সরকারের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চায় বিএনপি

আগের সংবাদ

ইনামুল হক স্মরণ

পরের সংবাদ

বান্দরবানে আদিবাসী উচ্ছেদের চেষ্টায় ৩৬ বিশিষ্ট নাগরিকের উদ্বেগ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২২ , ৯:৫৩ অপরাহ্ণ আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২২ , ৯:৫৩ অপরাহ্ণ

বান্দরবানে আদিবাসী উচ্ছেদের চেষ্টায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩৬ বিশিষ্ট নাগরিক। বুধবার (১২ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিদাতারা হলেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যন্সেলর পারভীন হাসান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাড. জেড আই খান পান্না, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সহ-সভাপতি তবারক হোসেইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, রিব এর নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ ৩৬ বিশিষ্ট নাগরিক।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বান্দরবানের লামা উপজেলায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক বংশানুক্রমে বসবাসরত ৩৯টি ম্রো পরিবারকে তাদের ভূমি থেকে বিতারিত ও উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে তাদের জুম জমির ফসল পুড়িয়ে দেয়া, পানির একমাত্র উৎস ঝিঁড়ির পানিতে বিষ মিশিয়ে দেয়া, কোম্পানীর পোষা পেটোয়া বাহিনীর দ্বারা মারধর করা এবং সর্বশেষ ২৪ সেপ্টেম্বর এক ম্রো আদিবাসীর ৩০০ কলাগাছ কেটে ফেলাসহ আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা করার বে-আইনী ও অমানবিক তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

স্বাক্ষরকারীরা আদিবাসীদের সংবিধান ও আইন স্বীকৃত অধিকারের এবং লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও প্রশাসন কর্তৃক তাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতা ও হয়রানীর ঘটনার তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। এ অন্যায় নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়- ম্রো এবং ত্রিপুরা আদিবাসীদের ভূমিসহ সকল আইনি ও প্রথাগত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। প্রতারণামূলকভাবে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে নেয়া লামা রাবার ইণ্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড লীজ বাতিল করতে হবে। এ লীজ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক যে সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করা হয়েছে তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গত ২৭ এপ্রিল বান্দরবানের লামা উপজেলার লাংকম পাড়া, জয় চন্দ্র কারবারী পাড়া ও রেংয়েন কারবারী পাড়ার আদিবাসীদের সৃজিত জুমের বাগান পুড়িয়ে দেয়া হয়। এই আগুনে প্রায় একশ একর জুমের ধান, বাঁশ, আম, কলা, আনারসসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছ পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত পাড়াগুলোর আদিবাসীদের অভিযোগ, জমি দখলের জন্য লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের একটি কোম্পানীর লোকজন তাদের ফসলে পরিকল্পিতভাবে এই আগুন লাগিয়েছে। এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালকে প্রধান করে গঠিত পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটি লীজ বাতিলসহ ছয় দফা সুপারিশ দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। বরং গত ছয় সেপ্টেম্বর, ২০২২-এ আদিবাসীদের পানির একমাত্র উৎস পাহাড়ী ঝিঁড়ির পানিতে বিষ মেশানো হয়। ফলশ্রুতিতে আদিবাসীরা বর্তমানে এ ঝিঁড়ির পানি পান করতে পারছে না। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

এনজে

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়