×

মুক্তচিন্তা

শিক্ষায় মহাসংকেত বাজছে, দায় কাদের?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:২৯ এএম

গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ঘটা কিছু কিছু দুর্ঘটনার সংবাদ আমরা জানতে পারছি। তবে গোটা শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে বহু বছর আগে থেকেই নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা ঘটেই আসছে। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা হলে কয়েকদিন গণমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় হয়, কর্তৃপক্ষের নানা ধরনের তৎপরতা দেখা যায়। কিন্তু নতুন নতুন ঘটনা দুর্ঘটনার তোড়ে পুরনো সবকিছুই আলোচনা, সমালোচনার মধ্য থেকে চলে যায়। এভাবেই শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরের গলদ, অব্যবস্থাপনা, সমস্যা দিনে দিনে বছরে বছরে কেবল বেড়েই চলছে। সমাধান অনেকে আশা করলেও ভেতরে ক্যান্সারের সেল জমিয়ে রেখে কেউ কখনো যেমন আরোগ্য কামনা করতে পারে না, শিক্ষাব্যবস্থায়ও খুব ভালো কিছু আশা করা যাবে না। ক’দিন আগে দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এর ফলে ৪টি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে কেন্দ্র সচিব, শিক্ষক এবং আরো অনেকেই জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। যশোর বোর্ডে ঘটেছে অন্য ধরনের ঘটনা। নড়াইলে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার দিন ভুলের কারণে দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ প্রশ্নপত্র চলে গিয়েছিল। এ কারণে শুধু যশোর বোর্ডের বাংলা দ্বিতীয় পত্রের এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নকল প্রতিরোধে প্রশাসন এত গলদঘর্ম ব্যবস্থা নিয়েও তা ঠেকাতে পারেনি। প্রশ্নপত্র ভুলভাবে বণ্টন করা রোধ করা যায়নি। পাবলিক পরীক্ষা বাহ্যিকভাবে সুষ্ঠু হলেও ভেতরে কত কী ঘটে তার অনেক কিছু নিয়েই আমরা মুখ খুলি না। উত্তরপত্র মূল্যায়ন নিয়েও হাজারো অভিযোগ দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে। শুধু পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই এতসব আয়োজন ও কর্মযজ্ঞ চলার পরও আমাদের প্রায়ই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার নানা ঘটনা শুনতে হয়। প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষা উপলক্ষে প্রায় এক মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া বলতে গেলে বন্ধই থাকে। একটি পরীক্ষার জন্য অন্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরপরও সুফলটা যদি দীর্ঘমেয়াদি হতো তাহলে মেনে নেয়া যেত। কিন্তু আমাদের শিক্ষার মান পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল দিয়ে যে নিশ্চিত করা যায়নি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। উচ্চতর পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা কিংবা চাকরির জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ফলাফল থেকে অনেক আগেই আমরা জেনে গেছি যে আমাদের এত ঢাকঢোল পিটিয়ে নেয়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বেশিরভাগই ধার্যকৃত পাস নম্বর লাভ করতে পারে না। আবার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোতে প্রক্সি পরীক্ষার্থীরও সংখ্যা রোধ করা যায়নি। শিক্ষক নিয়োগের যেসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো থেকে যাদের পাওয়া যায় তাদের অনেককে দিয়েই শিক্ষার পঠনপাঠন চলে না। তাহলে পাঠদান কীভাবে মানসম্মত হবে? দেশের গোটা শিক্ষাব্যবস্থায় এতসব অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতি দীর্ঘদিন থেকে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে এসেছে যে এখন মাথাভারি শিক্ষাব্যবস্থার মাথাটাই লুটিয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ভুরুঙ্গামারী কেন্দ্রের যেসব শিক্ষক প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন, তাদের নীতি-নৈতিকতা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতেই পারি। কিন্তু এ ধরনের কাজের সঙ্গে না হোক, অন্য ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যারা যুক্ত হয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে অনেক আগেই মাটিতে লুটিয়ে দিয়েছেন তাদের ক’জনকে আমরা চিহ্নিত করতে পারব? দেশে এখন কোচিং ব্যবসার নামে যা চলে তা দিয়ে শিক্ষার কিছুই অর্জন যে সম্ভব নয়- সেটি অস্বীকার করার উপায় কী? বিদ্যালয় এবং কলেজ পর্যায়ে কোচিং এখন প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যালয় এবং