×

জাতীয়

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি, জোড়া মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২৭ পিএম

ক্যান্টিনে খাবার খেয়ে টাকা না দেয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ সাউথ ও নর্থ ব্লগের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ প্রশাসন। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিউমার্কেট থানা নিশ্চিত করেছে।

রবিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এস কে মাহবুব আলম শাহিনকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি কলেজের ক্যাফেটেরিয়াটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইউসুফ বলেন, গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এস কে মাহবুব আলম শাহিনকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও যেই ক্যান্টিনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছে সেটিকে আগামী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কলেজের আটটি হলের হাউজ টিউটর ও তত্ত্বাবধায়কদের নিয়ে আগামীকাল (সোমবার) বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে আরেকটি মিটিং আহ্বান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গতকাল রাতে কলেজ ক্যাম্পাসে গোলাগুলির ঘটনাটি সত্য নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউসুফ আরও বলেন, কালকে ল্যাবরেটরি স্কুলের ল্যাবরেটরি ডে উদযাপন করার সময় আতশবাজি ফোটানো হয়। সেটিকে গোলাগুলির শব্দ বলে অনেকেই ধরে নেয়। তবে দুগ্রপের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এদিকে এই সংঘর্ষের ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় পাল্টাপাল্টি জোড়া মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাত তিনটায় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষ ও সাউথ ব্লকের আবাসিক শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন (২২) বাদী হয়ে নর্থ হলের শাহরিয়া হাসনাত জিয়নসহ ১২ জন ও অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে আসামি করে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন।

অন্যদিকে নর্থ হলের শাহরিয়া হাসনাত জিয়ন সাতজন ও ৪৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন। বিষয়টি ভোরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হালদার অর্পিত ঠাকুর।

নাসির উদ্দিনের মামলায় আসামি করা হয়, শাহরিয়া হাসনাত জিয়ন (২৫), ইংরেজি বিভাগের রফিকুল ইসলাম বাবু (২৫), তানিম (২৭) ও জনি হাসান (৩১), ইতিহাসের হেলাল (২৪), ভূগোলের মাসুম (২৮), অর্থনীতি বিভাগের শফিক (২৮), ইসলামের ইতিহাসের ইকরাম (২৮), রসায়নের দ্বীন মুহাম্মদ (২২), রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মমিন আদনান সূর্য (২৮), বাংলা বিভাগের আতিকুজ্জামান রানা (২৯), নর্থ হলের ১৪৪ নং রুমের তিতাস (৩০) এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে।

মামলার এজাহারে নাসির উল্লেখ করেন, গত ১ সেপ্টেম্বর ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খাওয়ার সময় শাহরিয়া হাসনাত জিয়নের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ টাকা না দিয়ে ক্যাফেটেরিয়ায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে এবং ক্যাফেটেরিয়ায় তালা দিয়ে চলে যায়। তাৎক্ষণিক আমিসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে জিলান আমাকে যেখানে পাবে সেখানে দেখে নিবে বলে হুমকি প্রদান করে। একই দিন রাত ১১টার সময়ে আমি মুরগি পট্টির দক্ষিণ পাশের দোকানে চা পান করতে গেলে জিলানসহ ১৫-২০ জন এসে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার কপালের বাম পাশে চোখের ওপর রামদা এবং কাঠের স্টাম্প দিয়ে বাম পায়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।

আরও উল্লেখ করেন, ৩ সেপ্টেম্বর সাড়ে আটটার সময় আমার সহপাঠী আল আমিনকে (২২) ২ নম্বর গেট দিয়ে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করার সময় রিডিং রুমের সামনে রাস্তার ওপর আগে থেকেই অবস্থান করা জনি হাসান ও তানিমের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জন মিলে হাতে থাকা লোহার রড, স্টিলের পাইপ, হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন জখম করে। তার ব্যবহৃত হুয়াওয়ে স্মার্ট মোবাইল ফোন যার আনুমানিক মূল্য ২৭ হাজার টাকা এবং মানিব্যাগে থাকা আড়াই হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে নেয়। ৯টার সময়ে কলেজ দক্ষিণ গেটের পাশে চায়ের দোকানের সামনে হেলাল, জনি হাসান, ইকরাম, তিতাস ও অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জন মিলে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত আক্রমণ করে মাহবুব ইসলাম (২৪), অন্তু মজুমদার (২০), শাকিল আহমেদ (২৩) এবং হাবিবুল্লাহকে (২২) গুরুতর মারধর করে আহত করে। তাঁদের চোখ ও শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে।

এ বিষয়ে হালদার অর্পিত ঠাকুর বলেন, ঢাকা কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আইন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App