্লাস। ২০২০ সালের পর সর্বোচ্চ মাত্রায় উত্তোলন কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে জোটটি। উদ্দেশ্য বাজার নিয়ন্ত্রণ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ওপেক প্লাসের এ সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে। যদিও আগামী বছর উত্তোলন ও ব্যবহার কমার পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন জ্বালানি বিভাগ।

এদিকে সম্প্রতি জ্বালানি পণ্যের বাজার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি। ওপেক পূর্বাভাস কমালেও সংস্থাটির পূর্বাভাসের তুলনায় তা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ওপেকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক ২৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়বে, আগের পূর্বাভাসের তুলনায় যা দৈনিক ৩ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল কম। যদিও ওপেকের প্রত্যাশা আগামী বছর চাহিদা মহামারিপূর্ব অবস্থাকে ছাড়িয়ে যাবে।

তবে মার্কিন জ্বালানি বিভাগের পূর্বাভাস বলছে, আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে দৈনিক ১০ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে। এর আগের পূর্বাভাসে ১০ কোটি ১৫ লাখ ব্যারেল চাহিদার কথা বলা হয়েছিল।

ওপেকের নেতৃস্থানীয় দেশ সৌদি আরব জানিয়েছে, দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি বৈশ্বিক সরবরাহের প্রায় ২ শতাংশের সমান। দেশটি আরো জানায়, পশ্চিমা দেশগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অব্যাহত সুদের হার বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির গতি ক্রমেই শ্লথ হয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে আনা জরুরি ছিল।

এদিকে হোয়াইট হাউস জানায়, জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত মজুত থেকে আরো জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে কিনা, সেটির পর্যালোচনা অব্যাহত রাখবেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস বলছে, ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমিয়ে আনার এ অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন জো বাইডেন। কারণ বিশ্ব অর্থনীতি এখনো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট নেতিবাচক প্রভাব কাটেনি।

বাইডেন প্রশাসনসহ পশ্চিমা দেশগুলো লম্বা সময় ধরেই সৌদি আরব ও ওপেক প্লাসের প্রতি উত্তোলন আরো বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছিল। উদ্দেশ্য ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরে লাগাম টেনে ধরা। কিন্তু ওপেক নেতারা এ আহ্বানে সাড়া দেয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই রাষ্ট্রীয় মজুত থেকে স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেল সরবরাহ করছে দেশটি। আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরো কয়েকটি দেশ মজুত থেকে সরবরাহ করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App