ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মরদেহের ময়নাতদন্ত ও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার জন্য দেরি হওয়ায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (৩ আগস্ট) রাতে বিষয়টি জানান তিনি। তবে কি কারণে জানাজা আজকে অনুষ্ঠিত হয়নি সে বিষয়ে মুখ খোলেননি বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুর আলমের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে অসংখ্য নেতাকর্মীর শ্লোগান আর প্রতিবাদ জানায়।

[caption id="attachment_361038" align="aligncenter" width="700"] বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

সন্ধ্যা ছয়টায় নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনে নুর আলমের জানাজা হওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর পল্টনে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নুর আলমের মরদেহ হাসপাতাল থেকে না ছাড়ায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জানাজার ঘোষণা দিয়ে দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান ছেড়ে দেয়।

এ সময়ে নেতাকর্মীরা সড়কে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। ফলে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

[caption id="attachment_361043" align="aligncenter" width="700"] সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

এর আগে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিকেল তিনটায় নুরে আলমের মৃত্যু হয়। আহত হওয়ার পর তার ব্রেনে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মাল্টি ডাইমেনশনাল সমস্যা দেখা দেয়। জ্ঞানের মাত্রা কমে যায়। গুলিতে নুরে আলমের মুখমণ্ডল ফুলে যায়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে, গ্যাস, বিদ্যুতসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত রবিবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টায় ভোলা জেলা বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। শহরের কালীনাথ রায়ের বাজার এলাকায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সমাবেশ শেষে মিছিল করতে রাস্তায় নামেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে তাদের। একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও ১৬৫ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

আহতদের ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে নিহত হন দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের হারেছ মাতব্বরের ছেলে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আব্দুর রহিম। মাথায় গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমকে ভোলা হাসপাতাল থেকে প্রথমে বরিশাল সেবাচিমে পাঠানো হয়। পরে দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে দ্রুত ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হয়। গত সোমবার (১ আগস্ট) তার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় লাইভ সাপোর্টে নেয়া হয়।