×

সাহিত্য

শিল্পকলায় শুরু হলো ‘২৩তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী ২০২২’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২২, ০৮:৩৪ এএম

শিল্পকলায় শুরু হলো ‘২৩তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী ২০২২’

বুধবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় শুরু হয় ‘২৩তম জাতীয় নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী’। ছবি: ভোরের কাগজ

নবীন শিল্পীদের পদচারণায় মুখর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা। নতুন ভাবনা ও নতুন উপস্থাপনায় বর্ণিল চিত্রশালার চারটি গ্যালারি। স্থাপনাশিল্পে, ক্যানভাসে তরুণেরা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন সেখানে। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাদের ১১ জন পেয়েছেন পুরস্কার। প্রদর্শনী ঘুরে দেখা গেল কেউ ছবি তুলছেন রঙ-বেরঙের ক্যানভাসের পাশে, কেউবা ঘুরেফিরে দেখছেন শিল্পকর্ম। কেউ কেউ আবার তন্ময় হয়ে তাকিয়ে আছেন শিল্পীর চিত্রকর্মের দিকে।

তরুণ শিল্পীদের বহুমাত্রিক শিল্পকর্ম নিয়ে জাতীয় চিত্রশালায় গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে ‘২৩তম জাতীয় নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে মাসব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও শিল্প সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও চিত্রশিল্পী ড. ফরিদা জামান। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব মো. আছাদুজ্জামান, চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী মিনি করিম।

করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় সারা দেশের দর্শক অনলাইনে ভার্চ্যুয়াল গ্যালারির মাধ্যমে প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারবেন। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এম এম মান্নান বলেন, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে আমাদের চ্যালেঞ্জ ও অভিলাষ আছে। তবে এ পথের যাত্রা খুব দুরূহ। নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে নানা বাধা আসছে। এসব বাধা সংস্কৃতি বিকাশের মধ্য দিয়ে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তবেই আমরা নিজস্ব পথে বিকশিত হতে পারব। এক্ষেত্রে নবীনদের বিকাশের পথ আরো মসৃণ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার নানা বিষয়ে কাজ করছেন। এর মধ্যে সংস্কৃতিকে সর্বাধিক প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

কে এম খালিদ বলেন, মৌলবাদ সংস্কৃতির বড় শত্রু হয়ে দাড়িয়েছে। এ শত্রুকে মোকাবেলা করতে সংস্কৃতি চর্চাকে বিকেন্দ্রীকরণের মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে সংস্কৃতিকে প্রতিটি জেলা উপজেলায় ছড়িয়ে দিতে হবে এবং বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলন টিকিয়ে রাখা জরুরী। উদ্বোধনী পর্ব শেষে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেয়া হয়। এ আসরে শ্রেষ্ঠ নবীন শিল্পী চারুকলা পুরস্কার-২০২২ পেয়েছেন সাজিয়া সন্ধ্যা। এছাড়া চিত্রকলায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন মো. ফয়েজ আলম হাসান, ছাপচিত্রে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার রুমানা রহমান, ভাস্কর্যে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন সুস্মিতা মুখার্জ্জী মিষ্টি, প্রাচ্যকলায় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন সৌরভ ঘোষ, কারুশিল্পে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন রাজন নন্দী, মৃৎ শিল্পে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন হালিমা আক্তার, গ্রাফিক ডিজাইনে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন মাহাতাব রশীদ, আলোকচিত্রে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন শাহেদুল ইসলাম সাদিক, স্থাপনা শিল্পে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন সামিয়া আহ্মেদ, পারফরমেন্স আর্ট শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন সুজন মাহাবুব, নিউ মিডিয়া আর্ট শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন জুয়েল চাকমা।

প্রথম পুরস্কার বিজয়ীকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার বিজয়ীকে এক লাখ টাকা, একটি মেডেল, একটি ক্রেস্ট, সনদপত্র ও ক্যাটালগ প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রতিটি মাধ্যমের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা, একটি ক্রেস্ট, সনদপত্র ও ক্যাটালগ প্রদান করা হয়।

উদ্বোধন পর্ব শেষে ‘মানবতার জননী’ শিরোনামের দলীয়নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা। এরপর ‘সুন্দরের অতন্দ্র প্রহরী’ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ‘বিদ্রোহী’ কবিতা অবলম্বনে আরো দুটি নৃত্য পরিবেশন করে তারা।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে প্রথম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও বরেণ্য শিল্পী কামরুল হাসান। ওই প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন করেন শিল্পী চন্দ্র শেখর দে। ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন করেন শিল্পী শহিদ কবির।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App