×

মুক্তচিন্তা

স্বাধীনতার নামে অশালীনতা নয়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:৪৩ এএম

গত ১৮ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী পোশাকের কারণে রেল স্টেশনে কটূক্তি ও মারধরের শিকার হন। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তরুণীকে হেনস্থা ও মারধরের ঘটনায় নরসিংদীর পুলিশ ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন এবং অভিযুক্ত মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলাকে ৩০ মে গ্রেপ্তার করেন। কিন্তু শিলার জামিন আবেদনের শুনানিতে আদালত থেকে জানতে চাওয়া হয় সভ্য দেশে এমন পোশাক পরে রেলওয়ে যাওয়া যায় কিনা। আদালত বোঝাতে চেয়েছেন মুসলিম দেশ হিসেবে নয়, বাঙালি সংস্কৃতিতেও অশালীনতার সুযোগ নেই। কিন্তু সর্বত্র তরুণী হেনস্তার ঘটনায় আদালতের মন্তব্য প্রকাশের পর উত্তাল হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সংবাদ মাধ্যমগুলো। নারী পোশাক প্রসঙ্গে উচ্চ আদালতের শালীন পোশাককে সমর্থন করে মানববন্ধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। মানববন্ধনের দুটি ব্যানার ছিল, ‘ছোট পোশাক পরে বিপরীত লিঙ্গকে সিডিউস করা বন্ধ করুন’ এবং ‘ছোট পোশাক নারীকে বিজ্ঞানী বানায় না পণ্য বানায়।’ তখন মানববন্ধনকারীদের বক্তব্য ছিল, ‘স্বাধীনতার নামে পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুসরণ করা খুবই উদ্বেগজনক’। আদালতের এই সিদ্ধান্ত বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলার সহায়ক। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামকরা বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় মানববন্ধন করে আদালতের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায়। কিন্তু সর্বত্র এ মানববন্ধন কর্মসূচি প্রকাশের পর বিক্ষোভ প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু শিক্ষার্থী। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই যেমন সাধুবাদ জানিয়েছেন, তেমনি ফুঁসে উঠেছে এর বিরোধিতাকারী গোষ্ঠী। তারা আদালতের সিদ্ধান্তকে নারীদের জন্য অবমাননাকর বলেছেন। আবার অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে নারীবিদ্বেষী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাই পোশাক বিতর্কে এখনো উত্তাল রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া, চলছে তর্ক-বিতর্ক। বাঙালি সংস্কৃতি সভ্য ও শালীন। বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে পশ্চিমা সংস্কৃতির মিল নেই। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি যেখানে মহামারির মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীর অবশ্যই যে কোনো শালীন পোশাক পরার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অশালীনতা বা পশ্চিমা অপসংস্কৃতি কখনো বাঙালি সংস্কৃতিতে পোশাক স্বাধীনতার নামে আবির্ভূত হতে পারে না। পোশাক নারী হেনস্তার একমাত্র কারণ নয়। এর জন্য দায়ী পুরুষের বিকৃত বা অসুস্থ মস্তিষ্ক। আরো দায়ী পশ্চিমা ভোগবাদী দর্শনের প্রভাব নারীকে যেখানে ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখানো হয়। পুরুষের আত্মসংযমের অভাব অন্যতম কারণ। তাই বাঙালি সংস্কৃতিতে অটুট থেকে বিদেশি অপসংস্কৃতি পরিহার করতে হবে। ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির সহায়ক কারণ হিসেবে খাটো পোশাককে বর্জন করতে হবে। বাঙালি মেয়েদের শালীন যে কোনো পোশাকে চলাফেরার অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে। অশালীনতার অপর নাম পোশাক স্বাধীনতা হতে পারে না। আফিয়া সুলতানা একা শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App