×

জাতীয়

তারুণ্যের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ‘বঙ্গবন্ধু’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২২, ১১:৩০ পিএম

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৫ সালের এইদিনে ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয় তাকে। তিনি ছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্ম নেয়া শেখ মুজিব ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন অধিকার আদায়ের আন্দোলনের অগ্রভাগের অতিপরিচিত একটি মুখ। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন একাধিক আন্দোলনে। জেলে গিয়েছেন অনেকবার, আবার বাংলার মানুষ তাকে মুক্তও করেছেন। যার চোখেই দেশের সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি দেখেছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন, ঝাঁপিয়ে পড়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধে। তার সংগ্রামী জীবন প্রতিটি প্রজন্মের কাছে এক আদর্শ, তার প্রতিটি পদক্ষেপেই রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামটিই এগিয়ে যাওয়ার সাহস ও অনুপ্রেরণা। তাদের মতে, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীন বাংলাদেশ’।

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নিজেদের মূল্যায়ন তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর বিভাগের শিক্ষার্থী কাঞ্জিলাল রায় জীবন বলেন, একজন তরুণ হিসেবে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সাম্প্রতিককালের ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। পত্রিকার পাতা উল্টালেই কিংবা টেলিভিশন চালু করলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশ্বজুড়ে সাম্প্রদায়িক হামলা ও ধর্মীয় উগ্রতার শিকার নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের ভয়ার্ত মুখগুলো। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে পারস্পরিক সহাবস্থান, সহনশীলতা চর্চা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমার মানসপটে ভেসে ওঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক আদর্শের প্রতিচ্ছবি। ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন থেকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে ধর্মীয় নিরপেক্ষতার সন্নিবেশন, নিজের জীবনজুড়ে তিনি চর্চা করেছেন অসাম্প্রদায়িকতার সুমহান আদর্শের। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ুক বঙ্গবন্ধুর এ সুমহান আদর্শ; ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পাক বিশ্ববাসী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটির সঙ্গে শৈশব থেকেই প্রত্যেক বাঙালির পরিচয়। আমি বঙ্গবন্ধুর তাৎপর্য প্রথম অনুভব করি অষ্টম শ্রেণীতে, যখন উপস্থিত বক্তৃতায় প্রথম হয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনী উপহার পাই। পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের দলিল অনুবাদের কাজে যুক্ত হয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে। তাদের চোখ দিয়ে তাদের পরম শ্রদ্ধেয় ‘শেখ সাব’কে নতুন করে চিনি। একজন মুক্তিযোদ্ধা আমাকে খুব সহজ ভাষায় বঙ্গবন্ধুর মাহাত্ম্য বুঝিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশটি দেখতে যেতে। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, শিক্ষিত স্বাধীনতাকামী জনগণ পুরো ৭৫ বছর ধরে স্বাধীনতার সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ৭১-এর পূর্ব পাকিস্তানের তুলনায় তাদের শক্তি-সামর্থ্য সবই বেশি রয়েছে। শুধু একজন বঙ্গবন্ধুর অভাবে আজও তারা পরাধীনতার শেকলে বন্দি। আমার চোখে তাই বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীন বাংলাদেশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন রিয়াজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব হলো সূর্যের ন্যায় তেজস্বী, যা টিকে ছিল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। যার আপসহীন নেতৃত্বের কারণে আমরা বাংলাদেশকে পেয়েছি। সত্যতা, নিষ্ঠা, আপসহীন ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা- সব গুণই ছিল তার মধ্যে। যা থেকে আমাদের তরুণদের শিক্ষা নেয়া উচিত। তরুণদের মাঝে বঙ্গবন্ধু একটি প্রেরণার নাম। তরুণদের সাহস জোগায় এ নাম।

আরেক শিক্ষার্থী শেখ লাবণ্য বলেন, সাহসিকতা, দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল প্রতীক শেখ মুজিবুর রহমান। দেশকে পাকিস্তানের দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আরেক স্বাধীনতার নাম। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। তরুণ সমাজের জন্য বঙ্গবন্ধু অনুপ্রেরণার অন্য নাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান তরুণ এবং যুবকদের জন্য বঙ্গবন্ধু একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তার সাহস, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সম্মোহনী বাগ্মিতা, অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলি বাংলাদেশের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ ছিল। গগনস্পর্শী জনপ্রিয়তার অধিকারী বঙ্গবন্ধু রেহাই পাননি বিশ্বাসঘাতকতার হাত থেকে। দেশ ও জাতির শত্রæ স্বার্থান্বেষী দুষ্কৃতকারীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আর রচিত হয় ইতিহাসের একটি লজ্জাজনক কালো অধ্যায়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব বিল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে অনবদ্য এক নাম। হিমালয়ের মতো মন, সমুদ্রের মতো হৃদয়, বীরত্ব ও সাহস- সব মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রত্যয়ী। বঙ্গবন্ধু একজন নেতা ও তাত্তি¡ক হিসেবে মানুষের অধিকার আদায় ও পূরণে ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের প্রতি তার পক্ষপাত, নিষ্ঠা, শ্রদ্ধা ছিল অবিস্মরণীয়। এই অকুতোভয় দুঃসাহসী সৈনিককে কাবু করতে না পেরে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মাধবী রায় বলেন, আমার কাছে বঙ্গবন্ধু এক আদর্শের নাম। যেই আদর্শকে আমিও ধারণ করে সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। বঙ্গবন্ধুর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব, তার বাগ্মিতা, মানুষের প্রতি স্বার্থহীন ভালোবাসা, সহজেই মানুষের সঙ্গে মেশা, সাহসিকতা আমাকে তার প্রতি বেশি আকৃষ্ট করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App