সাতচল্লিশের দেশভাগের পটভূমিতে তৎকালীন জনমানুষের বিস্তৃত জীবন আখ্যান প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ও গল্পকার আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বিখ্যাত উপন্যাস খোয়াবনামা। এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে সময়ের জীবন ও বাস্তবতাকে ঔপন্যাসিক তুলে ধরেছেন নিপুণ হাতে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হয় খোয়াবনামা। প্রাচ্যনাটের ৩৭তম এই প্রযোজনাটির নাট্যরূপ দিয়েছেন মো. শওকত হোসেন সজীব। নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন।

[caption id="attachment_368497" align="aligncenter" width="700"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

নাটকের গল্পে দেখা যায়, কাৎলাহার বিলের ধারে ঘন জঙ্গল সাফ করে বাঘের ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে আবাদ শুরু করার দিনের এক বিকেলবেলায়, মজনু শাহর অগুনতি ফকিরের সঙ্গে মহাস্থানগড়ের দিকে যাওয়ার সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেপাই সর্দার টেলারের গুলিতে মারা পড়ে মুনসি বয়তুল্লাহ শাহ। কাৎলাহার বিলের দুই ধারের গিড়িডাঙা ও নিজগিড়িডাঙার মানুষ সবাই জানে, বিলের উত্তরে পাকুড়গাছে আসন নিয়ে রাতভর বিল শাসন করে মুনশি। দূরে কোথাও ভূমিকম্প হলে যমুনা বদলে যায়। বন্যায় ভেঙে পড়ে কাৎলাহারের তীর। মুনশির নিষ্কণ্টক অসিয়তে চাষিরা হয় কাৎলাহার বিলের মাঝি।

সময়ের আবর্তনে বিলের মালিকানা চলে যায় জমিদারের হাতে। মুনশির শ্নোকে শ্নোকে মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বেড়ায় চেরাগ আলি ফকির। তমিজের বাপ শ্নোক শোনে আর ঘুমের মধ্যে বিলে গিয়ে কাদায় পা ডুবিয়ে দেখতে চায় পাকুড়গাছের মুনশিকে। ভবানী পাঠকের সঙ্গে পূর্বপুরুষের জের টেনে বৈকুণ্ঠনাথ গিরি প্রতীক্ষা করে ভবানীর শুভ আবির্ভাবের। তমিজ দেখে জমির স্বপ্ন। আর চেরাগ আলির নাতনি কুলসুম খোয়াবে কার কায়া যে দেখতে চায়, তার দিশা পায় না। তেভাগার কবি কেরামত শেষ পর্যন্ত আটকে পড়ে শুধুই নিজের কোটরে। সে নাম চায়, বউ চায়, ঘর চায়। কোম্পানির ওয়ারিশ ব্রিটিশের ডাণ্ডা উঠে আসে দেশি সাহেবদের হাতে। এভাবে এগিয়ে যায় নাটকের গল্প।

খোয়াবনামায় অভিনয় করেছেন সানজিদা প্রীতি, সাখাওয়াত হোসেন রিজভী, মনিরুল ইসলাম রুবেল, চেতনা রহমান ভাষা, শশাংক সাহা, মো. সোহেল রানা, মিতুল রহমান, মো. সোহেল রানা, তানজি কুন, সাইদুর রহমান শাহীন, শ্রাবণ শামীম প্রমুখ। গানের সুর করেছেন রাহুল আনন্দ, সঙ্গীতে নীল কামরুল, কোরিওগ্রাফিতে ছিলেন স্নাতা শাহরিন, মঞ্চ সজ্জায় ছিলেন এবি এস জেম, আলোক ভাবনায় ছিলেন করেছেন ঠাণ্ডু রায়হান।