স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হলেও তাদেরকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ফেরত পাঠাতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ঝরে পড়া ব্যক্তিদের স্বাবলম্বী করার প্রয়াস নিয়ে নবজাগরণ-অপরাধকে না বলুন শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের লং বিচ হোটেলে প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অপরাধ প্রবণতা ঠেকাতে ঝুঁকিতে থাকা ৩৬ জন যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদানের সমাপনী উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। অপরাধকে না বলুন' স্লোগানকে সামনে রেখে 'নবজাগরণ' শীর্ষক র‌্যাবের এ কর্মসূচীর আওতায় পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধ ঝুঁকিতে থাকা লোকদের চিহ্নিত করে সুন্দর, স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য উৎসাহিত করা হবে।

[caption id="attachment_368467" align="aligncenter" width="700"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে আমরা অনেক সমস্যা ফেস করছি, তাদেরকে মিয়ানমার ফেরত নিতে চাচ্ছেনা। তবে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। যাতে তারা শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যেতে পারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের জায়গা ছোট, লোকজন এতো বেশি। তার উপর আমরা মিয়ানমার দ্বারা আক্রান্ত। আপনারা দেখেছেন সেখানে নাগরিকদের গুলি করে মারা হয়েছে, বিতাড়িত করা হলো। আপনারা দেখেছেন নাফ নদী রক্তে রঞ্জিত হয়েছে, সেখানে ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সে সময় অনেকেই বলেছেন আমরা তাদেরকে আটকে দেই।

তবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, তোমাদের মনে নেই মুক্তিযুদ্ধের সময় কোটি কোটি বাঙালি শুধু প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো। তাই আমরা রোহিঙ্গাদের জীবনটা রক্ষার সুযোগটা দিতে চাই। তখন বিজিবিকে সরে দাঁড়াতে বলা হলো, রোহিঙ্গারা এসে আশ্রয় নিল।

র‍্যাবের নবজাগরণ কর্মসূচী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে সমস্ত এলাকা নাজুক, জনসংখ্যা অতিরিক্ত ও কর্মসংস্থান কম। সেখানে মানুষগুলোকে টার্গেট করেছেন র‍্যাব। তারা অপরাধে জড়িয়ে যেতে পারে, সেজন্য তাদেরকে আলোর পথ দেখাচ্ছে তারা। এটা নিঃসন্দেহে একটা সাহসী উদ্যোগ। সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো আলোকিত বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে একসঙ্গে বেঁচে থাকবে এটা আমরা চাই।

র‍্যাব জনগণের আস্থার প্রতীক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গি দমনসহ যে কোনো অপরাধ দমনে, এমনকি ভেজাল নিয়ন্ত্রণে র‍্যাবের উপস্থিতি রয়েছে। যে কোনো পর্যায়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে জিরো লটারেন্স নীতি রয়েছে আমাদের। আমরা বনদস্যু-জলদস্যুমুক্ত হয়েছি, জঙ্গিদমন করেছি।

জঙ্গি দমনই নয়, আমরা জঙ্গিদের ধরেছি ও পুনর্বাসন করেছি। আমরা দেখেছি মা-ছেলেকে আত্মসমর্পণ করিয়েছেন। র‍্যাব আসলে সেই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে। তারা যে কাজটি করছে সেটি অন্যায়, এই মেসেজটা দিতে ফোর্স প্রয়োগ করতে হয়নি। আলোর মেসেজ দিতে এটি ব্যতিক্রম কৌশল হিসেবে কাজ করছে।

পুলিশ-র‌্যাবের যৌথ প্রচেষ্টায় জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমন, মাদক নিয়ন্ত্রণের ফলে দেশের অগ্রগতি দুর্বার গতিতে চলছে। আমরা যদি এগুলো বন্ধ না করতে না পারতাম তাহলে বাংলাদেশ আলোকোজ্জল জায়গায় যেতে পারতোনা।