×

জাতীয়

আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে গেছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:৪০ পিএম

আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে গেছে

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

‘বিএনপি হাঁটু ভাঙা নয়, আন্দোলনে জনসম্পৃক্তা দেখে আওয়ামী লীগেরই কোমর ভেঙে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) সাহেব বলেছেন যে, বিএনপির নাকি হাঁটু ভাঙা, আমাদের যে হাঁটু ভাঙেনি-এটা তো টের পাচ্ছেন। লাঠিও আমরা নেইনি।

‘বিএনপি হাঁটু ভাঙা বলে লাঠির ওপর ভর করেছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ রকম বক্তব্যের জবাবে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদল আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতনসহ অনেকে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনাদের ইতিমধ্যে কোমর ভেঙে গেছে। আপনারা শুধু লাঠি নয়, আপনারা ইতিমধ্যে রাম দা-তলোয়ার এবং পুলিশের বন্দুকের ওপরে আপনারা এখন হাঁটছেন। আপনারা জনগণের সঙ্গে নাই, সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। সেজন্য আজকে আপনাদেরকে সেই রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকতে হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ বরাবরই একটা সন্ত্রাসী দল মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তাদের জন্ম হয়েছে সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে। সেজন্য একদিকে তারা বলে যে, আমার সোনার ছেলেদের হাতে আমি কলম তুলে দিয়েছি। আর অন্যদিকে তারা সোনার ছেলেদের হাতে বন্দুক-পিস্তল-লাঠি-সোটা সব কিছু দিয়ে দিয়েছে।

আপনারা দেখেছেন গত ২২ আগস্ট থেকে জনগণের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলনে যখন জেগে উঠছে মানুষ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহবানে, তখন তারা একে দমন করবার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। তারা ৫জনকে গুলি করে হত্যা করেছে, তারা খুন করে, তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে ২৫ হাজারের উপরে নেতাকর্মীদের আসামি বানিয়েছে, ৩ হাজারের মতো তারা আমাদের ছেলেদের আহত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। কেনো? তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে, শান্তিপূর্ণ মিছিলে, ছাত্রদলের একেবারে একটা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে তারা লাঠি, বন্দুক এবং টিয়ার গ্যাস নিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে।

এই ১৫ বছর ধরে তোমরা অত্যাচার চালাচ্ছো, গুম করছো, মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করছো। কিন্তু আজকে জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ শুরু হয়েছে। আমি ছাত্র সমাজকে বলবো, এদেশে যত পরিবর্তন হয়েছে, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এবারো যে পরিবর্তন হবে তা আমার ছাত্রদলের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে হবে, দূর্বার আন্দেোলনের মধ্য দিয়ে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দায়িত্ব একটাই দেশের সকল ছাত্র সমাজকে, তরুণ-যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ করে একটা দূর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগের বাধ্য করতে হবে। এটাই হবে প্রকৃত জবাব। জবাব একটাই এ সরকারকে পতন ঘটাতে হবে, এদের সরাতে হবে। জনগণের বিজয় হবেই।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনো সময় আছে-ওই সমস্ত উল্টো-পাল্টা কথা না বলে আপনারা পদত্যাগ করুন শান্তিতে। সেইভ এক্সজিট নেন এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন, সংসদ বিলুপ্ত করেন।

একই সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা লাঠি নিয়ে কোনো মিটিংয়ে যাই না, যেতেও চাই না। কিন্তু আপনারা ঘোষণা দেবেন লাঠি নিয়ে মিছিল করা যাবে না। অন্যদিকে আপনারা লাঠি দিয়ে পেটাবেন এটা ভালো কথা হলো না, এটা সঠিক কথা হলো না।

আমরা লাঠি খেলা করি না-ওটা আপনারা খেলেন। আপনারা দেখিয়েছেন লাঠিপেটা করে কিভাবে মানুষ হত্যা করতে হয় ১/১১ সময়ে। ১/১১ পূর্ববর্তীতে যে নরককাণ্ড ঘটিয়েছেন, যে নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা কখনোই দেশের মানুষ ভুলবেন না।

তিনি আরও বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-মিটিং করতে চাই। কিন্তু সেইদিন ২৭ তারিখে তেজগাঁওয়ে আমাদের মিছিলে হামলা করেছেন আপনারা-এটা আপনাদের মনে রাখতে হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র দলের নেতাকর্মীদের ওপরে ছাত্র লীগের হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশ হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তাদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা দেখা গেলেও কোনো লাঠি তাদের হাতে দেখা যায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহত নেতারাও মঞ্চে এসে নেতাকর্মীদের সালাম দিয়ে চলে যান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App