×

জাতীয়

বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৫৪ পিএম

বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে হবে

বৃহস্পতিবার ভোরের কাগজ কনফারেন্স রুমে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় সম্পাদক শ্যামল দত্ত, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে হবে

কঠিন বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে সব সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, বর্তমানে বাসাবাড়ি থেকে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করতে না পারলে সরকারি-বেসরকারি কোনো ব্যবস্থাপনা কাজে আসবে না। পাশাপাশি বর্জ্য থেকে তৈরি কম্পোস্টকে প্রাইভেট সেক্টরে ফ্রি ট্রান্সফারের মাধ্যমে সাপ্লাই করে ব্যবসায়িক মডেলে রূপান্তর করতে পারলে খুব সহজেই বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন তারা।

বৈঠকে আলোচকরা জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিবছর মাথাপিছু ১৫০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট ২২ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ মাথাপিছু বর্জ্য সৃষ্টির হার হবে ২২০ কিলোগ্রাম এবং সর্বমোট বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৭ হাজার ৬৪ টনে; যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে পড়বে। নগর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থ্রি আর (রিডিইউজ, রিইউজ ও রিসাইক্লিলিন) এর পরিবর্তে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মৌল নীতির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর ফলে নগরে অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হবে, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হবে এবং সর্বোপরি প্রকৃতিভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় গুণগত পরিবর্তন হয়ে একটি সবুজ ও স্বাস্থ্যকর নগর গড়ে উঠবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ময়লা নিয়ে আজ দেশ বিদেশে সভা-সমাবেশ হচ্ছে। ময়লা আজকে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য, অনেক ধরণের ব্যবসা আছে। ময়লা কেউ দিতে চায় না। আমি এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বলতে চাই ময়লা এখন সোনা, এগুলো নিয়ে যারা কাজ করতে চান, এই প্ল্যাটফর্মে কেউ থাকেন তবে ল্যান্ডফিল্ট গুলো আপনারা নিয়ে নেন। আমার উত্তর সিটির ৫২ একর জমিতে যে পরিমাণ ময়লা আছে এগুলো নিয়ে আপনারা কিছু করুন। ল্যান্ডফিল (ভাগাড়ে) আর জায়গা নেই, এই ময়লা থেকে মিথেন গ্যাস হচ্ছে, এটা বন্ধ করার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন।

[caption id="attachment_375440" align="aligncenter" width="1280"] বৃহস্পতিবার ভোরের কাগজের গোলটেবিল আলোচনায় সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

তিনি বলেন, কঠিন এবং তরল বর্জ্যরে সঙ্গে নতুন একটি বর্জ্য আবিষ্কার হয়েছে তা হলো- বড় বড় বিল্ডিংয়ের পাইলিংয়ের যে বর্জ্য এগুলো কোথায় যাবে। শ্রমিকরা এই পাইলিংয়ের মাটি খালে, রাস্তার পাশে ও ম্যানহোলের ঢাকানা খুলে রাতের অন্ধকারে সেখানে ফেলে দিচ্ছে। ফলে ড্রেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই এই পাইলিংয়ের মাটি কোথায় ফেলবে এজন্য জায়গা নির্ধারণ করে দিতে হবে রাজউককে।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়টি সাধারণ জনগণের মধ্যে একটা সংকটের। প্রথমত এটি খুব বড় ধরণের সমস্যা। দ্বিতীয়ত; এটি সমাধানের জন্য সঠিক পথ এখনো আমরা চিহ্নিত করতে পারিনি। তৃতীয়ত যতদিন যাবে, ততই এই সংকট দ্রুত গতিতে বেড়ে যাবে। কারণ হচ্ছে আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়ছে, রুচি বাড়ছে, চাহিদা বাড়ছে। মানসম্মত খাবার প্যাকেটজাত হচ্ছে। ফলে বর্জ্য বাড়ছে, বাড়বে। এখন কীভাবে এটা সমাধান করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে দৈনিক ভোরের কাগজের কনফারেন্স রুমে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ফোর আর রোডম্যাপ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের সংস্থা দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) তার কনসোর্টিয়াম সদস্য সংস্থাগুলোকে (বারসিক, কাপ ও ইনসাইটস) সঙ্গে নিয়ে ইউএসএআইডি এর আর্থিক সহায়তায় এবং প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস (পার) কর্মসূচির আওতায় কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশনালের কারিগরী সহযোগিতায় ‘ঢাকা সিটিজেন অ্যাডভোকেসি কোলাবোরেশন অ্যাগেইনস্ট পোলিউটিং অ্যানভায়োনেম্টে (ঢাকা কলিং) প্রকল্পটি গণতান্ত্রিক সুশাসন ও নাগরিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে নাগরিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্বশীল করার জন্য অধিপরামর্শ সংক্রান্ত কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা কলিং প্রকল্পের উদ্যোগে এই অনষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার হয়েছে ভোরের কাগজ।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রফেসর ড. ইজাজ হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সুপারিনটেডেন্ট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আবুল হাসনাত মো. আশরাফুল আলম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ সফিউল্লাহ সিদ্দিক ভুঁইয়া, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. কাজী হক, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অফ পার্টি মাইনুদ্দিন আহমেদ, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেট ফাউন্ডেশনের চিফ অপারেটিং অফিসার ড. আবদুল্লাহ আল মুঈদ, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ডিএসকে) নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, আইটিএন-বুয়েটের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আলাউদ্দিন আহমেদ, ওয়াটার এইডের পরিচালক পার্থ হাফেজ শেখ, ডেইলি অবজারভারের সিনিয়র রিপোর্টার বনানী মল্লিক, ইয়ুথ গ্রুপের মেম্বার হেনা আক্তার রুপা ও শাহিনুর আক্তার এবং এনডিবিইউএসের ফেডারেশন মেম্বার ও সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার।

