×

জাতীয়

প্যাকেট খাবারে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি লবণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০৯ পিএম

প্যাকেট খাবারে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি লবণ

বুধবার এক বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা। ছবি: ভোরের কাগজ

প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণের আধিক্যে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। দেশে প্রাপ্ত প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে।‌ খাদ্যে লবণের সর্বোচ্চ মাত্রা নির্ধারণ জরুরি। পাশাপাশি ভোক্তাদের সতর্ক করতে ফ্রন্ট অব প্যাক লেবেল দরকার বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ পরিচালিত অ্যাসেসমেন্ট অব স্য কন্টেন্ট অ্যান্ড লেবেল কমপ্লায়েন্স অব কমনলি কনজিউমড প্রোসেসড প্যাকেজড ফুডস অব বাংলাদেশ শীর্ষক এক গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা এই মত দেন। এ যুক্তরাষ্ট্রের বিজলভ টু সেইভ লাইভস সহায়তায় গবেষণাটি করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবারে সর্বোচ্চ ৭৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণকে নিরাপদ মাত্র বিবেচনা নিয়ে দেখা গেছে, বাজারে বহুল প্রচলিত ৬১ শতাংশ বিস্কুট, চিপস, চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ, আচার, চাটনি ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবারে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে। আর ৩৪ শতাংশ খাবারে নিরাপদ মাত্রার দ্বিগুণ অর্থাৎ ১ দশমিক ৫ গ্রামের বেশি লবণ পাওয়া গেছে। বহুল প্রচলিত চানাচুর, নুডলস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ ও ঝালমুড়ির কোনোটিতেই নির্ধারিত মাত্রার লবণ পাওয়া যায়নি, বরং এগুলোতে দ্বিগুণের বেশি লবণ রয়েছে। একইভাবে আচার ও চাটনির ৮৩ শতাংশ, চিপসের ৬৩ শতাংশ এবং ডাল বুট ভাজার ৬০ শতাংশে দ্বিগুণ লবণ রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে চিপস, ডাল-বুটের একটিতেও নির্ধারিত মাত্রার লবণ নেই।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, মূলত বাংলাদেশে সরকারিভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণের সর্বোচ্চ কোন সীমা নির্ধারণ করা নেই। যার ফলে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যে ইচ্ছেমতো লবণ যোগ করে। যদিও মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং প্রবিধানমালা ২০১৭ অনুসারে, প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিদ্যমান লবণের পরিমাণ মোড়কের লেবেলে উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু গবেষণায় প্রায় অর্ধেক (৪৪ শতাংশ) খাবারে মোড়কে উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ পাওয়া গেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষই এ জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। গড়ে একজন ব্যক্তি সপ্তাহে ১৫ বার অর্থাৎ দিনে ২ বারের বেশি এসব খাবার গ্রহণ করেন। আর অত্যধিক লবণ গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এসব রোগ প্রতিরোধ করতে হলে প্রক্রিয়াজাত খাবারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে লবণের পরিমাণ নির্ধারণ করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের মোড়কে পুষ্টি সম্পর্কিত তথ্য যথাযথভাবে উল্লেখ করাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে একজন ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারেন খাবারটি স্বাস্থ্যকর নাকি অস্বাস্থ্যকর।

অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও খাবারের মোড়কের সম্মুখভাগে লেবেলিং (ফ্রন্ট অব প্যাক লেবেলিং) প্রচলন করা হলে ভোক্তারা সহজে খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে তা কেনার বিষয়ে সিদ্ধাতে নিতে পারবেন। এর ফলে মোড়কে থাকা স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য আকারের লেখা এবং চিহ্ন দেখে একজন ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারবেন খাবারটি স্বাস্থ্যসম্মত হবে কিনা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের অধ্যাপক ডা সোহেল রেজা চৌধুরী, গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি লিগ মো. রুহুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির সদস্য অধ্যাপক ডা আব্দুল আলিম, হার্ট ফাউন্ডেশনের গবেষণা সমন্বয়কারী ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App