×

খেলা

স্বপ্ন সারথিদের জন্য ট্রফি জিতে বাড়ি ফিরতে চাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:৩১ পিএম

স্বপ্ন সারথিদের জন্য ট্রফি জিতে বাড়ি ফিরতে চাই

সানজিদা আক্তার

ইতিহাস গড়ার হাতছানি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সামনে। আজ (সোমবার) বিকেল সোয়া ৫টায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলার মেয়েরা। এর আগে ২০১৬ সালের আসরে ফাইনালে উঠলেও জয় পায়নি সানজিদা-সাবরিনারা। ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস গড়া গেছে। এবার নেপালের বিপক্ষেও কঠিন মিশনে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

তবে এবার ফাইনালে নামার আগে প্রবল আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রত্যয়ে বলীয়ান পুরো নারী দল। গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচের পর সেমিফাইনালেও সহজ জয়ে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ। এই চার ম্যাচে তারা করেছে ২০টি গোল, বিপরীতে হজম করেনি একটিও।

প্রথমবারের মতো সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সেই সুযোগ কাজে মরিয়া সানজিদারা। সমাজের বঞ্চনা-গঞ্জনা সয়ে যারা তাদের এতদূর এনেছেন, তাদের জন্য আনতে চান শিরোপা।

ম্যাচের আগে ৭ নম্বর জার্সিধারী দলের অন্যতম খেলোয়াড় সানজিদা আক্তার বেশ আবেগঘন এক পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ভেরিফাইড পেইজে ২২ বছর বয়সী সানজিদা লিখেছেন, দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ। প্রথমবার ফাইনালে ২০১৬ সালে ভারতের বিপক্ষে হেরে যাই। পাঁচবার সাফের মঞ্চে এসে একবার রানার্সআপ, তিনবার সেমিফাইনাল ও একবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছি। স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ফাইনাল খেলা সবসময় রোমাঞ্চকর। এবারের ফাইনাল ম্যাচটি কিছুটা ভিন্ন। বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন চ্যাম্পিয়ন। আর সেটি যেন আমরাই হই। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা এবার মাঠে দারুণ ছন্দে রয়েছি, ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। স্বাগতিক হিসেবে ফাইনাল খেলা কিংবা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ফাইনাল খেলা সবসময় রোমাঞ্চকর। এ ছাড়াও এবারের ফাইনাল ম্যাচটি কিছুটা ভিন্ন।

সানজিদা ফেসবুকে বলেন, ‘বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দেশ। আর তাই এবার রোমাঞ্চকর একটি ফাইনাল ম্যাচ হতে যাচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের হাত ধরে ২০০৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশ। এখনও আমরা সেই গল্প শুনি। বাংলাদেশ ফুটবলের বড় সাফল্যের মহাকাব্যে সেটি উজ্জ্বলতম অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এবার আমাদের জেতার সময় এসেছে। আমাদের দলের প্রতিটি সদস্য এটি জিততে মুখিয়ে আছে।’

সানজিদা আরো বলেন, ‘যারা আমাদের এই স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন, সেই সকল স্বপ্ন সারথিদের জন্য এটি আমরা জিততে চাই। নিরঙ্কুশ সমর্থনের প্রতিদান আমরা দিতে চাই। ছাদ খোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। আমাদের এই সাফল্য হয়তো আরও নতুন কিছু সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছু হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।’

নারী দলের এই কর্ণধার বলেন, ‘পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে বাড়ি আমার। পাহাড়ি ভাইবোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, এগারোজনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে।’

আত্মপ্রত্যয়ী সানজিদা বলেন, ‘আমরা জীবন যুদ্ধেই লড়ে অভ্যস্ত। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যাবো। জয় - পরাজয় আল্লাহর হাতে। তবে বিশ্বাস রাখুন, আমরা আমাদের চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখব না ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App