×

জাতীয়

জেআরসিতে তিস্তা ও গঙ্গা নিয়ে আলোচনা, কুশিয়ারা চূড়ান্ত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২, ১০:১৫ পিএম

জেআরসিতে তিস্তা ও গঙ্গা নিয়ে আলোচনা, কুশিয়ারা চূড়ান্ত

বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে পানিবন্টন সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক। ছবি: ভোরের কাগজ।

জেআরসিতে তিস্তা ও গঙ্গা নিয়ে আলোচনা, কুশিয়ারা চূড়ান্ত

বৈঠকে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শাখাওয়াৎ ও বাংলাদেশের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ছবি: ভোরের কাগজ।

১২ বছর পর দিল্লিতে ভারত বাংলাদেশের পানি নিয়ে আলোচনা

তিস্তা ও গঙ্গাসহ দুইদেশের অভিন্ন নদীগুলোর পানিবন্টন সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) আলোচনা হয়েছে। এক টুইট বার্তায় ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শাখাওয়াৎ তার নিজের টুইটারে এই তথ্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে নয়াদিল্লির সুষমা স্বরাজ ভবনে শুরু হওয়া এই বৈঠকে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শাখাওয়াৎ ও বাংলাদেশের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমও বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। দীর্ঘ একযুগ পর দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকটি হয়েছে।

[caption id="attachment_364018" align="aligncenter" width="700"] বৈঠকে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শাখাওয়াৎ ও বাংলাদেশের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, কুশিয়ারা নদী থেকে পানি উত্তোলনের বিষয়ে দুই দেশের আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে কুশিয়ারার পানি উত্তোলন সংক্রান্ত চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, নিজ নিজ দেশের পানি সম্পদ মন্ত্রীদের নেতৃত্বে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের ৩৮তম বৈঠক হয়েছে। ২০১০ সালের পর দীর্ঘ বারো বছর বাদে গতকাল এই বৈঠকটি হলো। বৈঠকে দুই দেশের অভিন্ন নদী বিশেষ করে গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এছাড়াও বন্যা সংক্রান্ত তথ্য ও তথ্যের আদান-প্রদান, নদীর তীর রক্ষার কাজ, সাধারণ অববাহিকা ব্যবস্থাপনা এবং ভারতীয় নদী আন্তঃসংযোগ প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। জেআরসি বৈঠকে অন্তর্বতীকালীন পানি বণ্টন চুক্তির খসড়া কাঠামো তৈরির জন্য তথ্য ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য আরও কিছু অভিন্ন নদী চালু করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত শেষ করার জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ করেছে। জবাবে চুক্তিটি শেষ করতে ভারত তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আশ্বাস দিয়েছে। কুশিয়ারা নদীর অভিন্ন অংশ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের পানি উত্তোলনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে সই করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী উত্থাপন করলে ভারতের জলসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি তাদের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এছাড়াও উভয়পক্ষই গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির অধীনে বাংলাদেশের প্রাপ্ত পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করতে সম্মত হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার জেআরসির সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়। দুই দেশের কর্মকর্তারা এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পানি বন্টন ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, মঙ্গলবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পঙ্কজ কুমারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের পানি সংক্রান্ত ইস্যুতে আলোচনা হয়। এর মধ্যে তিস্তা, ছয়টি অভিন্ন নদী- মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার ছিল। আলোচনায় ছিল কুশিয়ারা ও গঙ্গা ইস্যুও।

জেআরসিতে সচিব পর্যায়ের বৈঠকের একটি ছবি প্রকাশ করে বুধবার এক টুইট বার্তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) রকিবুল হক লিখেছেন, বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি, পানি খাতে সহযোগিতাসহ অভিন্ন নদীর সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যৌথ নদী কমিশনের তথ্য বলছে, মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকে কুশিয়ারার পানি বণ্টন ইস্যু সমাধানে পৌঁছানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর আগামী সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরে কুশিয়ারা নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক বা এমওইউ সই হতে পারে। সাম্প্রতিক বর্ষায় দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যা প্রসঙ্গও থাকবে আলোচনার টেবিলে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন নদীর জলসম্পদ বণ্টন, সেচ এবং বন্যা ও এই জাতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে সমঝোতার মধ্য দিয়ে গঠিত হয় যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি)। সবশেষ ২০১০ সালে জেআরসি বৈঠক হয়েছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App