মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ব্যাখ্যা নেয়নি বাংলাদেশ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৩১ পিএম
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে সেই দেশটির পক্ষ থেকে সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার ব্যাপারে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত সোমবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে মিয়ানমার তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। খবর বিবিসির।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত না নিয়ে মিয়ানমার পরিকল্পিতভাবে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য উস্কানি দিচ্ছে বলে বাংলাদেশ মনে করে।
বাংলাদেশ সেই উস্কানিতে পা না দিয়ে কূটনৈতিকভাবে বিষয়টির সমাধান করতে চাইছে বলে কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিদেশি সব মিশনের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারদের সাথে বৈঠক করে বাংলাদেশের এই অবস্থান তুলে ধরেছেন।
সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টারের গোলা বিস্ফোরণ এবং অব্যাহত উত্তেজনার পটভূমিতে এরই মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চার দফায় তলব করে বাংলাদেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। এর জবাবে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনজুরুল করিম খান চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, মিয়ানমার সরকার সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টার হামলার দায় চাপিয়েছে বিদ্রোহীদল আরাকান আর্মি। সেই সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসার ওপর।
এ বক্তব্যের সমর্থনে মিয়ানমার বলেছে, আরাকান আর্মি এবং আরসা মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের একটি চৌকিতে হামলা চালায় এবং এসময় তিনটি মর্টার শেল বাংলাদেশের মাটিতে গিয়ে পড়ে।
সেই সঙ্গে মিয়ানমার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরকান আর্মি ও আরসার ঘাঁটি থাকার অভিযোগ তুলে সেগুলো তদন্ত করার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে।
[caption id="attachment_369046" align="aligncenter" width="700"] পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়[/caption]ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়: বাংলাদেশ
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব ও অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম বলেন, মিয়ানমারের ব্যাখ্যা ও অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়। আরাকান আর্মি বা আরসা সীমান্তে মর্টার হামলা করেছে বলে তারা (মিয়ানমার) যে ব্যাখ্যা দেয়, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
আমরা তাদেরকে বলেছি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতি। আমরা কাউকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেই না। এটা আপনারা (মিয়ানমারকে) ভারতকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। আমাদের (বাংলাদেশের) ভূমি ব্যবহার করে অন্য কারও বা কোন দেশের ক্ষতি করবে- এটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনও অনুমোদন করেননি এবং কখনও তা করবেন না।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের সীমানায় আরাকান আর্মির বাঙ্কার রয়েছে বলে কিছু জায়গার তথ্য দিয়েছিল। কিন্ত সেগুলো খতিয়ে দেখে কখনই এসব তথ্যের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।