×

খেলা

টাইগ্রেসদের শিরোপা জয়ের হাতছানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৪৮ এএম

টাইগ্রেসদের শিরোপা জয়ের হাতছানি

ফাইল ছবি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ফাইনালে আজ আয়ারল্যান্ডের মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দল। বাংলাদেশ সময় ম্যাচটি শুরু হবে রাত ৯টায়। এর আগে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে টাইগ্রেসরা। এর পাশাপাশি নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় আগামী নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলাও।

১০ দলের অংশগ্রহণে হতে যাওয়া ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বাগতিক হিসেবে আগে থেকেই জায়গা নিশ্চিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। এছাড়া র‌্যাঙ্কিং বিবেচনায় ভারত, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান পেয়েছে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকেট।

এর আগে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৪ রানে এবং দ্বিতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচেও জয়ের ধারা অব্যাহত থাকে জ্যোতিদের। এ ম্যাচে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ৫৫ রানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়। সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১১৩ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৭ রান করে বাংলাদেশ। ১৫ ওভার শেষে স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৬৮ রান। ফারজানা হক পিংকি ১৭ বলে ১১, মুরশিদা খাতুন হ্যাপি ৩৫ বলে ২৬ ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ২৪ বলে ১৭ রান করে আউট হন। অপরাজিত ইনিংসে রোমানা করেন ২৪ বলে ২৮ রান। এছাড়া শেষ দিকে ক্যামিও ইনিংসে ১০ বলে ১৭ রান করেন ঋতু মণি। ১১৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই কঠিন চাপে পড়ে থাইল্যান্ড। ইনিংসের পাঁচ ওভারের মধ্যে মাত্র ১৩ রানে সাজঘরে ফিরে যান তিন ব্যাটার। নিজের প্রথম ওভারে ডাবল উইকেট মেইডেন নেন বাঁ হাতি স্পিনার সানজিদা আখতার মেঘলা। অধিনায়ক নারুমল ইনিংসের ১৩তম ওভারে দলীয় ৪৫ রানে আউট হওয়ার আগে খেলেন ২৭ বলে ১২ রানের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১০২ রান করে থাইল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন সালমা। এছাড়া মেঘলা দুই ও নাহিদা আখতারের শিকার এক উইকেট।

২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সরাসরি খেলেছিল স্বাগতিক হিসেবে। এরপর ২০১৫, ২০১৮, ২০১৯ সালে বাছাই পর্বে রানার্সআপ ও দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে খেলে টাইগ্রেসরা। এবারো ফেভারিট ছিল নিগাররা। প্রত্যাশিত সাফল্যের পর অধিনায়ক নিগারের কণ্ঠে ছিল স্বস্তি আর সামনে নিজেদের আরো মেলে ধরার তাড়না, আমরা এখানে এসেছিলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করতে এবং আমরা তা পেরেছি। এত বছর ধরে আমরা একসঙ্গে খেলছি, এখন সময় হয়েছে গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়ার, আমরা কতটা ভালো দল হিসেবে কতটা উন্নতি করেছি। তিনি যোগ করেন, পুরো টুর্নামেন্টে আমার মেয়েরা যেভাবে খেলেছে, অধিনায়ক হিসেবে আমি গর্ব অনুভব করি। ম্যাচটি যদিও একটু ক্লোজ ছিল, তারপরও আমার বিশ্বাস ছিল সবার প্রতি। দলের সবারও বিশ্বাস ছিল যে আমরা ম্যাচটা বের করে আনতে পারব। মেয়েরা দারুণ বোলিং ও ফিল্ডিং করেছে। ফাইনালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে জয় ছাড়া অন্যকিছু ভাবছে না অধিনায়ক। তিনি বলেন, এখন অবশ্যই আমাদের নজর চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে। আশা করি আমরা ফাইনালে আমাদের সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরব।

থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন সানজিদা আক্তার মেঘলা। ৪ ওভারে ৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তিনি। তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই আসরের আগে ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন মাত্র ৪টি। এবার বাছাইয়ে খেললেন টানা ৪ ম্যাচ। ভালো বোলিং করেন প্রতি ম্যাচেই। ২১ বছর বয়সি স্পিনার উচ্ছ¡সিত নিজের ও দলের সাফল্যে, আমার জন্য এটা অনেক বড় অর্জন। কারণ প্রথমবার এত বড় ইভেন্টে খেলেছি দলের সঙ্গে। দলের সিনিয়ররা, সবাই আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন, সাহস দিয়েছেন। কোচ ও স্টাফরা সব সময় ইতিবাচক আবহ দিয়েছেন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। নারী দলের নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম এবার দলের সঙ্গে গেছেন ম্যানেজার হিসেবে। দলের লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় তিনি খুশি। তবে সাবেক এই জাতীয় পেসার সামনে আর বাছাই খেলার ঝামেলায় যেতে চান না। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আনন্দের চেয়ে বড় যে বিষয়টা, দলের এটা প্রাপ্য ছিল। কোচিং স্টাফরা সবাই দারুণ সাপোর্ট করেছেন। তবে আমি চাইব সামনে যেন এভাবে কোয়ালিফাই খেলে বিশ্বকাপে যেতে না হয়। দলের ক্রিকেটাররাও এই ভাবনায় একমত। বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ আমাদের প্রাপ্য।

দলের সিনিয়র ক্রিকেটার ও সবগুলো বিশ্বকাপে খেলা অলরাউন্ডার সালমা খাতুনের কণ্ঠেও প্রত্যয় ভবিষ্যতে বাছাই পর্ব এড়ানোর, আনন্দ লাগছে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পেরে। তবে বারবার এই বাছাই আমরা খেলতে চাই না। পরেরবার যেন এত কষ্ট করে, এসব ম্যাচ খেলে যেতে না হয়, ওই চেষ্টাই করব। আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ এখনই তাকাচ্ছেন বিশ্বকাপে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় হবে ১০ দলের এই আসর। আরেকটি বিশ্বকাপে খেলতে যেন তর সইছে না এই অলরাউন্ডারের, খুব ভালোভাবে আমরা বাছাইয়ের কাজটা করলাম। ইনশাল্লাহ, আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে পরের বিশ্বকাপে, দক্ষিণ আফ্রিকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App