×

জাতীয়

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে কাজলী নদী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১১:৩৯ এএম

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে কাজলী নদী

ছবি: ভোরের কাগজ

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় দূষণ আর দখলের কবলে পড়ে মরতে বসেছে কাজলী নদী। দখলকারীদের রাক্ষুসে থাবা থামানো না গেলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এক সময়ের খরস্রোতা নদীটি, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা যায়, গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কাজলী নদী। নদীর অপর পাশে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলা। ২০২০ সালে দুই উপজেলার সংযোগে মাঝখানে নদীর ওপর তৈরি হয় সেতু। সেতু নির্মাণের পর শুরু হয় নদী ও তীর দখলের মহোৎসব। এর মধ্যে নদী ও তীর দখল করে দেশের খ্যাতনামা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। আবার কেউ কেউ নদী ভরাট করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরজমিনে কাজলী নদী ঘুরে দেখা গেছে, নদী ও তীর দখল করে ব্যাপকভাবে স্থাপনা নির্মাণকাজ চলছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য মালামাল বহনকারী অসংখ্য মালবাহী ছোট বড় জাহাজ নদীতে যত্রতত্র নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। শুধু যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবৈধ জেটি ব্যবহার তা নয়, নদী পাড়ে অবস্থিত বিভিন্ন শিল্পকারখানার বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে।

উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কাজলী নদীর পাড়ে কথা হয় ৭০ বছর বয়সী মোতালেব দেওয়ানের সঙ্গে। তিনি আফসোস করে বলেন, আগের রূপ নেই এ কাজলী নদীন। স্বচ্ছ পানি এখন কালো হয়ে গেছে। আগে নদীতে জেলেদের আনাগোনা থাকলেও এখন তা শূন্য। মাছ তো দূরের কথা, অন্যান্য জলজ প্রাণীরও দেখা মেলে না।

পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা সফিক ঢালী বলেন, অপরিশোধিত তরল বর্জ্য নদীগুলোকে গ্রাস করছে। এতে নদীর জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। এ দূষিত পানি ব্যবহারের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শুধু কাজলী নয়; ফুলদী নদীও রয়েছে দূষণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। মাঝেমধ্যে নদী কমিশনসহ নানা সংস্থার লোকজন এসে দেখে যান। তবে দূষণ ঠেকাতে বাস্তবমুখী কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। দিন যতই যাচ্ছে দূষণের মাত্রা ততই বাড়ছে।

এ বিষয়ে ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সাহিদ মো. লিটন বলেন, নদীর ওপাড় দেশের খ্যাতনামা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ফ্রেস, শ্যামলী প্রজেক্টসহ একাধিক কোম্পানি কাজলী নদী ও তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। অন্যদিকে নদীর এই পাড় বসুন্ধরা টিস্যু পেপার মিলস, আধুনিক পেপার মিলসসহ বেশকিছু কোম্পানি পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি নদীতে বর্জ্য ফেলছে। একদিকে নদীটি সরু হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে। এতে বেকার হয়ে পড়ছে এ ইউনিয়নের হাজারো জেলে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করে নদী দখলকারী ও নদী দূষণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষে নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App