×

সারাদেশ

দুর্ভোগ লাঘবে চালু হচ্ছে ফেরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১১:১০ এএম

দুর্ভোগ লাঘবে চালু হচ্ছে ফেরি

ছবি: ভোরের কাগজ

দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের বহুল কাক্সিক্ষত কর্ণফুলী নদীর উপর নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া ক্রমেই বিলম্বিত হচ্ছে। প্রায় শত বছরের পুরনো সেতুর স্থলে নতুন সেতু নির্মাণের ফাইল-পত্র ঘুরছে বিভিন্ন দপ্তরের টেবিলে টেবিলে। পরিকল্পনা ও নানা জটিলতায় এ ফাইল ঝুলতে ঝুলতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনভোগান্তি। বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এতে দীর্ঘদিনের পুরনো সেতুতে বেড়েছে ঝুঁকিও। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে ২০২৪ সালের আগে কালুরঘাটে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে না।

তবে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে সেতুর নিচ দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে ফেরি চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ফেরির জন্য এপ্রোচ রোড নির্মাণের প্রাক্কলন শেষ হয়েছে। টেন্ডারপরবর্তী এপ্রোচ রোড নির্মাণ এবং ফেরি সংগ্রহ হলে আগামী দুই মাসের মধ্যে ফেরি চালুর আশাবাদ ব্যক্ত করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। এর মধ্য দিয়ে বড় যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রায় শত বছরের জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুতে প্রতিদিন শত শত যানবাহনে অসংখ্য যাত্রী জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে চলাচল করছে। একমুখী সেতু হওয়ায় এ পাড় থেকে ওপাড় যেতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। এ অবস্থায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী কালুরঘাট সেতু পরিদর্শনে এসে নতুন সেতু না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক জনদুর্ভোগ লাগবে ফেরি চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, কালুরঘাট সেতুতে ফেরি চালু এবং এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন (প্রস্তাব) তৈরি করছি। এরপর টেন্ডার হবে। আশা করছি, দুয়েক মাসের মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালু করতে পারব। ফেরি চালু হলে সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হবে নাকি বন্ধ থাকবে তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতুতে যান চলাচলের সুযোগ থাকবে কিনা তা রেলওয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ফেরি চালু হলে তা সেতু পুনরায় নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত সার্ভিস দেবে। এটি ওই আসনের এমপির (মোসলেম উদ্দিন আহমেদ) ডিও লেটারের কারণেই দেয়া হচ্ছে। বোয়ালখালী আসনের সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, কালুরঘাট সেতুতে এখন বড় গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এছাড়াও সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। যান চলাচলে মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে। ফেরি চলাচল শুরু হলে বড় গাড়িগুলো ফেরিতে যাবে। এছাড়া ছোট গাড়িও যাবে। তখন কালুরঘাট সেতুতে রেল ও ছোট গাড়ি চলাচল করবে। নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। অপরদিকে পুরোনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তোলার জন্য বুয়েটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নতুন নকশায় কালুরঘাট সেতু তৈরিতে সম্মতি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। নতুন নকশা চূড়ান্ত হওয়ায় এখন প্রকল্পের সারসংক্ষেপ তৈরি হবে। তারপর কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) সঙ্গে লোন এগ্রিমেন্ট হবে। এরপর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সেতু নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের তদারকিতে নিয়োজিত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, একনেকে অনুমোদনের পর আমরা টেন্ডারে চলে যাব।

ঠিকাদার নিয়োগ হবে। পরামর্শক নিয়োগ হবে। এসব আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করতে ২০২৩ সাল চলে যাবে। পুরনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানোর জন্য বুয়েটকে পরার্মশক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের আগে সেতু মেরামতের কাজ শেষ হবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে আমরা কালুরঘাট সেতু দিয়ে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালাতে পারব। প্রথম দিকে বেশি না হলেও প্রতিদিন একটি ট্রেন চলাচল করবে। সেতুটি মেরামতের পর ছোট মিটারগেজ ইঞ্জিন দিয়ে চালানো যাবে ট্রেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App