×

জাতীয়

উড়োজাহাজ লিজে ১১শ’ কোটি টাকা দুর্নীতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৫১ পিএম

উড়োজাহাজ লিজে ১১শ’ কোটি টাকা দুর্নীতি

ফাইল ছবি

বিমানের আরো চার কর্মকর্তাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ
মিশর থেকে বোয়িংয়ের দুই উড়োজাহাজ লিজ সংক্রান্ত ১১শ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরো চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তারের সমন্বয়ে একটি টিম। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা হলেনÑ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রিন্সিপাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সাইফুল হক শাহ, এয়ার কনসালটেন্ট গোলাম সারওয়ার, বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) ম্যানেজার সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ। এর আগে গত সোমবার বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ শাখার চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবা শেষে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মিশর থেকে দুটি উড়োজাহাজ লিজ-সংক্রান্ত অনিয়ম খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে লিজ সংক্রান্ত অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে। স্থায়ী কমিটির পাঠানো প্রতিবেদনের আলোকে দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে লিজ চুক্তির ও দরপত্রের স্পেসিফিকেশনে কোনো দুর্বলতা আছে কি না সেটি অনুসন্ধান চলছে। এখন পর্যন্ত বিমানের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মিশর থেকে বোয়িংয়ের দুটি উড়োজাহাজ লিজ সংক্রান্ত ১১শ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয়ে গত ১ জুন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্ব একটি অভিযান পরিচালনা করেছিল। ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার (মিশর) থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর নামে দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কিন্তু বছর না যেতেই ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ওই ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে। এসব প্রক্রিয়ায় ইজিপ্ট এয়ার ও মেরামতকারী কোম্পানিকে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ বিমানের গচ্চা দিতে হয়েছে ১১শ কোটি টাকা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্তে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য। এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সুপারিশ করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এরপরই তা দুদকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়। বিষয়টি দুদকে আসার পর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। ওই টিম গত ২৮ মে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে চিঠি পাঠায়। মাঝে বদলিজনিত কারণে দুদক টিম পুর্নগঠন করা হয়। বর্তমান উপপরিচালক আনোয়ারুল হকের নেতৃত্ব টিম গঠিত হয়। গত ২৪ মার্চ সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মিশরীয় উড়োজাহাজ লিজ নেয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ দুদকের মাধ্যমে তদন্তের জন্য কার্যবিবরণীর অনুমোদন দেয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App