×

জাতীয়

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর ঘিরে কৌতূহল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২২, ০৮:১১ এএম

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর ঘিরে কৌতূহল

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল জে সিসন

ঘণ্টা দেড়েকের ব্যবধানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সংস্থাবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল জে সিসন গতকাল শনিবার ঢাকা এসে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সিসন ঢাকা আসেন। রবিবার দুপুরের দিকে ঢাকা ছেড়ে মঙ্গোলিয়া সফরে যাবেন ওয়াং ই। এর আগে তিনি সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে প্রাতঃরাশ বৈঠকে মিলিত হবেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। অন্যদিকে, চার দিনের সফরে গতকাল শনিবার মিশেল জে সিসন ঢাকা এসেছেন। তিনি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে। সফরকালে তিনি খাদ্য নিরাপত্তা, বিশ্ব স্বাস্থ্য, মানবাধিকার ও মানবিক চাহিদা, শান্তিরক্ষা, শান্তি আনয়ন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, তাইওয়ান পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার মধ্যেই বড় দুই দেশের মন্ত্রীদের সফর নিয়ে এই অঞ্চলে খানিকটা উত্তেজনা ছড়িয়েছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুই মন্ত্রীর সফরে কার কী এজেন্ডা রয়েছে। কী বার্তা দেবেন তারা- এই নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল। একাধিক কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঢাকার গুরুত্ব বহুগুণ বেড়েছে। মূলত দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বিষয়, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কানেক্টিভিটি ও কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন জোট, উপজোটের বিষয়ে আলোচনা হবে।

জানতে চাইলে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটি আগে থেকেই নির্ধারিত থাকলেও চলমান তাইওয়ান পরিস্থিতি দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনা হবে। পাশাপাশি চীন ঢাকার কাছে কোয়াড, ইন্দো-প্যাসিফিকের বিষয়টিও জানতে চাইতে পারে। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়, ব্যবসা, বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে বেশ কতগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং এগুলোর গতিপ্রকৃতি কী তা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জানা যাবে। একই সঙ্গে আমেরিকাও ঢাকার কাছ থেকে কতগুলো বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিতে চাইবে। তার মতে, এই সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের বেশি আলোচনা করা উচিত।

এর আগে গতকাল শনিবার বিকালে দুই দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তার এই সফরে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি নতুন কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। বিমানবন্দর থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান ওয়াং ই। সেখানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। এ সময় তিনি জাদুঘরটি ঘুরে দেখেন। পরে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে তার সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দেশের বাইরে থাকায় নৈশভোজের আয়োজক হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় সোনারগাঁও হোটেলে দুদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে পাঁচ থেকে সাতটি সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি সই হতে পারে। দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে রয়েছে- পিরোজপুরে কচা নদীর উপর নির্মিত অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু হস্তান্তর চুক্তি। পিরোজপুর থেকে খুলনার পথে চীনের অর্থায়নে নির্মিত এ সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ কিলোমিটার। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে একটি প্রকল্পে সহযোগিতার বিষয়ে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি হবে। চীনের দেয়া ঋণে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এ চুক্তি হবে জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় চুক্তি হতে পারে। যার মধ্যে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার দুটি দিকই থাকবে। কর্মকর্তারা জানান, এর বাইরে সাংস্কৃতিক বিনিময়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষাসংক্রান্ত বিনিময় এবং দুই দেশের টেলিভিশনের মধ্যে অনুষ্ঠান বিনিময়ে আলাদা তিনটি সমঝোতা চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে। ২০১৬ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল, সেসবের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তবে চীনের কাছ থেকে নতুন করে ঋণ নেয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে কোনো ঋণ নেয়া হবে, এমন ব্যাপার এবারে নেই।

শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং জানান, ৬ থেকে ৮ আগস্ট বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া সফর করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে মাত্র ১৩ দিনের প্রস্তুতিতে ঢাকা সফরে আসলেন ওয়াং ই। ক্যালেন্ডারের হিসাবে দুদিন হলেও ঘণ্টার হিসাবে তার সফর ২৪ ঘণ্টার কিছু কম। ঢাকা সফর শেষে আজ রবিবার দুপুরের আগেই মঙ্গোলিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করবেন ওয়াং ই। এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বরে সর্বশেষ তিনি ঢাকা সফর করেন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং এই সফরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা আশা করি, এই সফর দুই দেশের নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়গুলো বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করবে। পরস্পরের জন্য লাভজনক সহযোগিতাকে আরো গভীর করবে এবং সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা ইস্যু : মিয়ানমারের ‘ঘনিষ্ঠ’ বন্ধু হিসেবে পরিচিত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আবারো জোর দেবে সরকার। নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে গত কয়েক বছর থেকে কথাবার্তা এগোলেও বাস্তবে অগ্রগতি নেই বললেই চলে। আন্তর্জাতিক চাপে কয়েক দফার আলোচনায় এখন পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দেশটির বিশাল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বছরের পর বছর শরণার্থী শিবির পরিচালনা করতে গিয়ে আর্থসামাজিক চাপ সামলাতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এ কারণে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর এবারের ঢাকা সফরে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরতে চাইছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু আমাদের টপ প্রায়োরিটি এজেন্ডা। এ সফরে এই ইস্যু গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। প্রত্যাবাসনকে বারবার পাশ কাটিয়ে যাওয়া মিয়ানমারের জন্য পরিস্থিতি এখন বেশ কিছুটা ‘পরিবর্তিত’ মন্তব্য করে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাদের আপত্তির আবেদন খারিজ হয়ে গেছে, যুক্তরাষ্ট্র জেনোসাইডের স্বীকৃতি দিয়েছে আর জাপানসহ বিভিন্ন দেশ প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিচ্ছে। এখন যে অবস্থা, সেই অবস্থায় কিছুটা অগ্রগতি হলে আমি তেমন আশ্চর্য হব না। এখন তো বিভিন্ন রকমের চাপের মুখে আছে মিয়ানমার সরকার। তাছাড়া, চীনও চাইবে যে তাদের আন্তর্জাতিক ইমেজকে যদি আরো কোনোভাবে উন্নত করা যায়। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, বহু আলোচনা আর আহ্বানের পরও প্রত্যাবাসন আটকে থাকার ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দুদেশকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে চীন। এ কারণে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের গুরুত্ব দেয়ার কথা বলছেন সরকারের নীতিনির্ধারক, বিশ্লেষক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

কী বার্তা দেবেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর ঢাকা সফর নিয়ে অন্তহীন কৌতূহল। আছে রাখঢাকও। এরই মধ্যে আজ রবিবার সকালে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাতঃরাশ বৈঠকে বসছেন। মূলত সেই বৈঠকেই হবে আনুষ্ঠানিক আলোচনা। ওই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন উভয় দেশের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরাও। কর্মকর্তাদের ধারণা ঢাকার প্রস্তুতির ঘাটতি সত্ত্বেও বেইজিংয়ের একান্ত আগ্রহে অনুষ্ঠিত ওই সফরে প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের কোনো বিশেষ বার্তা নিয়ে এসেছেন তার সরকারের প্রভাবশালী প্রতিনিধি ওয়াং ই। কিন্তু কী সেই বার্তা তা এখনো আঁচ করা যায়নি দাবি করে এক কর্মকর্তা বলেন, দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের পাশাপাশি চীনের দিক থেকে ভূ-রাজনীতি ও কৌশলগত সহযোগিতার আকর্ষণীয় প্রস্তাব থাকছে, এটা অনুমেয়। নিশ্চিতভাবে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় সেটি স্পষ্ট হবে। মার্কিন সরকার প্রস্তাবিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি এবং ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফোরামে বাংলাদেশের যোগদান না করার অনুরোধ রয়েছে চীনের। বেইজিং প্রকাশ্যে এ নিয়ে ঢাকাকে নিরুৎসাহিত করছে।

সফরকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি আলোচনার টেবিলে তুলতে পারেন এমন ধারণা দিয়ে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট আইপিএস এবং কোয়াডে বাংলাদেশ যোগদান করলে ঢাকার সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্কের অবনতি হবে- এমন হুমকি আগেই দিয়েছে বেইজিং। তখন ঢাকা বলেছিল কোনো সামরিক জোটে নয় বরং ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বা আইপিএসের অর্থনৈতিক ফ্রন্টে থাকবে বাংলাদেশ। গত মে মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতীক্ষিত সেই অর্থনৈতিক কর্মসূচি আইপিইএফ ঘোষণা করেন। আইপিইএফে ঢাকা যোগ দিচ্ছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ওই জোটে যাতে বাংলাদেশ যোগদান না করে বরং চীনের প্রেসিডেন্ট ঘোষিত বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ (গেøাবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ-জিএসআই) এবং বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগের (গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ-জিডিআই) সঙ্গে যেন বাংলাদেশ সম্পৃক্ত হয় সেই তদবির চলাচ্ছে বেইজিং। জিএসআইকে বিশ্বে চীনের ভাবমূর্তির পাশাপাশি প্রভাব বাড়ানোর উদ্যোগ এবং জিডিআইকে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজির পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচ্য। ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে জিডিআই ও জিএসআইয়ের মতো প্রসঙ্গগুলো আসতে পারে- এটা ধরে নিয়ে তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশ কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের মোকাবিলার মতো বিষয়গুলোতে জোর দিতে চায়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে জিডিআই, জিএসআইয়ের মতো বিষয়গুলো এলেও বিভিন্ন পরাশক্তির মাঝে যে বিষয়গুলোতে বৈরিতা চলছে, তাতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তেমন একটা আগ্রহ নেই বলে স্পষ্ট করেন ঢাকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এখন ঢাকা সফরের সময় ওয়াং ই কী বার্তা নিয়ে আসেন সেটা বাংলাদেশ শুনবে। এরপর নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App