×

সম্পাদকীয়

ইসির রোডম্যাপ ঘোষণা : সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৪৬ এএম

ইসির রোডম্যাপ ঘোষণা : সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর হোক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্য নিয়ে গত বুধবার রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোডম্যাপে ১৪টি চ্যালেঞ্জ ও ১৯টি উত্তরণের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপে প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসিটিভি স্থাপন এবং সারাদেশে ৩০০ আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে। বাস্তবভিত্তিক ও সময়ভিত্তিক এ রোডম্যাপ বাস্তবায়ন হলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা তুলে ধরে নির্বাচন কশিমনার মো. আলমগীর জানান, এ কর্মপরিকল্পনায় সবার মতামত রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। যেসব বিষয় কমিশনের আওতায় রয়েছে তা রাখা হয়েছে। রোডম্যাপের চ্যালেঞ্জগুলো ধরে মোকাবিলা করে সব কাজ বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জ। ভোটের এখনো এক বছর চার মাস বাকি। ইসি নিয়ে আস্থাহীনতায় থাকলেও আগামীতে তাদের কর্মকাণ্ডে আস্থাশীল করে তুলতে হবে। ইভিএমের বিষয়টি সামনে আসছে বারবার। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণে রাজনৈতিক দলগুলো ও ভোটারদের আস্থা অর্জন করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং শুধু সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট আইনের অধীনে তা পালন করতে হবে। সাংবিধানিক এই গুরুদায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নির্বাচন ব্যবস্থাপনার প্রতিটি অনুষঙ্গের কার্যকারিতা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করে চিহ্নিত বাধাগুলো অপসারণ কমিশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ভোটগ্রহণও করা হয়েছে। কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কোথাও বিতর্ক হয়েছে। তবে বিদ্যমান ইভিএমে এখন পর্যন্ত ভোট কারচুপির বড় ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতিসহ ভোটারদের ভোগান্তির অনেক অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নেয়া কেন্দ্রগুলোতে ধীরগতি দেখা গেছে। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে- বয়স্ক, বিশেষ করে নারী ভোটারদের আঙুলের ছাপ না মেলা। এ জন্য ভোটই দিতে পারেননি অনেকে। অবশ্য মেশিন ব্যবহারে ভোটারদের অনভ্যস্ততার কারণেও ভোট পড়ার গতি কমতে দেখা গেছে। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও পৌরসভার ভোটেও ব্যালটের চেয়ে ইভিএমে ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত কম ভোট পড়েছে। এমন অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক ভোটারের ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে একদিকে যেমন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মতৎরপতা, তেমনি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকে তাদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। আগামী নির্বাচনের ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার করা হলে তা যে ত্রæটিপূর্ণ নয়, ভোটারদের মধ্যে সেই বিশ্বাস জন্মানোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আমরা দিন দিন প্রযুক্তির শিকলে বন্দি হচ্ছি, সেই হিসেবে এই প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি ভোটারদেরও এক্ষেত্রে দায়িত্ব রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App