×

সারাদেশ

সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:১৬ পিএম

সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা

ছবি: ভোরের কাগজ

সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা

ছবি: ভোরের কাগজ

সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা
সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা
সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা
সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা
সীমান্তে আতঙ্ক, যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে গোলাগুলি চলছেই। এর ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।

জানা যায়, গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে তীব্র গুলির আওয়াজ সীমান্তের মানুষকে আতঙ্কিত করে তোলে। এরই মাঝে দেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের মর্টারশেলের আঘাত সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। দুই দেশের আলোচনায় গোলা নিক্ষেপের আর কোন ঘটনা না ঘটার প্রতিশ্রুতি দেয় মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তবুও মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান আকাশ সীমা লঙ্ঘন করছে বার বার।

মর্টারশেলের গোলা বাংলাদেশ ভূখণ্ডে নিক্ষেপ করতে একটুও পরোয়া করছে না মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

স্থানীয়রা জানান, মাঝে মধ্যে সীমান্ত এলাকা একেবারে নিস্তব্ধ থাকছে। আবার রাতের দিকে গুলি ও মর্টারশেলের শব্দে হয়ে উঠছে উত্তপ্ত।

জিরো লাইনের বসবাসরত নারী নূর বাহার বলেন, নোম্যান্সল্যান্ডের বসবাসরত প্রায় পাঁচ হাজারে মতো রোহিঙ্গাদেরও গোলাগুলির শব্দ আর মর্টারশেল ছুঁড়ার ভয়ে রাত জেগে থাকতে হয়।

নোম্যান্সল্যান্ডের রোহিঙ্গা নারী কদ বানু বলেন, মিয়ানমার সরকার আমাদের গুলি করছে, আমরা যাতে শূন্যরেখা থেকে চলে যাই। তারা শূন্য রেখায় গুলি করছে, মর্টারশেলে গোলা ফাটাচ্ছে।

আবদুর রহিম নামের আরেক রোহিঙ্গা বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গোলার আঘাতে আমাদের শূন্যরেখায় ইকবাল নামে এক রোহিঙ্গা মৃত্যু হয়েছে, একই সময়ে আহত হয়েছে চারজন। তারা এখনো হাসপাতালে। আমরা শূন্য রেখায় রয়েছি, এখান থেকে কোথাও যাবো না, যদি বিদেশিরাও নিয়ে যেতে চায়, তাও যাবো না। শুধু নিজের দেশ মিয়ানমারে নাগরিক অধিকার নিয়ে ফিরে যাবো।

আশারতলী সীমান্তের নজু মিয়া জানান, ঘুমধুমের তুমব্রু এলাকাটি আমাদের থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে। সেখানে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার ভূখণ্ডে প্রতিনিয়ত গোলাগুলি, হেলিকপ্টার থেকে সীমান্ত ঘেঁষে বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আর জিরো লাইনে মর্টারশেল ছোঁড়ে আসছে আমাদের ভূখণ্ডে, এসব খবর কানে আসলে তখন ভয়ে আমাদের রাত জেগে থাকতে হয়। কারণ আমরাও সীমান্তে বসবাস করে আসছি দীর্ঘবছর ধরে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের ভূখণ্ডে এই চলমান যুদ্ধের ঘটনায় মাঝে মধ্যে আমাদের ভূখণ্ডে মর্টারশেলে গোলা বিস্ফোরণ হচ্ছে। তাই আমরা এসব অপ্রীতিকর ঘটনা যেন সংঘটিত না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্তের ৩শ পরিবারের মধ্যে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোর মধ্যে দেড়শ তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে সীমান্তে আচমকা গুলি আওয়াজ আর যুদ্ধ বিমানের আকাশসীমা লঙ্ঘনে জিরো লাইনে বিজিবি সর্তক অবস্থানে পুরো সীমান্তে সিলগালার মতো অবস্থানে রয়েছে। জবাবদিহি ছাড়া সীমান্তের মানুষ চলাফেরা করতে পারছে না।

এ বিষয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস এই প্রতিবেদককে জানান, তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের অন্যত্রে সরিয়ে নেয়ার তালিকা কার্যক্রম প্রক্রিয়া চলছে। তবে এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়।

উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। এর ফলে বিস্ফোরণে কম্পিত হচ্ছে উপজেলার ঘুমধুম, তুমব্রু ও বাইশফাঁড়ি, রেজু বরইতলীসহ কয়েকটি সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম। এতে চরম আতঙ্কে দিন পার করছে সীমান্তের এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়া মাইন বিস্ফোরণ ও মর্টারশেলের আঘাতে ১ জন নিহত এবং একজনের পা উড়ে যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App