×

জাতীয়

নতুন রিফাইনারি স্থাপনের উদ্যোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:১৭ এএম

৬০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত সক্ষমতার জন্য ডিপো নির্মাণের পরিকল্পনা

জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় অন্য দেশের মতো বাংলাদেশও নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে। সরকার এবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধনের জন্য নতুন রিফাইনারি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি নির্মাণে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে। নতুন রিফাইনারিতে উৎপাদিত জ্বালানি তেল আন্তর্জাতিক মানের অর্থাৎ ইউরো-৫ মানে উন্নীত হবে। একইসঙ্গে ৪৫ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রাখার সক্ষমতা বাড়াতে বড় ধরনের ডিপো নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

জ্বালানি সচিব মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, আমাদের ইস্টার্ন রিফাইনারি ভালোভাবেই কাজ করছে। এই রিফাইনারির ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) পরিশোধনের সক্ষমতা রয়েছে। এতদিন এটা দিয়েই আমাদের কাজ চলত। এই সক্ষমতাকে আমরা দ্বিগুণ করে ৩০ লাখ টনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের ‘পরামর্শক ফার্ম’ কাজ করছে। তারা খুব শিগগিরই আমাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। আমরা আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন রিফাইনারি প্রস্তুত হবে।

সচিব আরো বলেন, জ্বালানি তেলের মজুত বাড়ানোর বিষয়েও আমরা কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে আমাদের ৪৫ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রাখার মতো সক্ষমতা রয়েছে। এই সক্ষমতাকে ৬০ দিনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ৬০ দিনের মজুত বাড়ানোর সক্ষমতা হলে আমরা আরো নিশ্চিন্ত থাকতে পারব।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ৫০ বছরের পুরনো ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড বছরে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল শোধন করে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেনসহ বিভিন্ন রকম জ্বালানি তেল উৎপাদন করতে পারে। বৈশ্বিক জ্বালানি পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চাহিদা ১৫ লাখ টন পর্যাপ্ত নয়। এ কারণে বিপিসির নিজস্ব অর্থায়নে আরো একটি রিফাইনারি স্থাপনের প্রস্তাব সরকারকে দেয়া হয়। এটি স্থাপনে কাজ চলছে। দেশে সব ক্ষেত্রেই জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেড়েছে। হঠাৎ বিশ্ববাজারে দাম ব্যাপকহারে ওঠানামা করে। এই অবস্থায় বেশি মজুত রাখা প্রয়োজন। এ কারণেই কমপক্ষে ৬০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রাখতে ডিপো নির্মাণের জন্য বড় পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে জ্বালানির বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থা কতদিন চলবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না। সব দেশই এখন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত দুই ধরনের জ্বালানি তেলের মজুত বাড়িয়ে চলছে। ভারত দামে কম পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের মজুত গড়ে তুলছে। এ ধরনের পরিকল্পনা থেকে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। নতুন যে রিফাইনারি স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে, এটি হবে ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট।

কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ এখন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। এই দুই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। অন্যদিকে এখন কম দামে ভারত থেকেও জ্বালানি তেল আমদানির অলোচনা চলছে। সুবিধামতো দামে পাওয়া গেলে আমদানি হতেও পারে। তাই বড় ডিপোর প্রয়োজন রয়েছে।

তারা বলেন, কম দামে অপরিশোধিত তেল কেনার প্রস্তাব বাংলাদেশ পেয়েছে। কিন্তু রিফাইনারি সংকটের কারণে এই প্রস্তাবও কাজে লাগানো যাচ্ছে না। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ঘনত্ব বেশি। বাংলাদেশের ইষ্টার্ন রিফাইনারি এই ধরনের তেল পরিশোধন করতে পারে না। সৌদি আরব ও আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের তেল ইস্টার্ন রিফাইনারি থেকে পরিশোধন করা যায়। একটি রিফাইনারির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সরকার আরো একটি রিফাইনারি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই রিফাইনারি প্রস্তুত হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App