×

সারাদেশ

ধুনটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত ‘বউ মেলা’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১১:৪৮ এএম

ধুনটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত ‘বউ মেলা’

ছবি: ভোরের কাগজ

প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে গতকাল বুধবার বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার সরকারপাড়া গ্রামের ইছামতি নদীর তীরে এবারো বসেছিল ঐতিহ্যবাহী বউ মেলা। ৭০তম এই মেলায় প্রতি বছরের মতো এবারো ছিল নারী ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর নানা আনন্দ আয়োজনে দেবীদুর্গা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এক দিনের এ মেলার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।

সরকারপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নিতাই কুমার জানান, যুগ যুগ ধরে ধুনট সদরপাড়া, দাসপাড়া, কলেজপাড়া ও সরকারপাড়া গ্রামের প্রতিমা ইছামতি নদীতে বিসর্জন দেয়া হতো। প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে দূরদূরান্ত থেকে হরেক রকমের দোকানিরা এসে ইছামতি নদীর তীরে পণ্যের পসরা সাজান। এসব দোকানগুলোকে ঘিরে মেলা বসতে শুরু করে।

এ মেলায় পুরুষদের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ নারী ও শিশুর সমাগম ঘটে। সেখানে নারীদের কেনাকাটার সুবিধার্থে মেলার মূল অংশকে শুধুমাত্র নারী কেন্দ্রীক করার উদ্যোগ নেয় সরকারপাড়া পূজা উদযাপন কমিটি। এরপর থেকে মেলায় শুধুমাত্র নারীরাই প্রবেশ করতে পারেন। নারীদের প্রসাধনী সামগ্রী এবং সাংসারিক নানা জিনিসপত্রের অংশটিতে নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত পুরুষদের প্রবেশ ঠেকাতে প্রধান ফটকে নারী পুলিশ ও আয়োজক কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা নিয়োজিত থাকেন। এ কারণে নারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারেন। যার কারণে প্রতি বছরেই মেলায় নারী ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। আর একারণেই যুগ যুগ ধরে এ মেলাটি ‘বউ মেলা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বুধবার সূর্যাস্তের সময় সরকারপাড়া ইছামতি নদীর ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এরআগে সকাল থেকেই নদীতে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসেন মেলায়। ক্রেতারাও আসতে থাকেন সকাল থেকে। শুরু হয় কেনাবেচা। তবে দুপুর পর জমজমাট হয় মেলা প্রাঙ্গণ। দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেলার মূল অংশ নারীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এরপর নারীদের পাশাপাশি পুরুষরা মেলায় প্রবেশ করতে পারেন। প্রতিমা বিসর্জনের আগে সনাতন ধর্মালম্বী নারীরা দেবীকে বিদায় জানাতে আসে। পাশাপাশি মেলায় কেনাকাটা করেন। আর ইসলাম ধর্মের নারীরা মেলায় কেনাকাটার পাশাপাশি প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য দেখেন। ধর্মীয় আমেজে চিরচেনা বউ মেলা মূলত সব ধর্মের মানুষের আনন্দ উৎসবের একটি অন্যতম অংশ। আর সব ধর্মের মানুষের এই আনন্দ ভাগাভাগির দৃশ্য তৈরি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। সরকারপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ কুমার সরকার বলেন এবছর ৭০তম এই মেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলার নিরাপত্তায় পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা, আনছার বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App