×

সারাদেশ

সার সংকটে দিশেহারা কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৪৩ পিএম

সার সংকটে দিশেহারা কৃষক

ছবি: সংগৃহীত

আমন মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্ন সারের সংকট দেখা দিয়েছে নেত্রকোনার মদন উপজেলায়। সময় মতো জমিতে সার দিতে না পারায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তবে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চড়া দামে বিক্রি করে অধিক মুনাফা লুটের অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। এদিকে সার সংকটের কারণে আমন চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পৌরসভাসহ উপজেলার আট ইউনিয়নে নয় হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারণ করা লক্ষমাত্রা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এক হাজার ৬১০ মেট্রিকটন সারের জন্য চাহিদা পত্র প্রেরণ করেন কৃষি অফিস। মদন উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে সার বরাদ্দ দেয়া হয় ৭শ ৩৩ মেট্রিকটন। একদিকে চাহিদা অনুয়ায়ী সারের বরাদ্দ কম দেয়া অপর দিকে বর্ষার পানি দ্রুত সরে যাওয়ায় লক্ষমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। এতে উপজেলায় বাজারে সারের সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে পৌরসভাসহ উপজেলায় বিসিআইসির নয় জন ডিলার ও ৬৮ জন খুচরা সার বিক্রেতা রয়েছেন। সংকটের কারণে ডিলাররা কোনো রকম রশিদ ছাড়াই কৃষকদের কাছে বেশী দামে সার বিক্রি করছেন। এমওপি ৭৫০ মধ্যে ১০০০ টাকা, ইউরিয়া ১১০০ টাকার মধ্যে ১২০০-১৩০০টাকা, ডিএপি ৮০০ টাকার মধ্যে ৯০০টাকা করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চারা চড়াদামে ধানের কিনে জমি রোপনের পর এবার চড়া অধিকদামে সার কিনে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এভাবে চড়ামূল্যে সার কিনতে হলে লাভের তুলনায় এ বছর আমন চাষে লোকসানে পড়তে হবে কৃষকদের।

রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার ফতেপুর ও তিয়শ্রী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোনো খুচরা ব্যবসায়ীর দোকানে সার নেই। সার কিনতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে কৃষক। বালালী গ্রামের কৃষক রেজন মিয়া, আদম আলী জানান, আমি বালালী বাজারের ডিলারসহ খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানে এসেও সার পাচ্ছি না। জানিনা কবে লাগাত সার পাব।

বাঘমারা গ্রামের কামরুল জানান, বৃহস্পতিবার ডিলার মাজহারুলের নিকট থেকে কোন রকম রশিদ ছাড়াই বেশী মূল্য সার কিনেছি। কৃষি অফিসের লোকজনের উপস্থিতিতেই ইউরিয়া, এমওপি, ডিএপির তিন বস্তা সার ৩ হাজার টাকায় নিয়েছি।

বালালী বাজারের খুচরা সার বিক্রেতা আপেল মাহমুদ ও ফতেপুর মুতিয়াখালী বাজারের আজহারুল জানান, আমরা ইউরিয়া সার ১০দিন যাবত পাচ্ছি না। বর্তমানে কৃষকরা প্রতিদিন সার নিতে আসলেও দিতে পারছিনা। বিষয়টি নিয়ে বার বার ডিলার ও কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

তিয়শ্রী ইউনিয়নের ডিলার মাজহারুল ইসলাম জানান, আমার চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় সারের সামন্য সংকট দেখা দিয়েছে। অফিসের সাথে কথা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে সার চলে আসলে কোন সংকট থাকবে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষকরা যাতে সার সংকটে না পড়ে আমি নিজেই মাঠে কাজ করছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে সার এসে পৌঁছে যাবে।

সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম লুৎফর রহমান জানান, সারের যাতে সংকট না হয় এই বিষয়টি নিয়ে ডিলারদের সাথে মিটিং করেছি। একটি কু-চক্রী মহল বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য নানা ভাবে সার সংকট সৃষ্টির পায়তারা করছে। বেশি দামে সার বিক্রির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App