×

জাতীয়

গুলি চালানোর পরিণতি হবে ভয়াবহ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৪২ পিএম

নিরপেক্ষ নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালানোর ফল ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে সরকারের পরিণতি হবে ভয়াবহ।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালিতে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী শাওন হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। সভা পচিালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।

দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বিএনপি অফিসের আমনে আসতে থাকে। আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর আগেই ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে যায় সমবেশটি। বেলা ১২টার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে তারা সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যায় করলে যে শাস্তি পেতে হয় বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। যুবদল নেতা শাওনসহ বিএনপি নেতাকর্মী হত্যার বিচার হবে। দেশের জনগণ একদিন প্রধানমন্ত্রীসহ এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত পুলিশেরও বিচারের ব্যবস্থা করবে।

[caption id="attachment_365617" align="alignnone" width="1280"] শনিবার পল্টনে ঢাকা মহানগর বিএনপির সমাবেশে সাধারণ জনতা ও দলীয় নেতাকর্মীদের ভীড়। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশে গণতন্ত্র ,বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনিক কাঠানো ও অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। মিডিয়াকেও নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। এবারও একই পথে হাঁটছে। আবারো নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা ও হামলা করা হচ্ছে। পুলিশকে দিয়ে গুলি করিয়ে বিএনপিকে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, এবার দেশের মানুষ কোন টালবাহানা মেনে নেবে না। শুধুমাত্র দেশের মানুষ নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকার এখন চাপে আছে। তার প্রমাণ মিলেছে কয়েকদিন আগে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেটর বক্তব্যে। দেশে গুম ও বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে উল্লেখ করে মিশেলের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাবে বিশেষ একটি বার্তা বহন করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সবক্ষেত্রে মিথ্যাচার অব্যাহত রাখলেও তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে প্রমাণ মেলে তারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছে। নারায়নগঞ্জে শান্তিপূর্ন কর্মসূচিতে হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সচিত্র প্রতিবেদনে প্রমাণ মিলেছে যে শাওনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়েরের কঠোর প্রতিবাদ জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরাও মামলা করবো। মামলায় কিছু হয় কিনা তা এখন পুলিশ প্রধান ভালোভাবে বুঝতে পারছেন। শর্তসাপেক্ষে পুলিশ প্রধানের জাতিসংঘের সমাবেশে যোগ দেয়া লজ্জার বলেও অভিযোগ মির্জা ফখরুলের। তিনি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানান। এছাড়া তিনি দলের নেতাকর্মীদের মাঠে থেকে প্রতিরোধের আহবান জানান।

সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে বিএনপি। এই চেষ্টায় তিনি দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষকে রাজপথে নেমে আসার আহবান জানান।

স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন- কোনভাবে আর বর্তমান সরকার ছাড়া দেয়া হবে না। তাদেরকে আর বিনাভোটে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App