×

খেলা

বিশ্বকাপের সাত ফাইনাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ১১:৫৯ এএম

বিশ্বকাপের সাত ফাইনাল

ফাইল ছবি

১৯৭৫ সালে বিশ্বব্যাপী এটিকে জনপ্রিয় করে তোলার উদ্দেশে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তখনো যাত্রা শুরু করেনি ক্রিকেটের সর্বশেষ সংযোজিত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি। ২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রয়ারি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এরপর ২০০৭ সালে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করে। এরপর একে একে অনুষ্ঠিত হয় সাতটি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আবারো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দরজায় কড়া নাড়ছে। এবার অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। কোন কোন দেশ বিশ্বকাপের আগের সাতটি বিশ্বকাপের ফাইনালে দ্যুতি ছড়িয়েছিল সেসব গল্প তুলে ধরা হলো আজকের প্রতিবেদনে।

২০০৭ বিশ্বকাপ, দক্ষিণ আফ্রিকা : আফ্রিকার জোহানেসবার্গ স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের ফাইনালে এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারত ও পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৫৭ রান। পাকিস্তানি বোলারদের সামনে একাই প্রাচীরের দুর্গ হয়ে দাঁড়ান ওপেনার গৌতম গাম্ভীর। ৫৪ বলে ২টি ছক্কার মার আর ৮টি চারের সাহায্য দলকে ৭৫ রানের ইনিংস উপহার দেন ভারতের এই ব্যাটসম্যান। ১৫৮ রানের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টিকে খুব একটা বড় লক্ষ্য নয়। কিন্তু ভারতীয় বোলারদের একে একে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে ইনিংসে ৩ বল বাকি থাকতেই থামে পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডার। পাকিস্তান ম্যাচটি হারে মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে। ভারতীয় ফাস্ট বোলার ইরফান পাঠান ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৩টি উইকেট। ফাইনালে ম্যাচসেরার পুরস্কারের জন্য তিনিই নির্বাচিত হন। আসরটিতে ১২ উইকেট ও ৯১ রান করে টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হন পাকিস্তানের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি।

২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ইংল্যান্ড : প্রথম আসরে মাত্র ৫ রানে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করা পাকিস্তান সফলতার গল্প লেখে লন্ডনে ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে। ম্যাচটিতে এশিয়ার আরেক পরাশক্তি শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে মাত্র ১৩৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়। কুমার সাঙ্গাকারা ৫২ বলে ৬৪ রানের ইনিংস আর ম্যাথিউসের ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো স্কোর ছিল না আর কোনো লঙ্কান ব্যাটসম্যানের। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আফ্রিদির ৪০ বলে ৫৪ রানের ইনিংস ৮ উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচটি জিতে নেয় পাকিস্তান। ম্যাচসেরা আফ্রিদি আর ৩১৭ রান নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হন শ্রীলঙ্কার তিলকরন্তে দিলশান।

২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে বিজয়ের গল্প লেখেন ইংল্যান্ড। বার্বাডোস দ্বীপে ফাইনাল ম্যাচে ইংলিশরা অস্ট্রেলিয়াকে হারায় ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অজিরা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ক্রেইজ কাইসওয়েটারের ৪৯ বলে ৬৩ রানের ইনিংসের সাহায্য ইংলিশরা ম্যাচটি জিতে নেয় ৩ ওভার হাতে রেখেই। ফাইনালে ম্যাচসেরা পুরস্কার জিতে নেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ব্যক্তিগত ঝুলিতে ২৪৮ রান সংগ্রহ করে টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হন আরেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসন।

২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, শ্রীলঙ্কা : কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে চতুর্থ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে আয়োজক দেশকে একাই রুখে দিয়েছে ক্যারিবীয় স্পিনার সুনীল নারিন। মাত্র ১৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানরা থেমে যায় ১০১ রানে। সুনীল নারিন ৩.৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে শিকার করেন ৩ উইকেট। ম্যাচটিতে ৫৬ বলে ৭৮ রানরে ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মার্লন স্যামুয়েলস। আসরে ১১ উইকেট ও ২৪৯ রান সংগ্রহ করে টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হন অজি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন।

২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বাংলাদেশ : পরের আসরে নিজেদের আক্ষেপ গুচিয়ে নেয় শ্রীলঙ্কা। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনালে তারা ভারতকে হারায় ৬ উইকেটের বিনিময়ে। ভারতের দেয়া ১৩১ রানের লক্ষ্যে লঙ্কানরা পৌঁছে যায় ৩.১ ওভার হাতে রেখেই। ফাইনালে ৩৫ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারা। আসরে ৩১৯ রান সংগ্রহ করে ভারতের বিরাট কোহলি টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জিতে নেন।

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ভারত : টি-টোয়েন্টিতে বাহুর জোর যার যত বেশি আধিপত্য বিস্তার করার সম্ভাবনা তাদের বেশি। এই দিকটায় অন্যদের তুলনায় যোজন যোজন এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য ইনিংসের শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ২০ রান। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান কার্লোস ব্র্যাথওয়েট সে সময় বহুর জোর দেখিয়ে ইংলিশ বোলার বেন স্টোকসকে তুলোধুনো করেন। চার বলে চারটি ছক্কার মার মেরে ক্যারিবীয়দের জয় ২ বল হাতে রেখেই জয় এনে দেন এই ব্যাটসম্যান। চার উইকেটে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতিহাস করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আরব আমিরাত : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে পর আবারো আইসিসি কোনো মর্যাদাপূর্ণ ইভেন্টে হেরে যায় কিউইরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭২ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৫ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। দলীর ১৫ রানের মাথায় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চে আউট হলেও আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের ভীত গড়ে দেন মিচেল মার্শ। ৩৮ বলে ৫৩ রান করে ওয়ার্নার আউট হলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে সঙ্গে নিয়ে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৫০ বলে অপরাজিত ৭৭ রান করেন অস্ট্রেলিয়াকে চ্যাম্পিয়ন করেন মার্শ। ম্যাচসেরা হন এই অলরাউন্ডার।

মোহাম্মদ আল মুহিত

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App