×

খেলা

জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছে টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২২, ০৭:০৯ পিএম

জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছে টাইগাররা

হারারে আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টপাটপ স্বাগতিকদের দুই উইকেট তুলে টাইগার পেসার নেন হাসান মাহমুদ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সমতায় ফেরার প্রত্যাশায় আজ দ্বিতীয় ম্যাচে ২৯০ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। ২৯১ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে ১৭ ওভার শেষে ৫৪ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে স্বাগতিকরা। রবিবার (৭ আগস্ট) খেলার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছে টাইগার বোলাররা। বিশেষ করে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ এবং স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম।

এই তিন বোলারের তোপের মুখে ৫৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছে স্বাগতিকরা। হাসান মাহমুদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইনোসেন্ট কাইয়া। ইনিংসের প্রথম ওভারেই টি কাইতানোকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন হাসান মাহমুদ। ১ রানে পড়ে এক উইকেট। দলীয় ১৩ রানেও একইভাবে ইনোসেন্ট কাইয়াকে ফিরিয়ে দেন হাসান মাহমুদ। তার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন মুশফিক।

ওয়েসলি মাধভিরে উইকেটে এসে থিতু হতে পারেননি। ১৬ বল খেলেছেন। কিন্তু ২ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হলেন। এর পর তাইজুলের ঘূর্নিতে সাজ ঘরে ফিরেন ওপেনার মারুমানি। তিনি ৪২ বলে ২৫ রান করে আউট হন। সিকান্দার রাজা ১৩ রানে এবং চাকাভা ২ রানে অপরাজিত রয়েছেন।

এর আগে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং দৃঢ়তায় আজ দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ২৯১ রানের টারগেট দিয়েছে টাইগাররা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান সংগ্রহ করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। মাহমুদ উল্লাহ ৮৪ বলে ৮০ রানে অপরাজিত থাকেন। এ ম্যাচে জিততে হলে স্বাগতিকদের করতে হবে ২৯১ রান।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে যাওয়া প্রথম ওয়ানডের দল থেকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আজ বাংলাদেশ একাদশে এসেছে ৩ পরিবর্তন। সে ম্যাচে চোট পেয়েছিলেন লিটন দাস ও মোস্তাফিজুর রহমান। বাধ্য হয়ে হারারেতে আজ রবিবার বাংলাদেশ একাদশে আনতে হয়েছে দুই পরিবর্তন। লিটন দাসের বদলে একাদশে এসেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, আর পেসার মোস্তাফিজের বদলে একাদশে ঢুকেছেন তাইজুল ইসলাম। মোসাদ্দেকের জায়গায় খেলতে নামে হাসান মাহমুদ। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে চলতি জিম্বাবুয়ে সফরে টানা পঞ্চমবারের মতো টস হেরেছে বাংলাদেশ দল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ইতিবাচক অ্যাপ্রোচে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন তামিম। ইনিংসের তৃতীয় বলেই বাউন্ডারি হাঁকান টাইগার অধিনায়ক, এক বল পর আরও একটি।

প্রথম ওভার থেকে শুরু হওয়া এই মারমুখী ব্যাটিং পুরো ইনিংসেই টেনে নেন তামিম। প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানরেট সবসময় উঁচুতে রাখেন তিনি। তামিমের দাপুটে ব্যাটিংয়ের সামনে একপ্রকার দর্শকই ছিলেন বিজয়। প্রথম পাওয়ার প্লেতে মাত্র ১৬ বল খেলার সুযোগ পান এ ডানহাতি ওপেনার। ইনিংসের দশম ওভারে নিজের দশম বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মাত্র ৪৩ বলে ফিফটি পূরণ করেন তামিম। যেখানে ছিল থার্ড ম্যান দিয়ে একটি ছয়ের মারও। অভিষিক্ত ব্র্যাডলি ইভান্সের খাটো লেন্থের ডেলিভারিতে আপার কাট করে ছয় মারেন তামিম। সেই ওভার থেকে ১৪ রান পায় বাংলাদেশ।

তামিমের ফিফটি পূরণ হওয়ার পর ১১তম ওভারে জোড়া চার মারেন বিজয়। এর মধ্যে ওভারের তৃতীয় বলে দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভে মাঠে উপস্থিত দর্শকদের বাহবা কুড়ান এ ডানহাতি ওপেনার। তবে সেই ওভারেই শেষ বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন তামিম। মাঠের সেই পাশে বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ মিটার। সেই বড় বাউন্ডারিতে ছক্কার চেষ্টায় ভাঙে তামিম-বিজয়ের ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি। অধিনায়ককে হারানোর পর বিজয় ও শান্তর কাঁধে আসে ইনিংস এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব। ইনিংসের ১৩তম ওভারের প্রথম বলে দারুণ ড্রাইভে সেই মিশনে নিজেকে প্রস্তুত ঘোষণা দেন শান্ত।

কিন্তু এক বল পর তার স্ট্রেইট ড্রাইভ তানাকা চিভাঙার হাতে লেগে ননস্ট্রাইক প্রান্তের স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। ক্রিজের বাইরে দাঁড়িয়ে সেটি স্ট্যাম্পে আঘাত করতে দেখেন বিজয়। কিন্তু ব্যাট ভেতরে ঢোকানোর মতো সময় তিনি পাননি। ফলে ২০ রানেই থেমে যায় বিজয়ের ইনিংস।

তিন ওভারের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে খানিক চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে রানরেট খুব একটা কমতে দেননি। দুজন মিলে ১০.৪ ওভারে যোগ করেন ৫০ রান। তামিমের মতো বাউন্ডারি নির্ভর ব্যাটিং না করে সিঙ্গেল-ডাবলসের ওপর নজর দেন মুশফিক। তবে মুশফিকের বিদায় তামিমের মতো ঠিক বড় পাশ দিয়ে মারতে গিয়েই। ওয়েসলে মাধভেরের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল দারুণ স্লগ সুইপ করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু সীমানার অনেক আগেই টনি মুনিয়োঙ্গার হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে এক চারের মারে ৩১ বলে ২৫ রান করেন মুশফিক।

১৪৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়েছিল টাইগাররা। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং আফিফ হোসেনের পঞ্চম উইকেট জুটিতে সেই চাপ দূরে ঠেলেছে বাংলাদেশ। জুটি ক্রিজে থিতু হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৪১ রানে সাজঘরে ফিরেন আফিফ, তবে ধীরলয়ের ব্যাটিংয়ে অর্ধশতক তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে তিনশর পথে এগিয়ে নিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। ৬৯ বলে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ-আফিফের জুটিতে এসেছে ৮১ রান। এই জুটিতে যখন টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তিনশোর্ধ্ব ইনিংসের স্বপ্ন বুনছিল বাংলাদেশ, তখনই ঘটে ছন্দপতন। ইনিংসের ৪৪তম ওভারে সিকান্দার রাজার বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে তানাকা চিভাঙ্গার তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান আফিফ। তার ৪১ বলে ৪১ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চারের মার।

আফিফ ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নতুন ক্রিজে আসা মেহেদী হাসান মিরাজও। ১২ বল থেকে ২ চারে ১৫ রান করে রাজার বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরের পথ ধরেছেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App