কলেজে পাঠদান অনেক আগেই হারিয়ে গেছে। নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হলে তো কথাই নেই। শিক্ষা সচিব মহোদয় গণমাধ্যমে নম্র ভাষায় অনেক নীতি-নৈতিকতার কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পদাধিকারবলে সভাপতি, সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে কতটা পাঠ দেন, কতটা তাদের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের যেতে বাধ্য করেন, প্রতি মাসে বিরাট অঙ্কের অর্থ যেভাবে উপার্জন করেন সেই তথ্য কি তিনি জানেন না? তিনি কেন সামান্যসংখ্যক ওই ক’টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান রক্ষা করার ব্যবস্থা করতে পারছেন না। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তো অনেক নামিদামি, শিক্ষকরা বেতনও পান ভালো। কিন্তু প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক যে ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন, পাঠদানের সুযোগ পেয়েও তারা যে শিক্ষক হয়ে উঠছেন না- সেটি দেখা ও বোঝার উপায় কী? ভুরুঙ্গামারীর শিক্ষকরা কোচিংয়ের আয় দিয়েও সন্তুষ্ট নন। তাদের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় এবং ছাত্র ধরারও ব্যবস্থা হিসেবেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ‘সুযোগ’ কাজে লাগানো হতে পারে। শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্ন প্রণয়নসহ আরো অনেক কাজেই শিক্ষক কর্মকর্তারা জড়িত। ওইসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পেছনে বাজারের গাইডবই মালিক, প্রতিনিধিরা কীভাবে যোগাযোগ রাখেন, কেন রাখেন সেটি বোঝার জন্য আইনস্টাইন হওয়ার দরকার পড়বে না। অনেক শিক্ষকই নিজের ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে অমুক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক… নানা পরিচয় প্রদান করেন, কেন করেন? এই অধিকার কি শিক্ষকের থাকা আইনসম্মত? দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ কলেজ পর্যন্ত গাইডবই এবং নিম্নমানের বই শিক্ষার্থীদের ক্রয় করতে বাধ্য করতে দেশের কত সংখ্যক শিক্ষক, পরিচালনা পরিষদ জড়িত তার কোনো পরিসংখ্যান এদেশে এখন আর নেয়া সম্ভব নয়। পিএসি, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে কোচিং এবং গাইডব্যবসা যেভাবে জমে উঠেছিল তাতে গাইড ব্যবসায়ী ও শিক্ষকদের বাড়তি উপার্জনের পথ কেবলই প্রশস্ত হচ্ছিল। সেই পথের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের চাপায় শিক্ষা হারিয়ে যেতে বসেছিল। একসময় সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। শিক্ষকদের বারবার প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই প্রশিক্ষণ শিক্ষকদের কতটা মাথায় ঢুকেছিল- সেটি বলা মুশকিল। কিন্তু শ্রেণিপাঠে শিক্ষার্থীরা এর কোনো প্রতিফলন দেখতে পায়নি। কেন পায়নি? এখন শিক্ষামন্ত্রী এবং সচিব নতুন কারিকুলাম ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক পর্যায় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পঠনপাঠন, পরীক্ষা এবং শিখন ফল মূল্যায়নের যে পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছেন তা শুনতে বেশ ভালোই মনে হচ্ছে। কিন্তু যে শিক্ষকমণ্ডলী এমন একটি ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য বিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে রয়েছেন তাদের ওপর কতটা ভরসা রাখা যেবে সেই প্রশ্নটি মৌলিক। সুতরাং বিদ্যমান নানা সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদ ব্যবস্থা বজায় রেখে তা বাস্তবে রূপ দেয়া মোটের ওপর অসম্ভব। যতই প্রশিক্ষণ দেয়া হোক না কেন, সেইসব প্রশিক্ষণ আদৌ শিক্ষকের চিন্তা-চেতনায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারে কি না সেটি দেখার বিষয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষকদের সাধারণভাবেই বইপুস্তক পড়াশোনার অভ্যাস নেই। শ্রেণিকক্ষে বেশিরভাগ শিক্ষকই পাঠ্যবই দেখে দেখে পড়ান, শিক্ষার্থীদের জানার আগ্রহ সৃষ্টি করার কিংবা কৌতূহল নিবারণ করার দক্ষতা প্রায় নেই বললেই চলে। এই শিক্ষকদের মাধ্যমে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের ভরসা খুব একটা বেশি করা যাবে না। মূল্যায়ন এবং নাম্বার শিক্ষকদের হাতে রাখার মধ্যেও আস্থা রাখার সম্ভাবনা খুব বেশি দেখি না। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষায় বিরাটসংখ্যক শিক্ষার্থী ন্যূনতম শিখন ফল নিয়ে মাধ্যমিকে যেতে পারছে না। