×

জাতীয়

ইউপি সদস্য যখন চোর চক্রের নেতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:৫৭ পিএম

ইউপি সদস্য যখন চোর চক্রের নেতা

চোর চক্রের নেতা মাদারীপুরের শিরখাঁড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল হক ফকির গ্রেপ্তার। ভোরের কাগজ

৪ হাজার চোরের তালিকা ডিএমপির হাতে গত মাসেই ৭৩টি চুরির মামলা চোর গ্রেপ্তারে স্পেশাল ড্রাইভ দেয়া হচ্ছে

মাদারীপুরের শিরখাঁড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হলেও বাসা-বাড়ি ও দোকানের গ্রিল এবং তালা কাটা চোর চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন আজিজুল হক ফকির (৪৭)। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর সেনপাড়া পর্বতা ঈদগাহ মাঠ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজিজুল হক তার অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে রাতে গ্রিল কেটে অন্তত ৫০০টি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।

‌সম্প্রতি চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আমরা নজদারি বাড়িয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হই। ৪ হাজার চোরের ডাটাবেজ এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতে। সব ইউনিটকেই চোর ধরার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চোর চক্রের হোতা আজিজুল হক ফকিরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এ কে এম হাফিজ আক্তার। বুধবার (২৮সেপ্টম্বর) বিকালে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ঢাকা শহরে খুন কখনো বাড়ে আবার কমে। আবার ডাকাতিও কখনো বাড়ে। ইদানিং ডাকাতির চেয়ে চুরি বেশি হচ্ছে। অপরাধীরা হয়তো মনে করছে চুরিটা বেশি নিরাপদ। চুরির পর ধরা পড়লেও দ্রুত জামিন পেয়ে যায়। তাছাড়া অল্প চুরির ঘটনায় থানায় রিপোর্টও করেন না অনেক ভুক্তভোগী। গত মাসে বিভিন্ন থানায় ৭৩টি চুরির মামলা হয়েছে। ঢাকার চার হাজারের বেশি চোরের ডাটাবেজ এখন আমাদের কাছে আছে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি রাজধানীতে বড় বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ২০ আগস্ট কলাবাগান থানার ডলফিন গলিতে একটি বাসার গ্রিল কেটে বড় চুরির ঘটনা ঘটেছে। ওই বাড়ি থেকে ৭২ ভরি স্বর্ণ ও ১ লাখ টাকা নিয়ে যায়। সেই চোরের দলকে তিনটি পিস্তল, গুলি, স্বর্ণ ও টাকাসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। কাউকে বল প্রয়োগ না করে যদি গ্রিল কেটে চুরি করা যায় সেটা তো অনেকাংশে তাদের জন্য নিরাপদ। তারা মোবাইলও ব্যবহার করে না। অনেক ক্ষেত্রে তারা কোনো ডিভাইস বা অন্য কিছু স্পর্শ না করেই শুধু স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে চলে যায়।

ডিএমপির এ উর্ধতন কর্মকর্তা গ্রেপ্তারকৃত সম্পকে বলেন, মাদারীপুরের শিরখাঁড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি আজিজুল হক ফকিরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি চোর চক্র রয়েছে। তারা প্রাইভেটকার নিয়ে সারা ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়ায়। তারা নম্বর প্লেট পরিবর্তন করে প্রায়ই চুরি করে আসছিল। তারা গ্রিল কাটা যন্ত্রাংশ তাদের সঙ্গেই থাকে। ছোটখাটো যা পায় টার্গেট করে দ্রুত গ্রিল কেটে বা দরজা ভেঙে চুরি করে।

এ কাজে তারা ধরা পড়বে না এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে চক্রটি চুরি করে আসছিল উল্লেখ করে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, এক রাতে চক্রটি চুরি কাজ সম্পন্ন করে মিরপুর বেনারশি পল্লীতে স্ত্রীদের জন্য লেহেঙ্গা ও শাড়ি কিনতে যায়। কেনা-কাটা শেষে দোকানদারকে আবার বলেও যায়, যদি পছন্দ না হয় তাহলে এসে পরিবর্তন করে নিয়ে যাবে। কতটা কনফিডেন্টলি তারা চলছিল বলে বিস্ময় প্রকাশ করেন এ কর্মকর্ত!

তিনি বলেন, চোর ও ছিনতাইয়ের ওপর স্পেশাল ড্রাইভ দেয়া হচ্ছে। সবগুলো ডিভিশন ও ডিবি ড্রাইভ দিচ্ছে। কারণ এ ধরনের উপদ্রবে বিরক্ত সাধারণ মানুষ। আমরা আশ্বস্ত করব এসব ঘটনা কমবে। ইতোমধ্যে আজিজুল হাকিম গ্রেপ্তার হয়েছে। তার বাকি সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি গ্রেপ্তারের রাতেই চারটি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা হয়েছে। একটি মামলা মাদারীপুরে হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App