×

জাতীয়

আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২২, ০৮:০৯ এএম

আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয়

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ফিজিক্যাল ড্যামেজ হয়নি

তদন্ত প্রতিবেদন মিলবে এক সপ্তাহে

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। তবে গ্রিড বিপর্যয় হলেও গ্রিড সিস্টেম এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কোনো ফিজিক্যাল ড্যামেজ হয়নি। গ্রিড সিস্টেমের বিভিন্ন প্রটেকশন ডাটা, ট্রিপিং রেকর্ড, বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালনার ডাটা পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে প্রতিবেদন দিতে তদন্ত কমিটির আরো এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

গত ৪ অক্টোবরের জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান, পিডিবির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, পূর্বাঞ্চলের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। সিস্টেম ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জের নিচে নেমে যায়। আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির কারণেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আনস্টেবল হয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ট্রিপ করলে বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। এ ধরনের বিভ্রাট এড়াতে হলে অটোমেশনের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সঞ্চালন ব্যবস্থা অনেক পিছিয়ে আছে। আমাদের আরো আধুনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে গ্রিড বিপর্যয় হলেও গ্রিড সিস্টেম এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কোনো ফিজিক্যাল ড্যামেজ হয়নি। গ্রিড সিস্টেমের বিভিন্ন প্রটেকশন ডাটা, ট্রিপিং রেকর্ড, বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালনার ডাটা পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রিড ট্রিপ করার পর অনাকাক্সিক্ষত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ খুঁজে বের করতে

বুয়েটসহ অনেক বিশেষজ্ঞ নিয়ে পিজিসিবি ৭ সদস্যের কমিট গঠন করেছে। এছাড়া মন্ত্রণালয় বাইরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অপর একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। দুটি কমিটির তদন্ত কাজ চলছে। কমিটির সদস্যরা ৫ অক্টোবর ঘোড়াশাল গ্রিড উপকেন্দ্র পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, গ্রিড বিপর্যয় হলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে কোনো ফিজিক্যাল ড্যামেজ পরিলক্ষিত হয়নি। সে জন্য তদন্ত কমিটি গ্রিডের নানা বিষয়ে তথ্য পর্যালোচনা করতে কিছুটা সময় চেয়েছে। এজন্য এক সপ্তাহ লাগতে পারে।

লিখিত বক্তব্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৪ অক্টোবর বেলা ২টার দিকে পূর্বাঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি ছিল এবং পশ্চিমাঞ্চলে বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছিল। এই অবস্থায় পশ্চিমাঞ্চল থেকে পূর্বাঞ্চলে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল। এসময় আশুগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জের ২৩০ কেভির দুটি সার্কিট এবং ঘোড়াশালের দুটি সার্কিট ট্রিপ করায় পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পূর্বাঞ্চলের উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। সিস্টেম ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জের নিচে নেমে যায়। আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সির কারণেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আনস্টেবল হয়েই পূর্বাঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ট্রিপ করে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের সবার প্রচেষ্টায় সাত ঘণ্টার মধ্যে পূর্বাঞ্চলের পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আবার শুরু হয়। ওইদিন রাত ৯টার মধ্যে দেশের পূর্বাঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। প্রথমে রাত ৯টায় ৮ হাজার ৪৩১ মেগাওয়াট, এরপর আস্তে আস্তে রাত ১২টায় ১০ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে গণভবন ও ৫টা ৪০ মিনিটে বঙ্গভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয়। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে পিজিসিবি (পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ)।

এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যত দ্রুত অটোমেশনে যাব, তত দ্রুত সমস্যা কমে আসবে। আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর আমাদের অনেক কাজ পিছিয়ে গেছে। পিজিসিবি অনেক কাজে পিছিয়ে আছে। বিতরণে আমরা যতটা এগিয়েছি, সঞ্চালনে ততটা এগুতে পারিনি। আরো আধুনিকায়নে কাজ করতে হবে।

বিদ্যুৎ নিয়ে রাজনীতিবিদদের সমালোচনার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা অনেক কথাই বলছেন, কেউ কেউ তো টেকনিক্যাল বিষয় নিয়েও কথা বলছেন। তবে মজার বিষয় হলো তাদের সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হতো। তারা এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে পারেনি। অথচ তারা সমালোচনা করে যাচ্ছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App