×

মুক্তচিন্তা

বিশ্বকাপের আগে দল পুনর্গঠন করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:২৮ এএম

দুয়ারে কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২। শক্তিশালী এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পর্দা উঠবে এই জমজমাট আসরের। ক্রীড়াপ্রেমীরা বিশ্বকাপের উন্মাদনায় এখন থেকেই বুঁদ হয়ে আছে। বিশ্বকাপের ক্ষণগণনা শুরু করে দিয়েছে বেশ আগে থেকেই। অপেক্ষার দীর্ঘ প্রহর অতিক্রম করার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে ভক্ত সমর্থকরা। ভাবনায় যখন টি-টোয়েন্টির মতো জমজমাট আসরের কথা- প্রশ্ন তখন দলগত পারফরম্যান্স নিয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডেতে যতটা দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দিচ্ছে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ও একের পর এক গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। আশার প্রদীপ ততটাই নিভু নিভু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বেলায়। এখনো বেশ অপরিপক্ব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। প্রতিপক্ষের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ রীতিমতো লজ্জা এড়াতে পারে না। অনিয়ন্ত্রিত বোলিং, ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামা আমাদের মূল হতাশায় ভোগার কারণ। ডেভ ওভারে দলের কাণ্ডারি হয়ে ওঠার মতো কেউ নেই। শেষটা রাঙিয়ে নেয়ার মতো ভরসার প্রতীক হয়ে কেউ আসে না। একের পর এক সিরিজ হার আমাদের দুর্বল চিত্রের বহিঃপ্রকাশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শিরদাঁড়া উঁচু করে দাঁড়াতে গিয়ে বারবার দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে পড়ে। চলমান এশিয়া কাপে কী নির্মম বিদায়! জয়ের সুন্দর স্বপ্ন বুনে শেষ মুহূর্তে সব কিছু ধূলিসাৎ করে দেয়া, পাঠকের চোখে যেন ঘন বৃষ্টি বর্ষণ। সর্বশেষ বিশ্বকাপের স্মৃতি মানেই দুঃস্মৃতি। কেউ মনে রাখতে চাইবে না বরং শত চেষ্টা করে হলেও সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলতে চাইবে। কিন্তু গত বিশ্বকাপের স্মৃতিগুলো এখনো আমাদের তাড়া করে বেড়ায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর একটা টি-টোয়েন্টি সিরিজও কি আশানুরূপ ফল ছিল? কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ কি আমাদের অনুকূলে ছিল? প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে বাজি ধরবে এমন লোকের সংখ্যা নিতান্তই তুচ্ছ। হতাশার ছাপে আশার পারদ একদম নিচের সারিতে। তবু জীবনে সফল হতে হলে, চ্যালেঞ্জ নিতে চাইলে, ঘুরে দাঁড়ানো বড্ড প্রয়োজন। পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে এবং সেই জায়গায় পারদর্শী হতে হবে। প্রত্যেকটা পজিশনে সেরা পারফরমার তৈরি করা, সেই সঙ্গে শক্তিশালী ব্যাক আপ রাখা বেশ জরুরি। কারণ ব্যাক আপ নেই বলে ফর্মহীন কাউকে দলে রাখা হতাশা ছাড়া আর কিছু নয়, ম্যাচের কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে এই ব্যাপারটা। ক্রিকেট দলগত খেলা তাই দলের প্রত্যেকে যার যার ভূমিকা পালন করলে, নিজেকে উজাড় করে দিলে তবেই ধরা দেবে সাফল্য। কেটে যাবে সমস্ত আঁধার, ঘুচে যাবে দীর্ঘমেয়াদি খরা। একটা দলের প্রাণ হতে পারে তরুণ খেলোয়াড়। কোচের গোপন অস্ত্র, তুরুপের তাস কিংবা ট্রাম কার্ড হতে পারে তরুণরাই। তাই তরুণদের দিকে সুনজর দিতে হবে। সদ্য জিম্বাবুয়ে সফরে দেখা গেছে ইতিবাচক প্রভাব। পুরাতন খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নতুনদের ওপর আস্থা রেখেছেন। বিশ্বকাপের আগে এই ঝুঁকি নেয়া খুব দরকার ছিল। অভিজ্ঞদের প্রমাণ করার কিছু নেই কিন্তু নতুনদের প্রমাণ করেই দলে জায়গা পাকা করতে হবে। তরুণদের প্রস্তুত করার জন্য এই সফর দারুণ সুযোগ। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ভরপুর থাকা খেলোয়াড়রা অনুপ্রেরণা ও ঘুরিয়ে দেয় ম্যাচের মোড়। দলের কিছু কিছু জায়গায় সুনজর এবং উন্নতি করা অনেক জরুরি। একটা শক্তিশালী ওপেনিং জুটি নিশ্চিত করা যারা ভয় ভীতি ছাড়া বিধ্বংসী বোলারদের মোকাবিলা করতে পারবে। ওয়ান ডাউন এবং মিডল অর্ডার প্রস্তুত করা বেশ জরুরি। তাদের ওপর অনেকাংশে ম্যাচ নির্ভর করে, তারা ম্যাচে রানের চাকা সচল রাখতে পারে। একজন পরিপূর্ণ ফিনিশার খুব দরকার আমাদের যা হাড়ে হাড়ে টের পাই। বোলিং-এ পেস স্পিন কম্বিনেশনটা আরো দৃঢ় করতে হবে। সর্বোপরি বিশ্বকাপের আগে তরুণ এবং অভিজ্ঞদের নিয়ে দল পুনর্গঠনের বিকল্প নেই।

জুবায়েদ মোস্তফা : শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App