×

জাতীয়

নীরবে কাজ করার মানুষ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২২, ০৮:৩২ পিএম

নীরবে কাজ করার মানুষ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ

তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২২ অনুষ্ঠানে তার মেয়ে ও সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি। ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা তাজউদ্দীন আহমদ আজীবন দেশের জন্য নীরবে কাজ করে গেছেন এবং তিনি এমন একজন ব্যক্তি যাঁকে খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর বলে মন্তব্য করেছেন তাজউদ্দীন তনয়া ও সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি।

রবিবার (৩১ জুলাই) বিকেল চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২২ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ সামাদের সভাপতিত্ব ও রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় রিমি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র তাজউদ্দীন আহমদ তাঁর মেধা, প্রজ্ঞা ও আদর্শিক চিন্তাধারা দিয়ে নিজেকে সমাজের মধ্যে একজন অনন্য মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন যাঁকে খুঁজে পাওয়াটা খুবই দুষ্কর। হয়তো এজন্যই তিনি বলে গেছেন তিনি কাজের মধ্যেই ডুবে থাকতে পছন্দ করতেন এবং পরবর্তী সময়ে যখন ঐতিহাসিকরা ইতিহাস রচনা করবেন তখন তাঁকে খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে। বর্তমানে দেশে তাজউদ্দীনের মতো অনেক মানুষ দরকার যারা নীরবে কাজ করবেন যা দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে বিশেষ রকমের সহায়ক হবে।

তাজউদ্দীন আহমেদের গোলাপ ফুলের চেতনাকে স্মরণ করে রিমি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে জয় বাংলা পত্রিকায় আমরা তাজউদ্দীনের গোলাপ ফুল সম্পর্কে জানতে পারি। ব্রিটিশ আমলে কাপাসিয়া থানার রাজবন্দীরা ছোট্ট তাজউদ্দীন আহমদের বই পড়া, কোনো কিছু সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখে অবাক হয়ে গেছিলেন। যেদিন রাজবন্দীরা থানা থেকে চলে যান সেদিন তাজউদ্দীন তার বিছানায় একটি গোলাপ ফুল দেখতে পান। এই গোলাপ ফুল সম্পর্কে তাজউদ্দীন বলেন, 'সেই গোলাপ শুকিয়ে গেলেও বর্তমানে আমার ভেতরে সেটা জ্বলজ্বল করে জ্বলে।' সেই গোলাপের অনুভবই তাকে সামনের দিকে গিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

রিমি আরো বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে যারা কাজ করেছেন তাদের থেকে আমরা গোলাপের নির্যাস নেব তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে শামিল থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে পারব।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, তাজউদ্দীন আহমেদ এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন যিনি তাঁর সাদা শার্টটি রাতে ধুয়ে দিতেন এবং পরবর্তী দিন সকালে সেটি পরেই রাজনৈতিক মঞ্চে যেতেন এবং নেতৃত্ব দিতেন। তাঁর এরকম সহজ সরল জীবনাচার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আমরা স্বল্প সময় নিয়ে বড় রকমের দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। তিনি এই মূল্যবোধটিকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সামাদ বলেন, আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে তাজউদ্দীন আহমদ কীভাবে কাজ করেছেন বা কী কী করেছেন সেটা জানানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যেসব কাজ করেছেন সেটা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে যাতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তারা এই কথাগুলো বহন করে নিয়ে যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড এ এস এম মাকসুদ কামাল। স্মারক বক্তব্য দেন কথা সাহিত্যিক সুহান রিজওয়ান, স্বাগত বক্তব্য দেন তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা শারমিন আহমেদ। এছাড়াও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাবির শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ।

এসময় তাজউদ্দীন আহমেদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্যোগে ঢাবি শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের বিএসএস সম্মান চূড়ান্ত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফলাফলধারী ত্রপা সরকারকে 'তাজউদ্দীন আহমদ পিস স্কলার' স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। এছাড়াও এক বছরের জন্য একই বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা জামান রাইসাকে শিক্ষাবৃত্তি ও তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে লেখা রচনা প্রতিযোগিতায় পাঁচজনকে সনদ ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App