বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে প্রথমবারের মতো মুসলিম দেশসমূহের ৮ দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী 'ডি-৮ সিসিআই বিজনেস ফোরাম অ্যান্ড এক্সপো-২০২২’ শুরু হয়েছে।

ডি-৮ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডি-৮সিসিআই) প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আজ মঙ্গলবার এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের ফোরামে বাংলাদেশসহ অন্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার ভ্যালু চেইনের ৬টি এবং ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশনের ১৩টি বৃহৎ ক্ষেত্রের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

এই আয়োজনটি মূলত ডি-৮ সদস্য দেশসমূহের মধ্যকার ভালু চেইন ইন্টিগ্রেশনে সক্ষম একটি কৌশলগত রোডম্যাপ গঠন এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক অগ্রগতি বিস্তারে বিশেষ জোর দেয়া।

রোডম্যাপে ৭ প্রস্তাবনার মূল দিকগুলো হলো: স্থির মূল্যের নিশ্চয়তা প্রদানপূর্বক সাপ্লাই চেইনে অস্থিরতা কমিয়ে আনা এবং নিরাপদ জীবিকা, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদে ভালু চেইন ইন্টিলেশন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দুর্বলতা মোকাবেলার জন্য ক্রস কারেন্সি সোয়াপ, বাটার এবং ব্লকচেইনের মধ্যে বিকল্প বাণিজ্য অর্থবাণিজ্য সুবিধা প্রদান প্রক্রিয়া।

নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার চিহ্নিত করতে প্রক্রিয়া স্ট্যান্ডারাইজেশন এবং সমন্ব বৃহত্তর পরিসরে আন্ত:ডি-৮ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অবদানের সুযোগ তৈরিতে ডি-৮ প্রাইভেট সেক্টরের মধ্যে বৃহত্তর সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করতে উদ্যোক্তাদের জন্য ডি-৮ ভিসা।

দীর্ঘমেয়াদী ডি-৮ ভালু চেইন ইন্টিগ্রেশনে সহায়তার লক্ষ্যে ডি-৮ কম্প্রিহেনসিভ ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (ডি-৮ সিইসিএ)-এর জন্য কন্টিনজেন্সি ম্যাপিং, গ্লোবাল স্টাগফ্রেশনে ভূমিকা রাখা ঝুঁকিগুলো কমিয়ে আনা।

[caption id="attachment_359845" align="aligncenter" width="700"] রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে মঙ্গলবার ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশনের লক্ষ্যে ডি-৮ সিসিআই বিজনেস ফোরাম অ্যান্ড এক্সপোতে দর্শনার্থীরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

অর্থনৈতিক খাতের সাইবার সিকিউরিটি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইওটিতে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং টেকসইতা, সার্কুলার ইকোনোমি, শি-ট্রেডস এমএসএমই, স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম, ইনোভেশন, গ্রিন টেকনোলজি, ক্লাইমেট চেঞ্জ এবং ব্লু ইকোনমিকে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশন বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা।

অনুষ্ঠানের প্রথমদিন সাধারণ পরিষদে সম্ভাব্য রোডম্যাপ ও এর কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা এবং দ্বিতীয় দিন ডি-৮ মিনিস্ট্রিয়াল পর্যায়ে। তা উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেওয়া হবে।

দুইদিন ব্যাপি অনুষ্ঠেয় এই আয়োজনে বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুররে চেম্বারস অব কমার্সের সভাপতিবৃন্দ, প্রতিনিধি দল, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডি-৮ মিনিস্ট্রিয়াল এর চেয়ারম্যান এ কে আব্দুল মোমেন। এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপে সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম এবং ডি-৮-এর সেক্রেটারি জেনারেল রাষ্ট্রদূত ইসিয়াকা আব্দুল তাদির ইমাম। এছাড়া ৮ সদস্য দেশের পক্ষ থেকে ৪০ জনেরও অধিক প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। আগত দর্শনার্থীদের জন্য এক্সপো জোন-এ 'বিল্ড ইন বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন'-এ বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের স্টল রয়েছে।