×

সারাদেশ

হাওরে অসময়ে কমছে পানি, বোরোজমির বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৭:৪৪ পিএম

হাওরে অসময়ে কমছে পানি, বোরোজমির বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক
হাওরে অসময়ে কমছে পানি, বোরোজমির বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

বন্যা পরবর্তী সময়ে একটানা পানি কমছে হাওরাঞ্চলে। ছবি: ভোরের কাগজ।

হাওরে অসময়ে কমছে পানি, বোরোজমির বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

পানি কমতে থাকায় বোরোজমির বীজতলা তৈরি নিয়ে শঙ্কিত কৃষক। ছবি: ভোরের কাগজ।

হাওরে অসময়ে কমছে পানি, বোরোজমির বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

পানি কমতে থাকায় বোরোজমি শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। ছবি: ভোরের কাগজ।

প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা যেন থামছেই না সুনামগঞ্জের হাওর বেষ্টিত দুর্গম উপজেলা শাল্লায়। গেল বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপজেলার হাজারো কৃষকের। বন্যা পরবর্তী সময়ে একটানা পানি কমতে থাকে হাওরাঞ্চল এলাকাগুলোতে। এতে নতুন করে সংকটে পড়তে যাচ্ছেন কৃষকরা। অসময়ে পানি কমতে থাকায় বোরোজমির বীজতলা তৈরি নিয়ে শঙ্কিত তারা। শুধু বীজতলা নয়, এভাবে হাওরে পানি কমতে থাকলে বোরোজমিও শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এতে বোরো ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

[caption id="attachment_363995" align="aligncenter" width="700"] পানি কমতে থাকায় বোরোজমির বীজতলা তৈরি নিয়ে শঙ্কিত কৃষক। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

কৃষকদের ভাষ্যমতে, এখন যতটুকু হাওরে পানি আছে, তারচেয়েও প্রায় দুই মিটার পানির উচ্চতা হাওরে থাকার কথা। কিন্তু হাওরের পানি অস্বাভাবিকভাবে কমতে থাকায় চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। কী হবে আগামীর বোরো মৌসুমে এই চিন্তায় দিশাহারা কৃষকরা। অনেকেই বলছেন বছরে একবার বোরোধান চাষ করে চাষাবাদের খরচই ওঠেনা। তারপরেও জমি চাষ করেন কৃষকেরা।

উপজেলার বাহাড়া গ্রামের বাবুল চন্দ্র দাস বলেন, বর্তমানে হাওরে সাত ফুট পানি থাকার কথা। কিন্তু হাওরে পানি আছে মাত্র তিন ফুট। পানি দ্রুত কমে যাওয়ায় হাওরে মাছ নেই। এখনই বীজতলা শুকিয়ে যাচ্ছে। অথচ বীজতলা তৈরির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আমাদের আরও দুইমাস। বীজতলাই যদি এখন শুকিয়ে যায়, তাহলে বোরোজমি করাই মুশকিল হয়ে পড়বে। এভাবে পানি কমলে সামনে কৃষকের বড় বিপদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা বলরাম দাস বলেন বীজতলা এখনই শুকিয়ে যাচ্ছে। যে বীজতলা অক্টোবর মাসের শেষের দিকে শুকানোর কথা। এভাবে পানি কমতে থাকলে বোরোধান আবাদই করা যাবে না। এত দেখি মরার উপর খারার ঘাঁ। তিনি ৬ হেক্টর বোরোজমি চাষ করেন বলে জানান।

[caption id="attachment_363996" align="aligncenter" width="700"] পানি কমতে থাকায় বোরোজমি শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক রণজিৎ কুমার দাস বলেন, যে হারে হাওরে পানি কমছে আমরা তাতে চরম উদ্বিগ্ন। এমন গতিতে পানি কমতে থাকলে সামনে বীজতলা তৈরি ও ফসলের ক্ষেত সঠিকভাবে রোপণ করতে পারবেন কিনা উপজেলার কৃষকরা -এনিয়ে শঙ্কিত আমরা। পানি বাড়ার সম্ভাবনাও নেই বলে জানান এই তরুণ নেতা। হাওরে এমন দ্রুত গতিতে পানি নিষ্কাসিত হওয়ায় উপজেলার বহু কৃষক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

হাওরাঞ্চলে বছরে একটি মাত্র ফসল বোরোচাষাবাদ। এই ফসল উৎপাদন করেই সারা বছর ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা থেকে শুরু করে সংসারের যাবতীয় খরচ চালাতে হয় এখানকার কৃষকদের। এরমধ্যে আগাম বন্যায় ফসল তলিয়ে যাওয়া, অতি খড়া, শিলাবৃষ্টিজনিত কারণে বোরো ফসল হারানোর শঙ্কায় থাকেন হাওরবাসী।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এভাবে পানি কমলে বীজতলা ও বোরোজমির সমস্যা তো হবেই। কৃষকের পাশাপাশি আমরাও চিন্তিত। তবে পানি আবার বাড়তেও পারে বলে জানান তিনি। জানা যায়, উপজেলায় ২১ হাজার ৮শ' হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদ করা হয়। এতে ধান উৎপাদন হয় প্রায় এক লাখ ৫০হাজার মে.টন। স্থানীয় কৃষকের চাহিদা মিটিয়ে ৬০ শতাংশ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App