×

বিনোদন

শারদপ্রাতে পূজার খুশি…

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৪১ পিএম

শারদপ্রাতে পূজার খুশি…

ফাইল ছবি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আজ শনিবার থেকে। গত বছর করোনা বিধিনিষেধ বহাল ছিল। এ বছর আবার স্বমহিমায় ফিরেছে বাঙালির প্রাণের উৎসব। জেনে নিন শোবিজের কয়েকজন তারকার পূজার পরিকল্পনা।

সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া হবে: অরুণা বিশ্বাস

এ বছর পূজায় বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। বন্ধু ও আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা হবে। বাসায় দশমীতে বিশেষ আইটেম রান্না হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া হবে। আপাতত এ রকমই পরিকল্পনা। আমি সাধারণত ভিড়কে অনেক ভয় পাই। তাই ভিড়ের মধ্যে গিয়ে বেশি একটা পূজা দেখা হয় না। তবে আমি প্রতিবছর আমার স্কুল ভারতেশ্বরী হোমসে পূজা দেখতে যাই। এবার পূজায় ঢাকাতেই থাকব। এখানে সব আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে পূজার দিনগুলো কেটে যাবে। ইতোমধ্যে আমার প্রিয় মানুষদের উপহার দিয়েছি। তারাও আমাকে উপহার পাঠিয়েছে। এবার দেবীর কাছে চাইব যেন পৃথিবীতে সব মানুষ সুখী হয়। আঁধার কেটে গিয়ে পৃথিবী শান্তিপূর্ণ হোক এটাই প্রত্যাশা।

শৈশবের মতো সেই উৎসব উত্তাপ এখন আর নেই: বৃন্দাবন দাস

পূজায় চঞ্চলদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়। চঞ্চল আমাদের উপহার দেয়। ওদেরও দেয়া হয়। জগন্নাথ হল, ঢাকেশ্বরী মন্দির যাওয়া হয়। তবে পূজায় এবার ঢাকাতেই থাকছি। কাজের চাপ আছে। ১০ তারিখ থেকে শুটিং। স্ক্রিপ্ট রেডি করতে হচ্ছে। স্কুল জীবনে পূজায় ১৯-২০ দিন ছুটি থাকত। ওই সময়ে আনন্দের আমেজ ছিল। আমাদের যৌথ পরিবার ছিল। বাড়িতে দর্জি আসত। আমরা লাইন দিয়ে সবাই দাঁড়াতাম। দর্জি ফিতা দিয়ে কাপড়ের জন্য সবার মাপ নিত। সেটা উৎসবের মতো ছিল। তারপর এক দিন আমাদের অভিভাবক দোকানে গিয়ে পছন্দ দিয়ে আসত কার কী রকমের, কী রঙের কাপড় হবে। সব ভাই বোনেরা এক রঙের শার্ট প্যান্ট পরতাম। তখন আমরা বলতাম ইংলিশ প্যান্ট। ইংলিশ প্যান্ট আমাদের জন্য বিশেষ ছিল। পূজার ২-৩ দিন আগে বস্তাভর্তি করে নিয়ে এসে কাপড় ফেলত। যার কাপড় তার নাম লেখা থাকত। অনেক সময় মন খারাপ হতো কাপড় পছন্দ না হলে। মাও মন খারাপ করত। আমি তো একমাত্র ছেলে ছিলাম তার। তার ছেলের কাপড়টা সবার মতো কেন। তার পছন্দের রঙটা হয়তো হয়নি। শৈশবের মতো সেই উৎসব উত্তাপ এখন আর নেই। ঢাকায় তো আমরা সবাই পরবাসী। স্বজনদের সঙ্গে দেখা হওয়া। সেটাতে এই খানে হয় না। আমাদের গ্রামে দশমীতে বিশাল বড় একটা আয়োজন হতো। সেটা হলো নৌকায় প্রায় এক কিলোমিটার হাজার হাজার মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই থাকত। শত শত নৌকায় উঠে সবাই ঢাকঢোল বাজাত। সেই আমেজ-উৎসব অবশ্য এখন আর নেই।