সেমিনারের শুরুতেই ঢাকা কলিং প্রজেক্টের সার সংক্ষেপ তুলে ধরেন কর্নসোটিয়াম কো-অর্ডিনেটর সানজিদা জাহান আশরাফী।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৬ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪ ও ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রজেক্টে তুলে ধরা হয় ঢাকা শহরের ৫ হাজারের বেশি বস্তিতে অন্তত ৪০ লাখ মানুষের বসবাস। ময়লা ও নোংরা পরিবেশে বসবাসের কারণে এই মানুষেরা দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। এ সময় বস্তির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার শক্তিশালী তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহি এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বর্জ্যের কারণে জনস্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো নিরূপণ করে তা সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

পরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে 4-R রোডম্যাপের বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন।

রোডম্যাপে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কমিউনিটি ভূমিকাকে  প্রাধান্য দেয়া হয় এবং বর্জ্য সংগ্রহের বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জরিপ তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালে মোট ৪৭ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হবে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে কঠিন বর্জ্য উৎপাদন ৫৭ হাজার টন ও ২০৪০ সালের মধ্যে তা ৭৭ হাজার টন ছাড়িয়ে যাবে। অথচ দেশের বেশির ভাগ শহরে বর্জ্য সংগ্রহের দক্ষতা ৫০ শতাংশেরও কম। তিনি বলেন, পচনশীল বর্জ্য শহরে জীবনযাত্রাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তুলেছে। কঠিন বর্জ্যের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক মানুষ। এ সময় প্রতিবেশী দেশ ভারতের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কিছু মডেল তুলে ধরেন। দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ডিএসকে) নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, বলেন, আমরা কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছি। এক্ষেত্রে স্কুলের বাচ্চাদের যদি আমরা শেখাই বর্জ্য কি, এর ব্যবহার কেমন হবে তাহলে ছোটবেলা থেকেই তারা এ বিষয়ে শিক্ষিত হয়ে উঠবে। ফলে আগামী ২০ বছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সফলতা আসবে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের সব গুলো ল্যান্ডফিল (ভাগাড়) ভর্তি হয়ে গেছে সেখানে আর বর্জ্য দেয়ার সুযোগ নেই। পরিকল্পনা অনুয়ায়ী সেগুলো অনেক আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষণা করার কথা ছিলো। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে  আমরা কিছু সুপারিশসহ স্মারকলিপি দিয়েছি যেখানে বস্তিবাসীদের পরিকল্পনায় যুক্ত করে কাজ করলে দ্রুত গতিতে এগোবে। এছাড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য আলাদা বাজেট থাকতে হবে। পাশাপাশি বর্জ্যকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, বীমা এবং সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনে পানি ও টয়লেট সুবিধার বিষয়টি ভালোভাবে দেখা উচিত। পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, নগরে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনেক বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। এ সেক্টরে কাজ করতে সিটি কর্পোরেশনকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপর অনেকটাই নির্ভর করতে হয়। তিনি বলেন, দেশে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য অর্জনে সম্প্রতি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২১ পাস হয়েছে। বিধিমালায় যুগান্তকারী বেশকিছু পদক্ষেপ গৃহীত হলেও সামগ্রিকভাবে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সরকার কী কর্মকৌশল বা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে, তার কোনো সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। তাই যদি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা টেকসইভাবে পরিচালিত না হয়, তাহলে বেশিরভাগ শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। ডিএনসিসির সুপারিনটেরডেন্ট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আবুল হাসনাত বলেন, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে সরকার যে বিধিমালা করেছে সেটা অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। এখানে প্রজেক্ট অনুযায়ী এম আর এফ রুলস ফলো করেই বর্জ্য নেয়া হচ্ছে হয়তো সবক্ষেত্রে একই রকম হচ্ছে না। এটাই সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা। তিনি বলেন, বাসা থেকে এসটিএস নেয়া পর্যন্ত নানা ধরণের জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এমনকি এসটিএস নির্মাণের ক্ষেত্রেও বাধা আসে। এসব উপেক্ষা করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বর্জ্যের জন্য জমির সংকট রয়েছে। এক্ষেত্রে ভলিউম রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। ডিএসসিসি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ সফিউল্লাহ সিদ্দিক ভুঁইয়া বলেন, ব্যবস্থাপনা নিয়ে ঢাকায় কোনো মাস্টারপ্ল্যান ছিল না। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু আছে। বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (এসটিএস) নির্মাণের টার্গেট আছে। এরইমধ্যে ৫৭টি এসটিএস নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে আরো ১০টি নির্মাণ শেষ হবে। এখন আমাদের বর্জ্য সংগ্রহের ক্যাপাসিটির পরিমাণ বেড়েছে। নতুন যুক্ত হওয়া ওর্য়াড গুলোতে সেভাবে আমরা এখনো কাজ শুরু করিনি, কিছু হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে সব কাজ করতে পারব। ওয়াটার এইড এর পরিচালক হাফেজ শেখ বলেন, যারা ময়লার ভ্যান টেনে নিয়ে যায় তাদের কায়িক শ্রম অনেক। তাই এই ভ্যানগুলোকে আরো কিভাবে উন্নত করা যায়, তাদের কায়িকশ্রম কিভাবে কমানো যায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এছাড়া বর্জ্য সংগ্রাহকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বীমা নিয়ে কাজ করছি যার উদ্দেশ্য মৃত্যু ঝুঁকি কমানো। তিনি বলেন, পরিবেশ বিষয়ে অনেক আইন আছে। কিন্তু সার্বিক আইন নেই। পরিবেশ রক্ষায় যে আইন আছে সেগুলোর প্রয়োগ দরকার। আইনের প্রয়োগ করার জন্য লিগ্যাল সেলগুলো কার্যকর কিনা তা পরিবেশ অধিদপ্তরের নজর দেয়া জরুরি। ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য শাহিনুর আক্তার বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কি বিষয়টা আমরা জানতাম না। এটা নিয়ে মিটিং করার মতো একটা বিষয় সেটাও আমরা জানতাম না। ঢাকা কলিং প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পর বস্তির নিম্ন আয়ের মানুষরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সর্ম্পকে জানতে পারে। বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায় সে বিষয়ে জানতে পারি। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জন্য সার্মথ্য অনুযায়ী কাজ করছি। ঢাকা কলিং এর সহায়তায় পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করেছি। পচনশীল বর্জ্য দিয়ে জৈব সার উৎপাদন করেছি। যেখানে সেখানে যেন ময়লা ফেলা না হয় সে বিষয় সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছি। আমরা সরকারেকে সাহায্য করতে চাই। সেজন্য আমাদের এলাকায় ঢাকা কলিং প্রকল্পের যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বিশেষ করে জৈব সার উৎপাদনের যে কাজ চলছে সেটা যেন অব্যাহত থাকে সেই অবেদন করছি। সংশ্লিষ্টদের প্রতি আবেদন জানিয়ে কড়াইল বস্তিবাসী এবং ফেডারেশন  সদস্য ফাতেমা আক্তার বলেন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যে বিধি প্রণয়ন হয়েছে সেখানে যেন বস্তিবাসীদের কথা উল্লেখ থাকে এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেন বস্তিবাসীদের কথা বিবেচনা করে। আইনে যেন তাদের অগ্রাধিকার দেয়া। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জায়গার অভাবের কথা বলা হয়েছে তা ঠিক নয়। এখানে আন্তরিকতা ও উদ্যোগের অভাব। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জন্য সিটি কর্পোরেশনের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য বরাদ্দ নাই। সিটি কর্পোরেশন থেকে টেন্ডার নিয়ে যারা বর্জ্য সংগ্রহের কাজ করে তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App