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসম্মত পাঠদান নেই, অভিভাবকদের বিরাট অংশ সন্তানদের লেখাপড়ার প্রতি যতœশীল নন। অথচ সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করছে। এই অর্থ অভিভাবকরা কতটা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য ব্যয় করেন তা তারাই ভালো জানেন। কিন্তু উপবৃত্তির নিশ্চয়তা থাকার পরও এখন অভিভাবকদের একটি অংশ শিক্ষার্থীদের কেজি নামধারী স্কুলে এবং অন্য অংশ নানা নামের মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পাঠাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনেকগুলোই এখন শিক্ষার্থী সংকটে আছে, শিক্ষার মানও সেইসব প্রতিষ্ঠানে শূন্যের কোটায় অবস্থান করছে। মাধ্যমিক পর্যায়েও শিক্ষার মান একই কারণে নিম্নগামী। ফলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, গ্রামে-গঞ্জে ঝরে পড়াদের একটি বড় অংশ উচ্ছৃঙ্খল ও বখাটে হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষায় এদের ধরে রাখা যায়নি। যারা আছে তারাও খুব প্রত্যাশিত মানে শিক্ষা পাচ্ছে না। ফলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই চলছে গতানুগতিক ও মানের সংকটে। এর দায় শিক্ষার্থীদের নয়। শিক্ষক, অভিভাবক, পরিচালনা পরিষদ, শিক্ষা প্রশাসনসহ যারা শিশু-কিশোর ও তরুণদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর দায়িত্ব নেয়ার কথা তারা সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না। আমাদের সমাজে এখন অর্থ, বিত্ত, প্রভাব বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। শিক্ষার বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্ব দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম, বিধি, বিধান অনুযায়ী চলছে না। শিক্ষা নিয়ে চলছে নানা ধরনের বিভ্রান্তি। এর ফলে তৈরি হচ্ছে নানা নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু বুনিয়াদি শিক্ষা পৃথিবীর কোনো দেশেই বিভাজিত নয়। মাতৃভাষা শেখা, চিন্তা ও মননের উন্মেষ ও বিকাশ, যুক্তির সঙ্গে পরিচিত করা এবং জীবন, জগৎ ও প্রকৃতিকে চেনা, জানা ও বোঝার বিষয়গুলো শিক্ষাক্রমের মাধ্যমেই শিশুদের দিতে হয়। সেই ধারণা আমাদের এখানে, এমনকি তথাকথিত শিক্ষিত মানুষদের মধ্যেও প্রয়োজনীয় মানে নেই। সে কারণে শিক্ষাব্যবস্থায় চলছে যার যার ইচ্ছেমতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ‘প্রতিষ্ঠান’ গড়ে তোলা, ব্যবসা করা এবং শিক্ষার নামে নানাভাবে বিভ্রান্ত করা। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার এমন বেহাল অবস্থা সাম্প্রতিক নয়। এটি বেড়ে উঠেছে স্বাধীনতার অল্প কয়েক বছর পর থেকেই। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু একটি শিক্ষানীতির মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মেধা, মনন, দেশপ্রেম, আদর্শ নাগরিক এবং দক্ষ জনশক্তিরূপে গড়ে তুলতে কুদরত-এ-খুদা শিক্ষাকমিশন গঠন করেছিলেন। সে ধরনের চিন্তা ও নীতি কৌশলও ওই শিক্ষা নীতিতে ছিল। কিন্তু ’৭৫-এর পর দেশকে তেমন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ধারণা থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়, অপপ্রচার চালানো হয় শিক্ষানীতি নিয়ে, সৃষ্টি করা হয় বিশাল এক শূন্যতা যেখানে যে যার মতো করেই শিক্ষাকে নিয়ে কাড়াকাড়িতে নামে। রাজনীতিবিদ, আমলা, সরকার সবাই শিক্ষাকে নিয়ে রাজনীতি করেছে, বিদেশ থেকে প্রচুর অর্থ এনেছে, নিজেদের পকেট ভারি করেছে। কিন্তু দেশে মানসম্মত শিক্ষার প্রাথমিক কোনো প্রতিষ্ঠানই গড়ে ওঠেনি। সেই ধারণা থেকে আমরা অনেকদূরে ছিটকে পড়ে গেছি। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে অনেক কিছুই হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা কোনো নীতি আদর্শ ছাড়া হতে পারে না। আমরা শিক্ষানীতিবিহীন এমন অবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে এখন যে শিক্ষার প্রত্যাশা করছি তা কেবলই দুরাশার স্বপ্ন দেখা ছাড়া আর কিছু নয়। এমন অবাস্থব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে কোনো কালেই ২১ শতকের মানসম্মত শিক্ষা ও মানবসম্পদ তৈরি হওয়ার নয়। এই সত্য আমরা আদৌ উপলব্ধি করতে পারছি কি না সেটিই এখন মস্ত বড় প্রশ্ন। আমরা তো প্রশ্ন করতেই ভুলে গেছি। প্রশ্ন করার শিক্ষাও আমরা পাইনি। সে কারণেই দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে এমন সব পরিস্থিতি গড়ে উঠেছে যেটি সব বিপদসংকেত দেখানোর পরও আমরা বুঝতে পারছি না এর পরিণতি ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছে। মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App