ভেবেছি কাউকে কোনো কিছু উপহার দেব না: মনোজ প্রামাণিক

পূজাতে প্রতি বছর গ্রামের বাড়িতেই থাকি। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না। পূজার প্রথম পরিকল্পনা প্রতিবারের মতোই গ্রামের বাড়িতে যাব। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, ভাইবোনের সঙ্গে সময় কাটাব। এ ছাড়া নতুন প্ল্যান যুক্ত হয়েছে। এবার আমার এলাকায় অর্থাৎ নওগাঁ রাজশাহীতে যে সিনেমা হলগুলো আছে। সেখানে সবার সঙ্গে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ দেখব। পূজার উপহার অনেকের কাছ থেকেই পেয়েছি। তবে এবার ভেবেছি কাউকে কোনো কিছু উপহার দেব না। এবার সবার জন্য পূজার উপহার হচ্ছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমা । ছোটবেলার পূজা উৎসবে উত্তেজনা ছিল চূড়ান্ত। মজার বিষয় হচ্ছে সেই উত্তেজনাটা উৎসব আমেজটা এখনো আছে। আমার এক ভাই বলছিল পূজায় কাজের জন্য আসতে পারবে না। আমি তাকে বলেছি ছুটি নিয়ে যে করে হোক আসতেই হবে। কারণ আমরা তিন ভাই গ্রামে গিয়ে পূজার সময়ে যখন এক হই আর কিছু লাগে না। ভাই বললে আসলে ভুল, আমরা তিনজন বন্ধু বলতে পারেন। তিনজন ছোট বেলায় এক হলে যা যা করতাম এখনো তা-ই করি। একসঙ্গে ক্রিকেট খেলা, খাওয়া-দাওয়া, ঘোরাঘুরি করা। সবকিছুই আগের মতো মজার আছে। আর দেবীর কাছে চাওয়া হচ্ছে পৃথিবীর সব মানুষের মঙ্গল হোক। তিনি মঙ্গলের দেবী। আমিসহ সবাই শান্তিতে থাকুক। যে কাজ করছি সে কাজে যেন আরো ভালো করতে পারি।

ঢাকা ও ময়মনসিংহে পূজা কাটাব: জ্যোতিকা জ্যোতি

পূজাতে আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিমা দেখতে যাব। কলকাতায় এবারের প্রতিমাগুলো দেখে এসেছি। সেখানে তো মহালয়া থেকেই ঠাকুর দেখা যায়। এখন ঢাকায় কিছু মণ্ডপে পূজা দেখব। তারপর চলে যাব ময়মনসিংহ পূজা দেখতে। সব মিলিয়ে এবার পূজার দিনগুলো ঢাকায় ও ময়মনসিংহে থাকা হবে। পূজা উপলক্ষে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের অনেকেই গিফট করেছি। আমি বরাবরই গিফট করতে ভালোবাসি। আমিও অনেকের কাছ থেকে গিফট পেয়েছি। কলকাতার আত্মীয়রা অনেক উপহার দিয়েছেন। এ বছর দেবীর কাছে চাইব, পৃথিবীতে শান্তি বর্ষিত হোক।

আমার কাছের মানুষগুলো সুস্থ থাকুক: ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর

এখন তো পূজায় আগের মতো আনন্দ নেই। আর অক্টোবর মাসে আমার বাবা মারা গিয়েছিল, এরপর থেকে পূজার আনন্দটা পুরোই চলে গেছে। এবার আরো খারাপ অবস্থা হলো আমার একমাত্র ভাই আর্মি অফিসার, জাতিসংঘ মিশনে মালিতে আছে। তো বাসায় শুধু মা, আমি, ভাইয়ের স্ত্রী আছে। পূজায় দেশেই থাকব, একটু ঘুরতে ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ি যেতে পারি, চট্টগ্রামে যেতে পারি একদিন। পূজা শেষ হলে মাকে নিয়ে ভারতে যাওয়ার প্ল্যান আছে। পূজার গিফটের মধ্যে বাবা-মা একসঙ্গে যে গিফটা দিত, সেটা খুব স্পেশাল ছিল। এখন বাবা নেই, তবে মা এই অসুস্থ শরীরে সবার জন্য গিফট কেনেন, শপিং করেন। মার কাছ থেকে অনেক শাড়ি উপহার পেয়েছি। আমিও মায়ের জন্য কাপড় কিনেছি। মা, আমি, আমার ভাইয়ের স্ত্রী একইরকম শাড়ি নিয়েছি। শপিং করা শেষ। আর পছন্দের মানুষের জন্য গিফট পাঠানো তো আছেই, সেগুলো চলছে আর কি। মা দুর্গার কাছে চাওয়া থাকবে, আমার কাছের ও প্রিয় মানুষগুলো সুস্থ থাকুক, আর কিছু চাওয়ার নেই।

কলকাতায় পূজা দেখব: শিপন মিত্র

সপ্তমীর দিন পর্যন্ত ব্যস্ততায় কাটবে। অষ্টমীর দিন পরিবার ও বন্ধুদের সময় দেব। নবমীতে আমি কলকাতায় যাব। সেখানের আত্মীয় ও বন্ধুদের সঙ্গে নবমী ও দশমী কাটাব। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপে পূজা দেখতে যাব। এছাড়া কলকাতার বিভিন্ন স্থানে পূজা দেখা হবে। প্রতিবছরই আমার বাড়ির লোকজন ও আত্মীয়স্বজন আমাকে উপহার দেন। এবারো তাই। আমি ছোটদের গিফট দিয়েছি। এছাড়া পরিবারের অন্যান্য সদস্য, বন্ধু, আত্মীয়দের গিফট দিয়েছি। দেবীর কাছে এ বছর চাইব, যেন পৃথিবীতে আর কখনো মহামারি না। পৃথিবীতে যত মানুষ আছে সবাই যেন সব সময় সুস্থ থাকে। সবাইকে দেবী যেন সুস্থ রাখেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App