×

মুক্তচিন্তা

ঐক্যবদ্ধ থাকুন, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২২, ০১:২২ এএম

বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অসীম ত্যাগ, তিতিক্ষা, মেধা, মনন এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কাতারে। স্বপ্নের পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন মেগা-প্রকল্প বাস্তবায়নের চিত্রও সাফল্যজনকভাবে শেষ পর্যায়ে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, জিডিপি প্রবৃদ্ধি এমনকি মানুষের গড় আয়ুও বৃদ্ধি পেয়েছে বিগত একযুগে। সাফল্য অর্জিত হয়েছে কৃষি, শিল্প, ব্যবসায়-বাণিজ্যে। বিগত জুলাইয়ে অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করে বিদেশ থেকে এসেছে রেমিট্যান্স! কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের এই অর্জনকে কোনোভাবে মøান করা যাবে না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার ব্রত গ্রহণ করতে হবে। আমরা এরূপ কথা বলি বটে কিন্তু আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও সেই প্রত্যয়ী ভাব দেখি না। চারদিকে এক অচেনা অস্থিরতাই দেখি। দেখি অনেকের মধ্যেই ‘আখের’ গোছানোর প্রস্তুতি! ‘আখের’ গোছানোর এই দৌড়ে সবার আগে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা- আদার বেপারি থেকে জাহাজের কারবারি সবাই! বলার অপেক্ষা রাখে না দ্রব্যমূল্যই বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস করছে। সাম্প্রতিককালের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে এদেশের মানুষ ধারণা রাখেন। তাই কষ্টকর হলেও ন্যায়সঙ্গত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে মেনেও নেন। কিন্তু দেশীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের জন্য চাহিদার জোগান সত্ত্বেও অনেক পণ্যের অসঙ্গত মূল্যবৃদ্ধি সাধারণকে সরকারের প্রতি বিরূপ-ভাবাপন্ন করছে। নিকট সম্প্রতিকালের ডিমকাণ্ড, আর চলমান সারকাণ্ড তার বড় প্রমাণ। মাঝেমধ্যে বিস্মিত বোধ করি এই ভেবে যে, আওয়ামী লীগে কি ডিম ও সার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কোনো প্রতিনিধি নেই? ‘আওয়ামী’ নামে কত কত লীগ আমরা দেখি-! সেখানে ‘আওয়ামী ডিম দোকানদার লীগ’ কিংবা ‘সার দোকানদার লীগ’ নামের কোনো সংগঠন নেই তা ভাবা যায় না! যদি সে রকম কিছু থেকে থাকে তবে কেন ডিম নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড? তবে কেন সার নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড! কৌশলে দেশকে শ্রীলঙ্কা বানানোর ষড়যন্ত্রই যদি না হবে তবে বর্তমান মেয়াদের প্রায় শেষ সময়ে ব্যবসায়ীরা সরকারকে কেন বেকায়দায় ফেলে? এসব গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। আওয়ামী লীগের মধ্যে সাংগঠনিক শৃঙ্খলার অভাবেও ষড়যন্ত্র ডালপালা বিস্তারের সুযোগ পায়। দলটির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যেও বিশৃঙ্খলা দেখি। তাদেরও ভাবখানা এমন যে, কিছুদিনের মধ্যই আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হতে যাচ্ছে- অতএব যা করার এখনই করে নিই- নিজেদের ‘আখের’ গুছিয়ে নিই! আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও ইদানীং মূল ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুরে কথা বলছেন। দলের পরিচয় ‘ব্যবহার’ করে আর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এক শ্রেণির সুবিধাভোগী নিজেদের স্বার্থই হাসিল করেছে। এতে সাধারণের আবেগ-অনুভূতিতে যেমন আঘাত লাগছে তেমনি দলের প্রতি অনুগত নিঃস্বার্থ কর্মীরাও হতাশ বোধ করছেন, আহত হচ্ছেন, ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কোনো কিছুই ‘রাখঢাক’ করে রাখা যায় না- মূলধারার গণমাধ্যমে না এলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসবের প্রকাশ জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়াই সৃষ্টি করে। বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড যেমন লাগামহীন তেমনি মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো কোনো ব্যক্তির বক্তব্যও কাণ্ডজ্ঞানহীন। এসবই সাধারণের মনে হতাশার জন্ম দেয়। