×

সম্পাদকীয়

ভোজ্যতেলের দামের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না!

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০২:০৬ এএম

তেলের দর নিয়ে অস্থির এক সময় পার করছি আমরা। এমন পরিস্থিতি এর আগে কখনো হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে নজিরবিহীনভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৭-৯ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে ৯ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা এর আগে ১৬৬ টাকা নির্ধারিত ছিল। অন্যদিকে ৭ টাকা বেড়ে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৯২ টাকায়, যা এতদিন ১৮৫ টাকা ছিল। আবার ২৫ টাকা বেড়ে সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হবে ৯৪৫ টাকায়। সেক্ষেত্রে লিটারপ্রতি দাম পড়বে ১৮৯ টাকা। প্রতিটি ৫ লিটারের ক্যানে আগে ৯২০ টাকা মূল্য নির্ধারিত ছিল। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাপী খাদ্যমূল্য রেকর্ড ও জটিল বাজার পরিস্থিতি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন করে আমাদের। বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে গেলে দেশের বাজারে কি সমন্বয় করা হবে? এ বিষয়ে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে যেন ভোক্তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়। ভোজ্যতেলের দাম কমাতে সরকারের প্রায় সব উদ্যোগ ব্যর্থ করে ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। এর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার দোহাই দিয়ে তিন স্তরে ভ্যাট ও শুল্ক সুবিধায় আমদানির সুযোগ নেয়া হয়। ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বে এখন ভোজ্যতেলের দাম নিম্নমুখী। কিন্তু দেশে ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে বাড়িয়ে চলছেন। ২০১৯ সালে দেশে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল প্রতি লিটার ১০০ টাকা। তিন বছরের ব্যবধানে তা এখন ১৯৮ টাকা। ওই সময় পাম অয়েলের লিটার ছিল মাত্র ৬০ টাকা, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭২ টাকা। ৭৮ টাকা লিটারের খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা। সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল ২০১৯ সালে ছিল ৪৫০-৫০০ টাকা, তা এখন ৯৮৫ টাকা। তবে আন্তর্জাতিক বাজারেও বেড়েছে এই ভোজ্যতেলের দাম। নিত্য ভোগ্যপণ্য সংকটের সমাধানে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যগুলো নতুন নতুন দেশ থেকে আমদানি করতে হবে। যেসব দেশ আমাদের দীর্ঘমেয়াদে গম, ভোজ্যতেল ও জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে সক্ষম হবে, তাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্রাজিল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন উৎস হতে পারে। পাশাপাশি দুঃসময়ে ভোগ্যপণ্য নিয়ে সিন্ডিকেট বাণিজ্যের প্রতিও নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে। ভোজ্যতেলের প্রায় ৮৮ শতাংশ আমদানি করছে চারটি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘সিন্ডিকেট’ করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ নতুন নয়। তেল আমদানিকারক বৃদ্ধি পেলে একদিকে যেমন প্রতিযোগিতা বাড়বে, অন্যদিকে ইচ্ছামতো দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না। ব্যাংকগুলোকে এলসি বা ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে সজাগ রাখতে হবে। আমদানি হওয়া পণ্যের মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ ও সঠিক হয়, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App