×

জাতীয়

সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:৪৬ পিএম

সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি

মিরপুরে বিএনপির বিক্ষোভ। ছবি: ভোরের কাগজ।

মাঝ পথ থেকে ফিরে গেলেন মোশাররফ

জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদে অনুমতি নিয়ে ৩ বার জায়গা পরিবতন করেও পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। শেষে মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান ও আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি সংক্ষিপ্ত মিছিল করে দলটি।

মিরপুর ৬ নাম্বার মুকুল ফোজ মাঠে ট্রাক দিয়ে বসানো হয় মঞ্চ। অনুষ্ঠনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। সমাবেশে আসার জন্য তিনি রওনা হয়েছিলেন তবে সংঘষের খরব পেয়ে পরিস্থিতি খারাপ বুঝতে পেরে পথিমধ্যে তিনি ফিরে যান।

বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অনুসারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত হামলায় তারা সমাবেশ করতে পারেননি। পাল্টা অভিযোগ এনে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের র‌্যালিতে হামলা করে এবং পরে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর মিরপুর অঞ্চলে সমাবেশ করার কথা ছিল বিএনপির। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন বাজারের পশ্চিম পাশে মুকুল ফৌজ মাঠ এলাকায় অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা থাকলেও একে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে দলটির সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনুসারীরা সমাবেশস্থলে মহড়া দেয় এবং সমাবেশ করতে দেয়নি। যদিও পুলিশের দাবি বিএনপি সমাবেশ করেছে। যদিও কোনও সমাবেশ হয়নি। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সংঘর্ষের পর ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান অভিযোগ করেছেন, পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মুকুল ফৌজ মাঠের পাশে পুলিশের সাথে কথা শেষ করে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই জোনের ডিসির সাথে আমি কথা বলেছি। তিনি আজ দুপুরে অনুমতি দিয়েছেন। যখন আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসতেছে, তখনই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বিএনপি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যখন পিছু হটে ঠিক সেই সময় পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ নেয়।

আমানুল্লাহ আমান বলেন, পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীরা যেদিক থেকে আসছে সেদিকেই টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। এতে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমার ডিসিকে আগেই বলেছি- আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবো।’ মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ‘বিএনপি এখানে কোনও হামলা করেনি। পরিকল্পিতভাবে পুলিশের সহযোগিতায় সরকার দলের নেতাকর্মীরা বিএনপির ওপর হামলা চালিয়েছে।

বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিরপুর ৬ নম্বর এলাকায় বিএনপি'র একটি সমাবেশ চলছিল। তার পাশ দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি র্যালি যাচ্ছিল। এ সময় নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের সেই র‌্যালিতে হামলা চালায়। পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।’তবে কতজন সদস্য আহত হয়েছে, তা অবশ্য পুলিশ জানাতে পারেনি।

কারা এ ধরনের হামলার সাথে জড়িত সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, বিএনপির নির্ধারিত সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও সমাবেশ না হওয়ায় তিনি ঘটনাস্থলে যাননি। তিনি জানান, পুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় দফতর থেকে এ বিষয়ে জানানো হতে পারে।

জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আবদুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের পর ঢাকার ১৬টি স্পটে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App