×

জাতীয়

গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ব্যবহার করতেন না খলিলুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০২:০২ পিএম

গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ব্যবহার করতেন না খলিলুর

র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী খলিলুর রহমান

গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ব্যবহার করতেন না খলিলুর

ছবি: ভোরের কাগজ

ঢাকার সাভার থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতর নাম-মো. খলিলুর রহমান (৬৮)। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী তিনি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর থেকেই তিনি পালিয়ে যান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে যাতে কোনভাবেই শনাক্ত করে গ্রেপ্তার না কর‍তে পারে সে লক্ষ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না তিনি। ঘন-ঘন নিজের অবস্থানও পরিবর্তন করেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামী খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এসব কথা জানান র‍্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। র‍্যাবের মুখপাত্র মঈন বলেন গ্রেপ্তারকৃত ১৯৫৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর জন্ম গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে তিনি ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিল। যুদ্ধের সময় তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চন্ডিগড় ইউনিয়নের আল বদর বাহিনীতে কমান্ডার হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধবংস করা, ধর্ষণের চেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যায় জরিত ছিল। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে ২২জনকে হত্যা, ১জন’কে ধর্ষণ, ১জনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত ৪জনের মধ্যে দুজনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুটপাট ও ৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। [caption id="attachment_371635" align="aligncenter" width="700"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption] তিনি আরো বলেন, এরই আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ এর ৯ নং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি মো. খলিলুর রহমানসহ তার ভাই মো. আজিজুর রহমান, একই এলাকার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তরাব আলীর ছেলে আশক আলী, জানিরগাঁও ইউনিয়নের কদর আলীর ছেলে শাহনেওয়াজ ও একই এলাকার রমজান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ ধবংস করা, ধর্ষণ এবং ধর্ষণের চেষ্টার পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে চুড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পাঁচজন আসামির মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সাভার থেকে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে আগেই কারাগারে পাঠানো হয়। চলতি বছরেরর গত ১৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে খলিলুর রহমানসহ ৪জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১জনকে ১০ বছরের সাজা ঘোষণা করেন। তবে এরই মধ্যে বিচারকালীন সময় চারজন আসামি বিভিন্ন সময় মারা যান। তিনি আরো বলেন, ফলশ্রুতিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত পলাতক আসামি খলিলুরকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারী করে আসছিল র‍্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৪ সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হয়। কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি জানায় যে, গত ২০১৫ সাল থেকে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি ফেরারী হন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে উক্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে গৃহীত হলে আত্মগোপনে চলে গিয়ে রাজধানীর দক্ষিনখান, তুরাগ ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে। আত্মগোপনে থাকাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নিয়মিত বাসা পরিবর্তন করাসহ একাকী অবস্থান করতেন। এসময় যোগাযোগের জন্য তিনি কোন ধরণের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। কিন্তু মাঝে মাঝে তার পরিবারের সদস্যরা গোপনে তার সংগে দেখা করত। তার ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য তারা নিয়মিত অর্থ প্রদান করত। মামলার রায় ঘোষণার পর সে গ্রেপ্তার আশঙ্কায় তার অবস্থান নিরাপদ নয় ভেবে স্থান পরিবর্তন করে সাভারে আত্মগোপন করে। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App