×

জাতীয়

জামিনের পর মুক্তিও পেলেন সম্রাট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২২, ০৮:০৯ পিএম

জামিনের পর মুক্তিও পেলেন সম্রাট

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ফাইল ছবি

আদালত থেকে জামিন লাভের পর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে থেকে মুক্তি পেয়েছেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।

সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ডেপুটি জেলার মো. সেলিম কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে প্রিজন সেলে এসে তাকে মুক্ত করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক মাকসুদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, জামিনে মুক্ত সম্রাট বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সিসিইউতে থাকবেন।

এর আগে এদিন বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত দশ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিনের আদেশ দেন। এদিন আসামি পক্ষের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এর বিরোধীতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সম্রাটের সার্বিকদিক বিবেচনা করে দুটি শর্তে জামিনের আদেশ দেন।

শর্ত দুটি হলো, পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বহাল থাকবে। আদালতের অনুমতি ব্যতীত বিদেশে যেতে পারবেনা। এছাড়া, তার বৈধ পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। বিচারক আদেশ দেয়ার আগে বলেন, সম্রাট দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ ও অসুস্থার দাখিলকৃত রিপোর্টসহ সার্বিক দিক বিবেচনা করেন তার দুটি শর্তে জামিন দেয়া হলো।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স করে সম্রাটকে আদালতে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। এরপর ১১ টার সময় বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। শুনানির শুরুতেই চার্জশুনানি পেছাতে সম্রাটের পক্ষে সময় আবেদন করেন আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী। সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

এর আগে গত ২৪ মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) সিসিইউ থেকে আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেন সম্রাট। এরপর আসামি জামিন চাইলে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠান নিম্ন আদালত।

এর আগে গত ১১ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তিন শর্তে সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন। ১৬ মে দুদক তার জামিন বাতিলের আবেদন করে উচ্চ আদালতে। ১৮ মে হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন বাতিল করেন। একই সঙ্গে তাকে সাতদিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করার পর কাকরাইলে তার কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরদিন র‌্যাব-১ এর আব্দুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া পরে অর্থপাচার আইনে মামলায় হয়। পরে একই বছরের ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত এসব অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। মামলাটির চার্জশিট গত ২২ মার্চ গ্রহণ করেন আদালত। অন্যদিকে গত ১১ এপ্রিল রমনা থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় এবং গত ১০ এপ্রিল অস্ত্র ও অর্থপাচারের মামলাতে জামিন পান সম্রাট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App