×

সম্পাদকীয়

দ্বাদশ নির্বাচনী সংলাপ সম্পন্ন : ইভিএমে সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২২, ১২:০৭ এএম

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত ধারাবাহিক সংলাপ গত রবিবার শেষ হয়েছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন। সংলাপে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৮টি দল অংশ নেয়। আর সংলাপ বর্জন করেছে বিএনপিসহ ৯টি দল। তবে দুটি দল পরে ইসির সঙ্গে সংলাপ করার জন্য সময় চেয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসির কাছে প্রায় ৪০০ সুপারিশ জমা পড়েছে। নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সংলাপজুড়ে আলোচনার বিষয় ছিল ইভিএম। নির্বাচন কমিশন বলছেন, ইভিএম নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সমর্থন রয়েছে। অধিকাংশ দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না। ইভিএম নিয়ে কাজ করার পরও অনেককেই আস্থায় আনা যাচ্ছে না বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মন্তব্য করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে প্রযুক্তিকে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। প্রযুক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে জনসচেতনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে নির্বাচন কমিশনকে কাজ করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং শুধু সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট আইনের অধীনে তা পালন করতে হবে। সাংবিধানিক এই গুরুদায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নির্বাচন ব্যবস্থাপনার প্রতিটি অনুষঙ্গের কার্যকারিতা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করে চিহ্নিত বাধাগুলো অপসারণ কমিশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিগত ২০০৯ সাল থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বাদে আর সব দেশেই নির্বাচনে কাগজের ব্যালট ব্যবহারের পরিবর্তে ইভিএমের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ব্যালট ব্যবহার শুরু হয়েছে। দেশে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ভোটগ্রহণও করা হয়েছে। কোথাও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কোথাও বিতর্ক হয়েছে। তবে বিদ্যমান ইভিএমে এখন পর্যন্ত ভোট কারচুপির বড় ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতিসহ ভোটারদের ভোগান্তির অনেক অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ইভিএমে ভোট নেয়া কেন্দ্রগুলোতে ধীরগতি দেখা গেছে। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে- বয়স্ক, বিশেষ করে নারী ভোটারদের আঙুলের ছাপ না মেলা। এজন্য ভোটই দিতে পারেননি অনেকে। অবশ্য মেশিন ব্যবহারে ভোটারদের অনভ্যস্ততার কারণেও ভোট পড়ার গতি কমতে দেখা গেছে। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও পৌরসভার ভোটেও ব্যালটের চেয়ে ইভিএমে ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত কম ভোট পড়েছে। এমন অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমে ভোট হলে স্বাভাবিকভাবেই অনেক ভোটারের ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে রয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে একদিকে যেমন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মতৎরপতা, তেমনি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকে তাদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে গুরুত্ব দিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের দিকে। আগামী নির্বাচনের ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার করা হলে তা যে ত্রæটিপূর্ণ নয়, ভোটারদের মধ্যে সেই বিশ্বাস জন্মানোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App