×

খেলা

কম্বোডিয়াকে হারাতে মরিয়া জামালরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০৯ এএম

কম্বোডিয়াকে হারাতে মরিয়া জামালরা

ছবি: সংগৃহীত

ফিফা প্রীতি ম্যাচে আজ কম্বোডিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। বাংলাদেশ সময় ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬ টায়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুতে নেপাল জাতীয় দলের সঙ্গে আর একটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। কম্বোডিয়ার বিপক্ষে চারবারের সাক্ষাতে ৩ জয় ও ১ ড্র করে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে প্রথমবার মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। সে ম্যাচে ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতেছিল লাল সবুজের জার্সিধারীরা। ২০১৯ সালের ৯ মার্চ কম্বোডিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচও হয়েছিল কম্বোডিয়ার মাঠে। রবিউল হাসানের একমাত্র গোলে বাংলাদেশ জিতে ফিরেছিল।

র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে কম্বোডিয়া। তাদের অবস্থান ১৭৪তম। আর বাংলাদেশ ১৯২। বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া গতকাল ম্যাচের আগে বলেন, ভালো অনুশীলন হচ্ছে এখানে। কালকে (আজ) আমাদের ম্যাচ। তাও আবার ক্লোজ ডোর। এটা খেলতে পারলে বুঝব ওরা কেমন খেলে। সবাই খেলার জন্য মুখিয়ে আছে। কম্বোডিয়ার সঙ্গে আজ ম্যাচ খেলেই নেপালের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে বাংলাদেশ দল। সেখানকার ম্যাচ নিয়ে জামাল বলেন, আমরা আলাদা করে কোনো গোল সেট করিনি। আমরা জিততে এসেছি। দুটি ম্যাচই জিততে চাই। গত শনিবার বিকালে বাবাকে হারিয়েছেন হেমন্ত ভিনসেন্ট। বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন হেমন্ত। যদিও দেশে ফিরছেন না তিনি। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে দলের সঙ্গেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হেমন্তের জন্য হলেও ম্যাচ দুটিতে জিততে চান জানিয়ে জামাল বলেন, হেমন্ত বাবাকে হারিয়েছে। দেশের স্বার্থে ও বাবার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি। এটা কতো বড় ত্যাগ তা বলে বোঝানো যাবে না। আমরা চাই ওর জন্য হলেও ম্যাচ দুটি জিততে।

জাতীয় ফুটবল দলের স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার অধীনে বাংলাদেশ এখনো কোনো ম্যাচে জিততে পারেনি। বাফুফের সঙ্গে ক্যাবরেরার চুক্তি রয়েছে আর দুই মাস। চুক্তি শেষ হওয়ার আগে কম্বোডিয়া ও নেপাল ম্যাচই তার শেষ অ্যাসাইনমেন্ট। চুক্তির আগে শেষ অ্যাসাইনমেন্ট হলেও নিজের ওপর চাপ নিচ্ছেন না স্পেনিশ কোচ। তিনি বলেন, আগে এই দুই ম্যাচ ভালোমতো শেষ করতে চাই। এরপর দেখা যাবে।

বাংলাদেশর চেয়ে কম্বোডিয়া অনেকখানি এগিয়ে থাকলেও তাদের দুর্বলতা খুঁজে নিজেদের ম্যাচ বের করে নিয়ে আসার ব্যাপারে আশাবাদী গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কম্বোডিয়ার আর্মি স্পোর্টস গ্রাউন্ডে অনুশীলন শেষে রানা জানান, কোচের নির্দেশে কম্বোডিয়ার দুর্বলতা ও শক্তিমত্তা বিবেচনায় রেখে নিজেদের তৈরি করছেন তারা। তিনি বলেন, কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা অনুশীলন শেষ করেছি। পরবর্তী ম্যাচে যেহেতু আমাদের প্রতিপক্ষ কম্বোডিয়া, তাই দেশটির দুর্বলতা ও শক্তিমত্তা যা যা আছে সব কিছু বিবেচনায় রেখেই আমরা অনুশীলন করে যাচ্ছি। কম্বোডিয়ার বিপক্ষে সবাই নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলবে বলে আশাবাদী রানা, আলহামলিল্লাহ, সবাই সবার জায়গা থেকে সবটুকু দিয়ে অনুশীলন করে যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ ম্যাচেও সবাই সর্বোচ্চটুকু দিয়ে খেলবে। প্রতিপক্ষ দলের ব্যাপারে পূর্ণ ধারণা নিয়েই ছক কষছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তাদের দুর্বলতা ধরে ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী রানা, কম্বোডিয়া অবশ্যই ভালো দল। কোচ দেশটি সম্পর্কে আমাদের অনেকগুলো ধারণা দিয়েছে। তাদের অ্যাটাকিং খুবই শক্তিশালী। কিন্তু ডিফেন্ডিংয়ে তাদের কিছু দুর্বলতা আছে। এই দুর্বলতা ধরেই আমরা কোচ কাজ করে যাচ্ছে। ম্যাচটি কঠিন হলেও আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

গতকাল কম্বোডিয়ার সঙ্গে আনঅফিসিয়াল ম্যাচ খেলেন জামাল ভূঁইয়ারা। দেশটির রাজধানী নমপেনে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় ক্লোজ ডোর ম্যাচটি। অনানুষ্ঠানিক মোড়কে থাকায় ম্যাচটির ফল ফিফা র‌্যাংকিংয়ে বিবেচিত হয়নি। গতকালের ম্যাচটি ছিল আজকের ফিফা প্রীতি ম্যাচের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার শেষ সুযোগ। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন ভিডিও বার্তায় বলেন, ফিফা থেকে অনুমতি নিয়ে আমরা খেলছি। এটি আনঅফিসিয়াল ম্যাচ। যেহেতু আমরা দেশে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারিনি। তাই এই ম্যাচ খেলেছি। দলের মধ্যে ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা চোট পেয়েছেন। তাকে ছাড়া অন্যদের এই ম্যাচে পরখ করে দেখেন বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। এছাড়া মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্টও ছিল দলের সঙ্গে। তার বাবা মিশেল বিশ্বাস ইহলোক ত্যাগ করলে তার স্মরণে অনুশীলনে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। এদিকে কম্বোডিয়ার কোচ হিসেবে আছেন জাপানের সাবেক তারকা ফুটবলার কিসুকি হোন্ডা। জাপানের জার্সিতে ৯৮টি ম্যাচ খেলে ত্রিশটির বেশি গোল করেছেন এই ফরোয়ার্ড। প্রতিপক্ষ দলের কোচ হলেও হোন্ডা এশিয়ার অন্যতম তারকা ফুটবলার। হোন্ডা জাপানি লিগ ছাড়াও এসি মিলান, সিএসকেএ মস্কোর মতো বড় ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোতে খেলেছেন।

২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও জাপানের হয়ে গোল করেছেন তিনি। বিশ্বকাপে এশিয়ান খেলোয়াড়দের মধ্যে তার গোলই সর্বোচ্চ। বেশি গোল ছাড়াও আরেকটি রেকর্ড রয়েছে তার। টানা তিন বিশ্বকাপে গোল এবং এসিস্ট তিনি ছাড়া অন্য কোনো এশিয়ানের নেই। ২০১৮ সালে খেলোয়াড় থাকাবস্থাতেই হোন্ডা কম্বোডিয়ার দায়িত্ব নেন। গত তিন বছরের বেশি সময় তিনি কম্বোডিয়া দলের সঙ্গে কোচ হিসেবে রয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App