×

সম্পাদকীয়

যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক : অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে অগ্রগতি হওয়া দরকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২২, ১২:১৬ এএম

বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন ৬টি নদীর পানি বণ্টনকে প্রাধান্য দিয়ে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক আজ শুরু হয়েছে। প্রথমদিন নয়াদিল্লিতে পানিসম্পদ সচিব পর্যায়ে এবং পরদিন একদিন বিরতি দিয়ে বৃহস্পতিবার পানিসম্পদমন্ত্রী পর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই বৈঠকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে অগ্রগতির সম্ভাবনা কম। তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নে আর কত কালক্ষেপণ হবে। তিস্তার প্রসঙ্গও সামনে আশা জরুরি। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লি সফরে যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে দুদেশের মধ্যে পানিসম্পদ খাত যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে বলে আমরা মনে করছি। যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে আসাম থেকে বাংলাদেশে আসা কুশিয়ারা নদী নিয়ে একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার জল বণ্টন চুক্তি সই হয়। ২০২৬ সালে এর মেয়াদ শেষ হবে। দুই দেশই এখন এই চুক্তির মেয়াদ আরো বৃদ্ধিতে আগ্রহী। এ ইস্যুও আগামী বৈঠকগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। জলযান পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং নদীদূষণ হ্রাস নিয়েও দুদেশের মধ্যে আলোচনার কথা রয়েছে। এছাড়া মানু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা এবং দুধকুমার নদীতে দুদেশের মধ্যকার সহযোগিতা জোরদার করা হবে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদী রয়েছে। বাংলাদেশ এসব নদীর বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে আরো তথ্য চায়। দেশের মধ্যে মৎস্য পরিকল্পনা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এসব তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিস্তার পানি জটিলতা কাটছে না। ২০১১ সালে দুদেশের মধ্যে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে সব প্রস্তুতি নেয়া হলেও তা ১১ বছরে বাস্তবায়ন হয়নি। আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে গঙ্গা বা তিস্তার পানির ওপর ভারত একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। দশকের পর দশক ধরে তথাকথিত আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশকে চরম ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়ে ভারত যৌথ নদীগুলোর উপর বাঁধ ও সংযোগ খাল নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। তিস্তার বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষের অন্য রকম আকাক্সক্ষা রয়েছে। এখানে দখল-দূষণ তুলনামূলক কম। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে একতরফাভাবে ভারত পানি প্রত্যাহার করায় নদীটি দিন দিন মরে যাচ্ছে। এই অবস্থায় নদীর পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে চুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ চুক্তির মাধ্যমেই একটি দেশের পানির হিস্যা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়। তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি বা তিস্তা প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে শুধু তিস্তা তীরবর্তী জনগোষ্ঠী বা উত্তরবঙ্গ নয়, তার সুফল ভোগ করবে সমগ্র বাংলাদেশ। উত্তরবঙ্গবাসীর জনজীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App