×

জাতীয়

‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক খাওয়ার দৃশ্য, পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২২, ০৭:৪৪ এএম

‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক খাওয়ার দৃশ্য, পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ

‘হাওয়া’ সিনেমার পোস্টার

‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক খাওয়ার দৃশ্য, পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ

শালিক পাখি। ফাইল ছবি

‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক খাওয়ার দৃশ্য, পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ

হাওয়া সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন

‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক খাওয়ার দৃশ্য, পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ

# একে ‘ফিকশন’ বলছেন সিনেমাটির পরিচালক

বাংলাদেশে সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘হাওয়া’ সিনেমায় শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখার দৃশ্য এবং সেটি খাওয়ার দৃশ্য থাকায় উদ্বেগ জানিয়েছে পরিবেশবাদী ৩৩টি সংগঠন।

সিনেমার ওই দৃশ্য সংশোধন করে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। খবর বিবিসির।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট দাবি করেছে, সিনেমায় একাধিক দৃশ্য আছে যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত এ ধরনের অপরাধের ফলে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে।

এটি ছাড়াও সম্প্রতি আরও কয়েকটি নাটক ও বিজ্ঞাপন চিত্রে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জোট। এর ফলে বন্যপ্রাণীর জন্য নতুন করে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।

এর ব্যাখ্যা হিসেবে অবশ্য ‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, ‘ফিকশন’ হিসেবে দৃশ্যটি দেখানো হলেও হত্যা করা হয়নি কোনো বন্যপ্রাণী।

[caption id="attachment_361973" align="aligncenter" width="700"] শালিক পাখি। ফাইল ছবি[/caption]

‘হাওয়া’ নিয়ে অভিযোগ

গত ২৯ জুলাই মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাওয়া’ সিনেমায় ট্রলারে থাকা খাঁচায় একটি শালিক পাখিকে বন্দী অবস্থায় দেখা যায়। একপর্যায়ে সেটিকে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্যও দেখানো হয়।

ইউটিউবে প্রকাশ করা সিনেমার ‘বিহাইন্ড দ্য সিনে’ সামুদ্রিক প্রাণী শাপলা পাতা মাছ দেখানো হয়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, সিনেমায় ব্যবহৃত এমন দৃশ্য মানুষকে এ ধরনের প্রাণী শিকারে উৎসাহিত করতে পারে।

বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের আহ্বায়ক ড. আহমদ কামরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের আইনে বলা আছে, বন্যপ্রাণী বহন, আটকে রাখা, প্রদর্শন করা আইনের পরিপন্থী। আমরা যতদূর জানি, এই দৃশ্য ধারণের জন্য বনবিভাগের কোন অনুমতি নেয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সেখানে যখন দেখানো হয় যে একটি বন্যপ্রাণীকে হত্যা করাা হয়েছে, খাওয়া হয়েছে, তখন অন্য মানুষ মনে করতে পারেন যে, এটা করা যায়। এই সিনেমা দেখেছেন হাজার হাজার মানুষ। তাই তারা এগুলো দেখে উৎসাহিত হতে পারেন। সিনেমাটির মাধ্যমে তাদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হবে। তারা মনে করবে এ ধরনের কাজ করা যায়। ধূমপানের দৃশ্যে যেমন লেখা থাকে যে, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু সিনেমার ওই অংশে এ ধরনের কোনো ধরনের বার্তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

একপর্যায়ে কামরুজ্জামান দাবি করেন, সিনেমাটি দেখানো বন্ধ করে আইন লঙ্ঘনের চিত্র সংস্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে বন্যপ্রাণী হত্যার দৃশ্য দেখানোর জন্য পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট অভিনেতাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

কোনো সিনেমায় এ ধরনের দৃশ্য দেখানোর পরেও বন বিভাগ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নীরব থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘হাওয়া’ সিনেমায় একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা বা হত্যার দৃশ্য দেখানোর বিষয়ে তারা জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বন্যপ্রাণী আইনের লঙ্ঘনের প্রমাণ পেলে বন বিভাগ আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে বা সাজা চেয়ে মামলা করতে পারে।

[caption id="attachment_361974" align="aligncenter" width="700"] হাওয়া সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন[/caption]

কী বলছেন ‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালক

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর ঐ অভিযোগের বিষয়ে হাওয়া সিনেমাটির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন বলেন, সিনেমায় একটি নেতিবাচক চরিত্রকে উপস্থাপনের জন্য চলচ্চিত্রে খাঁচায় রাখা শালিক পাখি ও সেটিকে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। কিন্তু খাওয়ার দৃশ্যটি মূল নয়।

আইন অনুযায়ী শালিক একটি সংরক্ষিত প্রাণী। এ জাতীয় পাখি বা প্রাণী খাঁচায় আটকে শুটিং বা প্রদর্শন করতে হলে বন বিভাগের অগ্রিম অনুমতি থাকতে হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App