×

জাতীয়

গ্রাহকের টাকায় ব্যবসা করা ইভ্যালির সবচেয়ে বড় ভুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২২, ০৬:২৭ পিএম

গ্রাহকের টাকায় ব্যবসা করা ইভ্যালির সবচেয়ে বড় ভুল

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা শামীমা নাসরিন বলেছেন, আমাদের দেনা পরিশোধে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ। আগামী এক বছর নিরবচ্ছিন্ন ব্যবসা করতে পারলে বিনিয়োগ পাওয়া সম্ভব। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রাহক-মার্চেন্টের টাকা ফেরত দিতে চাই। তবে এখনই সময় বা ডিরেক্ট টাইম ফ্রেম জানাতে পারছি না। টাইম টু টাইম আপনাদের আপডেট জানাবো। গ্রাহকের টাকায় ব্যবসা করা ইভ্যালির সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। দেনা পাওনার পূর্ণাঙ্গ হিসাব করতে ইভ্যালির সার্ভার চালু করার কথা জানিয়ে শামীমা নাসরিন বলেন, সার্ভার ওপেন করতে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলকে প্রয়োজন।

শামীমা নাসরিন বলেন, আমরা মনে করি ইভ্যালির ৪৫ লাখ ক্রেতা ও ৩০ হাজার বিক্রেতা দৈনন্দিন প্রয়োজনে নিয়মিত কেনাকাটা করলে সহজেই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসা সম্ভব। অনেকেই হয়ত অবগত আছেন, আগে ইভ্যালিতে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আমাদের সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ তৈরি হলে খুব সহজেই বিনিয়োগ আসা সম্ভব হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। অ্যামাজনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি, তারা রিকভারি কোনো প্লান দিতে পারে কি না।

ইভ্যালি কোনো টাকা পাচার করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইভ্যালি মানিলন্ডারিং করার মতো কোনো অপরাধ করেনি। টাকা পাচারের উদ্দেশ্যে আমরা দুবাইও যাইনি।

তিনি বলেন, ১৫ অক্টোবর আমরা নতুন সার্ভারে নতুনভাবে ক্যাম্পেইন শুরু করবো। আমরা যদি ব্যবসা শুরু করতে পারি তাহলে ধীরে ধীরে রিকভারি করতে পারবো। আমাদের সব ডাটা অ্যামাজনে আছে। সার্ভার ওপেন হওয়া মাত্রই ক্রমানুসারে ও গুরুত্ব বুঝে যেসব পণ্য ওয়্যার হাউজে আছে এবং গেটওয়েতে যে টাকা জমা আছে সেগুলো ধীরে ধীরে ছাড়বো।

ইভ্যালির চেয়ারম্যান আরও বলেন, কিছু-কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক নীতিমালার ত্রুটিগুলো আমরা স্বীকার করে দেনা-পাওনা এবং সব পেন্ডিং অর্ডার ডেলিভারির জন্য ছয় মাস সময় চেয়েছিলাম। তবে সেই সময় পাওয়ার আগেই পাওনা পরিশোধ বিলম্ব হওয়ার অভিযোগ এবং চেক ডিজঅনার সম্পর্কিত মামলায় আমরা গ্রেপ্তার হই।

শামীমা নাসরিন বলেন, আমাদের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার হওয়ার পরও প্রচন্ড মানসিক কষ্টকে নিয়ন্ত্রণ করে জামিন চাওয়ার আগে কোম্পানি পরিচালনা করার অনুমতি প্রার্থনা করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২১ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির দায়িত্ব ছেড়ে দেন আদালতের নির্দেশে গঠন করা সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের পরিচালনা বোর্ড। এরপর প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ইভ্যালির দায়িত্ব নেন। তার নেতৃত্বেই নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন হচ্ছে এবং ইভ্যালি পুনর্গঠনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে আগে গত ১০ আগস্ট ইভ্যালি পুনরায় চালু করতে আদালতের মাধ্যমে গঠিত বোর্ডের কাছে আবেদন করেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। আবেদনে তিনি নিজেকে এবং তার মা ও বোনের স্বামীকে পরিচালনা বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছেন। শামীমা নাসরিনের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম এ আবেদন করেন।

এর আগে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে ইভ্যালি। তবে পণ্য ডেলিভারিতে ব্যর্থ হওয়ায় পাহাড়সম অভিযোগ জমা হয় তাদের বিরুদ্ধে। গ্রাহকদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইভ্যালির ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে অনুসন্ধানে নামে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহকের মামলার ভিত্তিতে গুলশান থেকে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও চেয়ারম্যান পদে থাকা তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শামীমা নাসরিন বর্তমানে জামিন পেলেও জামিন পাননি তার স্বামী রাসেল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App