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে যে কোনো দলের বিরুদ্ধেই সাধারণের নেতিবাচক মনোভাব ও অসন্তুষ্টি থাকে। একদিকে চাপা অসন্তোষ অপরদিকে দলটির বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের লাগামহীন ও অসংলগ্ন আচরণ আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে! আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভুলেই গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে চলছে ষড়যন্ত্র- শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র! তাই জনমনে আওয়ামী-বিদ্বেষী মনোভাব জাগিয়ে তুলতে চিত্তাকর্ষক ‘প্রোপাগান্ডা’ ছড়াচ্ছে! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্লেষণে বোঝা যায় দেশের ভেতর ও বাইরে শেখ হাসিনাকে সরানোর কী আপ্রাণ চেষ্টাই না চলছে! নানা রকমের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সাধারণের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটানোর জন্য সূ² কৌশলে তারা এগোচ্ছে! বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণের চেষ্টায়ও তারা তৎপর! এরূপ তৎপরতা আর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে যখন সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্য প্রয়োজন তখন নিজেদের মধ্যেই তারা ক্ষুদ্র স্বার্থ চরিতার্থতার জন্য হানাহানিতে মত্ত! অসঙ্গতিমূলক কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত ভূমিকা রেখে গণধিক্কারে নিজেদের পাল্লা ভারি করতেই তারা বেশি মনোযোগী, আশ্চর্য! শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় না থাকলে এসব নেতাকর্মীর ভবিষ্যৎ কেউ ভাবতেও পারবেন না! ছাত্রলীগ বাংলাদেশের একটি অনন্য ও ঐতিহাসিক সংগঠন। সংগঠনটি ভালো ভালো কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক জনপ্রত্যাশা। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়ে কেন যেন তারা সাধারণের কাছে উৎপাত বিশেষে পরিণত! নানারকম সমালোচনামূলক কাজে তারাও একদা ঘৃণিত ছাত্রদলেরই অনুসারী হয়ে পড়েছে- ছাত্রদলের যেসব তাণ্ডব দেখেছি তারই ছায়া যেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর মধ্যেও দেখা যায়! ছাত্রলীগ মাত্রই খারাপ সেকথা নয়- কিন্তু কারো কারো আচরণে সাধারণের মনে ক্ষুব্ধতাই বেশি জন্ম নেয়। ধরা যাক সিট বরাদ্দকে কেন্দ্র করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ ছাত্রলীগ নেতার ভয় দেখানোর ফোনালাপ ফাঁস হলো কিংবা ইচ্ছা হলো শত হোন্ডায় দলবেঁধে তারা কোনো সেতু পার হবেন, কিন্তু টোল দেবেন না! টোল চাইলে উল্টো টোলপ্লাজা ভাঙচুর ও কর্মচারীদের মারধর করবেন, জয় বাংলা সেøাগান দেবেন! কত রকমের বিচিত্র ঘটনাই না তারা ঘটায়! এসব প্রসঙ্গে যখন কথা বলি তখন আবার সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থির সময়ের কথাও মনে পড়ে। তখনো নানারূপ দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা জয় বাংলা এবং রক্ষীবাহিনী নামে সেøাগান দিত! আর কিছু গণমাধ্যমে ফলাও করে তা ছাপানো হতো! ছাত্রলীগ সে রকম কোনো মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার কিনা তাও বুঝতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সব সংবাদ সত্য নয় সেও সবার জানা। এর অধিকাংশেরই কোনো ভিত্তি নেই। কিন্তু ভুক্তভোগীর ভাগ্যে মিডিয়া ট্রায়াল ঘটে যায়! পাঠক, দর্শক ও শ্রোতার অবচেতনে ছাত্রলীগ সম্পর্কে নিয়মিত এক ধরনের নেতিবাচক মনস্তত্ত্ব গড়ে উঠতে থাকে। সমাজের শুভ ও কল্যাণকর কাজেও ছাত্রলীগ অংশগ্রহণ করে। ছাত্রলীগ কর্মীরাই দুর্গম অঞ্চলে বন্যার্তদের জন্য সাহায্য নিয়ে যায়, কৃষকের নষ্ট হতে-যাওয়া মাঠের ফসল কেটে ঘরে পৌঁছে দেয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের পানীয় জল সরবরাহসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করে। এসব ভালো কাজ। এর জন্য বলা-কওয়ার কী আছে- এর