×

জাতীয়

ঢাবিতে হয়রানি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২২, ০৩:১৮ পিএম

ঢাবিতে হয়রানি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি

ঢাবির রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে হয়রানি বন্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: ভোরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে (প্রশাসনিক ভবন) প্রশাসনিক জটিলতায় সৃষ্ট নানা রকম হয়রানি বন্ধ ও সকল কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার দাবিসহ আট দফা দাবিতে একক অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।

অবস্থান কর্মসূচি পালন করা ওই শিক্ষার্থীর নাম হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন হাসনাত। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী তার সঙ্গে যুক্ত হন।

পরে দুপুরে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন হাসনাত। এসময় উপাচার্য তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।

লিখিত বক্তব্যে হাসনাত জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গত বছরই তার গৌরবময় শতবর্ষ পূর্ণ করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ১০১তম বছরে এসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক জটিলতাজনিত হয়রানি কমেনি। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, হল অফিস ও বিভাগীয় অফিসের মধ্যে কাজের সমন্বয়হীনতার প্রবল অভিযোগ রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সবক্ষেত্রে ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশনেত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এখনো অ্যানালগ পদ্ধতির ধুলো মলিন ফাইল-পত্রের ভারে ন্যুব্জ।

তিনি আরও বলেন, তাদের কাজে দীর্ঘসূত্রিতাও আছে। কাজের ব্যাপারে তাদের অলসতা এবং দায়মুক্তির খবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লাঞ্চের পর আসুন সুলভ’ আচরণ হিসেবে সর্বজনবিদিত। এছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস সময়ে নির্বাচনী প্রচারণাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। অনেকে অফিস সময়ে নিজস্ব ব্যবসায়ও সময় দেন।

হাসনাত বলেন, এটা খুবই খারাপ বিষয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের আচরণ মনিব-গোলাম পর্যায়ের। এমতাবস্থায় আমরা মনে করি যে ডিজিটাল বাংলাদেশের সারথী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হতে উপরোল্লিখিত সমস্যাগুলো নিরসন হওয়া প্রয়োজন।

হাসনাতের আটদফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

শিক্ষার্থীদের হয়রানি নিরসনের জন্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অভিযোগ সেল গঠন করা। যেখানে সেবাগ্রহীতারা সুনির্দিষ্ট প্রমাণাদির ভিত্তিতে অভিযোগ জানাতে পারেন। একই সঙ্গে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম অনতিবিলম্বে ডিজিটাইজড করা।

এ ছাড়া নিরাপত্তা ও হারিয়ে যাওয়া কাগজপত্র তদন্তের স্বার্থে অফিস সমূহের অভ্যন্তরে প্রতিটি রুমে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। প্রশাসনিক ভবনে অফিস সমূহের প্রবেশদ্বারে ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন, ডিসপ্লেতে অফিস সমূহের নাম, কক্ষ নম্বর ও সেখানে প্রদত্ত সেবার বিবরণী, কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম ও ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি প্রদর্শন করা।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা। প্রশাসনিক ভবনের ক্যান্টিনেরও সংস্কার করা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আধুনিক সাচিবিক-বিদ্যা, পেশাদারিত্ব, মানুষিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণ আইন করে বাধ্যতমূলক করা। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত মানসিক সেবা প্রদানকারী বিভাগ ও সেন্টারসমূহের শরণাপন্ন হওয়ার দাবি তার।

অফিস চলাকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কাজেই লিপ্ত থাকতে না পারা। সে নিরিখে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন অফিস বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ক্লাবসমূহে স্থানান্তর নিশ্চিত করা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনকালীন প্রচারণা পরিবেশবান্ধব করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখতে, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হানিকর ও পরিবেশ বিপর্যয়কারী অপ্রয়োজনীয় পোস্টার লিফলেট ও ব্যানার ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App