হোসেনপুরে সাহেবেরচর এলাকায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা বাইচ দেখতে এসে নৌকাডুবিতে শিশুসহ ৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থল থেকে ২ কিলোমিটার এলাকায় তল্লাশি চালিয়েও গতকাল বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো সন্ধান মেলেনি।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন-হোসেনপুর উপজেলার তারাপাশা গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে শামীম (৩৫), ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরশাখচুড়া গ্রামের ছমেদ আলীর শিশু পুত্র সিফাত (১৫), একই গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে নিখোঁজ সিফাতের ভাতিজা ইয়াছিন (৫)। পুলিশ ও নিখোঁজদের স্বজনদের বরাতে জানা যায়, নিখোঁজ শামীম ২৫ সেপ্টেম্বর ওমান যাওয়ার কথা ছিল। তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত সোমবার ৫টা ৪৮ মিনিটেও শামীম ফেসবুকে নৌকা বাইচের লাইভ দিচ্ছিলেন। এ সময়ই বলছিলেন তাদের নৌকাটি তলিয়ে যাচ্ছিল। এ ছাড়াও নিখোঁজ হওয়া ইয়াছিনের পিতাও তলিয়ে যাওয়া নৌকায় ছিলেন। তিনি তার ভাগিনাকে নিয়ে সাঁতরে উঠতে পারলেও সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি বলে জেলা নৌ পুলিশের এসআই হরিদাশ জানান।

গত সোমবার উপজেলা সিদলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ব্রহ্মপুত্র নদে শেখ রাসেল নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

বাইচ দেখতে নৌকা ভাড়া করে নদীতে আনন্দ উৎসব করতে থাকেন আগত যাত্রীরা। এ সময় উৎসুক জনতা ও উঠতি বয়সের ছেলেরা নৌকা বাইচের ছবি মোবাইলে ধারণ করতে থাকেন। প্রতিযোগিতার একটি নৌকা ভাড়া করা নৌকাটিকে ধাক্কা দিলে হঠাৎ সেটি ডুবে যায়। এ সময় যাত্রীদের চিৎকারে আশপাশের নৌকা এসে অনেক যাত্রীকে উদ্ধার করে। কেউ কেউ সাঁতার কেটে নদীর পাড়ে উঠতে সক্ষম হয়। এতে অনেকেই আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শিশুসহ ৩ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে স্বজনেরা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কখন পাবেন তাদের দেখা সেই অপেক্ষায় রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজ শামীমের ছেলে শান্ত মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তোমরা আমার বাবাকে ফিরিয়ে দাও। স্ত্রী রিপা আক্তার বলেন, সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল স্বামীকে হারিয়ে আমরা কিভাবে বাঁচব। হোসেনপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান টিটু ৩ জন নিখোঁজ হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. আবুজর গিফারী বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও চার সদস্যের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে।