×

জাতীয়

শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দেশ ও বিশ্বকে অবহিত করা দরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২২, ০৮:৪৮ এএম

শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দেশ ও বিশ্বকে অবহিত করা দরকার

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকাণ্ড কেবলমাত্র কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যদের বিচ্ছিন্ন কাজ ছিল না। এটা ছিল পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। এই ষড়যন্ত্রে সেনা কর্মকর্তারা যেমন জড়িত ছিল, তেমনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও জড়িত ছিল। এছাড়া এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে মার্কিন যোগসাজশ ছিল- তা এখন ক্রমশ প্রকাশমান। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরের কাগজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

রাশেদ খান মেনন বলেন, মার্কিন প্রশাসন সে সময়কার যে সব দলিল অবমুক্ত করেছে- তাতে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর পরই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক ফারুক-রশীদরা সেনাবাহিনীর জন্য অস্ত্র সংগ্রহের নামে মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি মনোভাব নেবে, সেটাও জানতে চেয়েছিল। এই উভয় ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষে তারা এই যোগাযোগ করেছিল বলে দাবি করেছিল।

সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, খুনি ফারুক তার এক বিবৃতিতে স্পষ্টভাবেই বলেছিল, সে সময়ের উপসেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে তারা তাদের এই ষড়যন্ত্রের কথা অবহিত করেছিল। জিয়াউর রহমান তাকে জড়াতে নিষেধ করে এবং নি¤œ পর্যায়ের অফিসারদের এই প্রচেষ্টা তাদের মতো করে এগিয়ে নিতে বলে। তিনি কখনই এই ষড়যন্ত্রের বিষয়টি সেনাবাহিনী বা সরকারকে অবহিত করেননি। অপরদিকে এই অভ্যুত্থান প্রক্রিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য খন্দকার মোশতাক সরাসরি জড়িত ছিল। সে তার দলে শাহ মোয়াজ্জেম, তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও কে এম ওবায়দুর রহমানকে জড়িয়ে নেয়। এছাড়া মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও পরোক্ষভাবে এই ষড়যন্ত্রকে সমর্থন করেছেন- যা তাদের বঙ্গবন্ধুর লাশ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সিঁড়িতে পড়ে থাকা অবস্থায় শপথ নেয়ার ঘটনায় প্রতিয়মান হয়। এই ষড়যন্ত্রমূলক অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের পথ থেকে বিভ্রান্ত করে পাকিস্তান আমলের শাসন ব্যবস্থা ও দিনগুলোতে ফিরে নেয়া- যা পরবর্তী সময়ে সংবিধানের সংশোধন, বিশেষ করে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাদ দেয়া ও সমাজতন্ত্রের সংজ্ঞা পুননির্ধারণ, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পুনর্বাসনের ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়। সে কারণে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড কেবল কোনো ব্যক্তি হত্যা বা সরকার পরিবর্তন নয়- আরো বিশেষ করে বলতে গেলে ‘বাকশাল’ ব্যবস্থার অবসানই ছিল না; এই হত্যাকাণ্ড ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ।

শ্বেতপত্র প্রকাশ সম্পর্কে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, অবশ্যই এই ঘটনা সম্পর্কে শ্বেতপত্র প্রকাশ কেবল নয়, সমস্ত ষড়যন্ত্রের উদ্ঘাটন করে সে বিষয়ে দেশের মানুষ ও বিশ্বকে অবহিত করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। আইনমন্ত্রী সংসদে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পেছনের ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটনে জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের কথা বলেছেন। সেটা বাস্তবায়ন করা জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App