প্রচার-প্রচারণারই বা কি আছে? কোনো কোনো মহলের এমনটিই দাবি! ছাত্রলীগের এসব সমাজহিতৈষী নানা কর্মকাণ্ডে মানুষ উপকৃত হয়- কিন্তু প্রচার নেই! কিছু নেতিবাচক কর্মকাণ্ড প্রচার-গুণে সাধারণের কাছে সামাজিক ‘ভিলেন’-এ পরিণত হয় ছাত্রলীগ! তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ বিব্রত হয়, বিব্রত হন প্রধানমন্ত্রীও। প্রধানমন্ত্রীর উচ্চাশা ছাত্রলীগ প্রায়ই সামাজিকভাবে ধূলিসাৎ করে! অন্তত মিডিয়া পর্যালোচনা তাই বলে! এমনও দেখা যায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক নানা অনুষঙ্গেও সংগঠনকে মিডিয়া ট্রায়ালে ফেলে দেয়া হয়! সব অন্যায়-অপরাধকে একটা রাজনৈতিক চেহারা দিয়ে ছাত্রলীগ ও সরকারের ‘ভাবমূর্তি’ বিনষ্টের পরিকল্পিত অপপ্রয়াস এটি! মনে রাখা জরুরি, চলতি মেয়াদের শেষ দিকে আছে সরকার। তাই অনেকে ‘তিলকে তাল’ বানিয়ে সরকারবিরোধী মনোভাব চাঙ্গা করার বিশেষ প্রকল্প নিয়েই মাঠে নেমেছেন। ছাত্রলীগ বা যুবলীগ সম্পর্কে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে, মিডিয়া ট্রায়ালে ফেলে মনস্তাত্ত্বিক সুবিধাও নিবেন সাধারণের কাছ থেকে! এতে আওয়ামী লীগও মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হবে! এ সময়ে তাই সরকারি দল হিসেবে ক্ষমতার দাপট প্রদর্শনের পরিবর্তে সর্বোচ্চ সতর্ক ও সচেতন অবস্থানে থাকতে হবে- শুধু ছাত্রলীগ বা যুবলীগই নয় মূল দলের নেতাকর্মীসহ মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ এদেশে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিত করেছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছে, বিচার করেছে যুদ্ধাপরাধেরও। যুদ্ধাপরাধের বিচারের মাধ্যমে দেশের ‘বাঘা বাঘা’ অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। সবচেয়ে বড় কথা বিএনপি-জামায়াত জোট দীর্ঘদিন ক্ষমতার সাধ থেকে বঞ্চিত আছে! উপরন্তু বিএনপির চেয়ারপারসন এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি। নানা অপরাধে বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী বিদেশে আস্তানা গেড়েছেন। তারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। মনে রাখতে হবে, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন, মেগা-উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন আওয়ামী লীগ-নেতৃত্বের বিরাট সাফল্য! এই সাফল্যের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব প্রায় অস্তিত্বহীন! এরূপ পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক ও সুখকর হলেও অন্যান্য দলের জন্য নিতান্তই কষ্টের! তাই বিভিন্ন নামের সামাজিক ও রাজনৈতিক এমনকি মানবাধিকার সংগঠন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একপ্রকার ‘আদা-জল’ খেয়ে নেমেছে! তারা সরকারের ছোট ছোট ব্যত্যয়গুলোকে বড় বড় করে প্রচারের মাধ্যমে জনমনে হাসিনাবিরোধী অসন্তোষ তীব্র করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। যুদ্ধাপরাধ, বঙ্গবন্ধু হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং বিদেশে অর্থ পাচার প্রভৃতি চাঞ্চল্যকর মামলায় দণ্ডিত ব্যক্তিদের পরিবার ও দলীয় সমর্থকরা দেশ-বিদেশে বসে নানাভাবে সরকারের ছিদ্রান্বেষণে ব্যস্ত। সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য এরা আবার বিদেশি কিছু সঙ্গীসাথীও ‘ম্যানেজ’ করেছেন- যারা বাংলাদেশে মানবাধিকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন ফোরামে ‘পেপার কাটিং’ সরবরাহ করছেন! কতভাবেই না তারা বর্তমান মেয়াদকালের শেষ সময়টুকু অস্থির করার অপচেষ্টায় মত্ত হয়েছেন! তারই নমুনা সামাজিক গণমাধ্যমে আমরা নিত্য দেখছি। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীসহ আওয়ামী লীগের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই- ঐক্যেই শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে। শেখ হাসিনার হাতকেই শক্তিশালী রাখতে হবে। আহমেদ আমিনুল ইসলাম : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App